
কাইয়াগঞ্জ এলাকার করতোয়া নদীর ওপর চলছে সেতু নির্মাণ কাজ
গাবিন্দগঞ্জ উপজেলার সুবিধাবঞ্চিত একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের কঠিন যোগাযোগের ইতিহাসকে মুছে দিয়ে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার মাইলফলক হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে একটি সড়ক সেতু। দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের করতোয়া নদীর ওপর নির্মাণ হচ্ছে সেতু। তবে শুরুর পর কিছু দিন বন্ধ থাকলেও আবার নতুন উদ্যোমে শুরু হয়েছে এর নির্মাণ কাজ।
এর ফলে নতুন করে আশায় বুক বেঁধেছেন করতোয়ার দু’পারের অসংখ্য মানুষ। এলাকার লোকজন আশা করছেন, উপজেলার আন্তঃযোগাযোগ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলোর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ তৈরি করবে ৩৫২ মিটার দীর্ঘ কাইয়াগঞ্জ এলাকায় করতোয়া নদীর এই সড়ক সেতু। দীর্ঘলালিত স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়ে এই এক সেতুতেই বদলে যাবে ওই অঞ্চলের গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা।
স্থানীয়রা জানান, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলেও তালুক রহিমাপুর, বিশ্বনাথপুর, রামনাথপুর, দুর্গাপুর, গন্ধর্ববাড়ী, সাতানাবালুয়া, মারিয়া, চরপাড়া, খানসাপাড়া এলাকা ছিল অনেকটাই অবহেলিত। দুর্বল যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে এই এলাকাগুলোর মানুষ কোনো উন্নয়নের সুবিধা পাচ্ছিল না। কৃষিপণ্য পরিবহনে বিড়ম্বনা, লোকজনের যাতায়াতে দুর্ভোগ ও যানবাহন চলাচল সমস্যায় গতি পায়নি এখানকার অর্থনীতি।
এ সব এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে কাইয়াগঞ্জ এলাকায় করতোয়া নদীর নির্মাণ কাজ শুরু হয় বেশ কিছুদিন হলো। বর্তমানে কাইয়াগঞ্জ এলাকার করতোয়া নদীর ওপরে চলছে সেতু নির্মাণের ব্যাপক তোড়জোড়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) আর এই কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন করছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রংপুর বিভাগ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩৬ কোটি ৩১ লাখ ৮ হাজার ১৩৬ টাকার ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে এই কাইয়াগঞ্জ সেতু। ১৬০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতুর সঙ্গে দুই পাশে ১৯২ মিটার ভায়াডাক্টসহ মোট ৩৫২ মিটার সেতুটির বর্তমান কাজের অগ্রগতি ৫০ শতাংশ। গত ২০২৩ সালের ২৮ মে উপজেলার কাইয়াগঞ্জে করতোয়া নদীর ওপর এ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
সেতুটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে জামালপুরের সরদারপাড়ার মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতুটি চালু হলে উপজেলার দরবস্ত, সাপমারা, গুমানীগঞ্জ, ফুলবাড়ি ইউনিয়ন ও গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার সঙ্গে করতোয়া নদীর ওপর দিয়ে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হবে।
এ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ জাতীয় অর্থনীতিতেও সেতুটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করছেন এলাকার লোকজন। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুবুল হক জানান, নির্মাণাধীন কাইয়াগঞ্জ সেতুর কাজ কিছুদিন বন্ধ ছিল। বর্তমানে আবারও নির্মাণ কাজ চালু করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।