
ছবি: সংগৃহীত
পেশাগত এবং ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা বর্তমান সময়ের ব্যস্ত জীবনে চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। তবে কিছু দেশ সরকারের যথাযথ নীতিমালার মাধ্যমে নাগরিকদের জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ কর্মপরিবেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। ২০২৫ সালের এমনই এক জরিপে প্রকাশ পেয়েছে, বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশে সবচেয়ে ভালো ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালান্স বিদ্যমান।
রিমোট নামক একটি সংস্থার প্রতিবেদনে বিশ্বের ৬০টি অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশের মধ্যে বিভিন্ন সূচক—যেমন: গড় কর্মঘণ্টা, ন্যূনতম মজুরি, মাতৃত্বকালীন ছুটি, সামাজিক নিরাপত্তা ইত্যাদি বিবেচনায় এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
শীর্ষ ১০ দেশ:
১. নিউ জিল্যান্ড (স্কোর: ৮৬.৮৭)
টানা তৃতীয়বারের মতো নিউ জিল্যান্ড তালিকার শীর্ষে রয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একমাত্র দেশ হিসেবে শীর্ষ তিনে রয়েছে এটি। দেশটির উচ্চ ন্যূনতম মজুরি এবং সাম্প্রতিক বেতন বৃদ্ধির উদ্যোগ এই অবস্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
২. আয়ারল্যান্ড (স্কোর: ৮১.১৭)
ইউরোপে সবচেয়ে ভালো ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালান্সের দেশ আয়ারল্যান্ড। ২০২৩ সালের ‘Work Life Balance and Miscellaneous Provisions Act’ আইনটি এ ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন এনেছে। এতে দূর থেকে কাজ এবং পারিবারিক সহিংসতার কারণে ছুটি সংক্রান্ত নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
৩. বেলজিয়াম (স্কোর: ৭৫.৯১)
বেলজিয়াম সরকারি কর্মচারীদের জন্য ‘রাইট টু ডিসকানেক্ট’ আইনের মাধ্যমে কাজের সময়ের বাইরে যোগাযোগ এড়িয়ে চলার অধিকার নিশ্চিত করেছে। এর ফলে কর্মজীবীদের মানসিক স্বস্তি অনেকাংশে বেড়েছে।
৪. জার্মানি (স্কোর: ৭৪.৬৫)
চতুর্থ স্থানে থাকা জার্মানিতে শিশু অসুস্থ হলে প্রতি সন্তানের জন্য ১৫ দিন এবং একক অভিভাবকদের জন্য ৩০ দিন বেতনসহ ছুটি দেওয়া হয়।
৫. নরওয়ে (স্কোর: ৭৪.২০)
গত বছরের তুলনায় চার ধাপ এগিয়ে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে নরওয়ে। ১০০% বেতনের ভিত্তিতে ৪৯ সপ্তাহের পিতামাতার ছুটি দেশটির বড় ইতিবাচক দিক।
৬. ডেনমার্ক (স্কোর: ৭৩.৭৬)
ডেনমার্কে সপ্তাহে গড় কাজের সময় মাত্র ৩২.৫ ঘণ্টা, যা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম কম। কর্মীরা গ্রীষ্মে দীর্ঘ ছুটি উপভোগ করে থাকে, যা ব্যালান্স বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৭. কানাডা (স্কোর: ৭৩.৪৬)
আমেরিকা অঞ্চলের একমাত্র দেশ হিসেবে তালিকায় স্থান পেয়েছে কানাডা। সরকার ২০২১ সালে শিশুর দ্য কেয়ারের খরচ ১০ ডলারে নামিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে।
৮. অস্ট্রেলিয়া (স্কোর: ৭২.১০)
প্যাসিফিক অঞ্চলের দ্বিতীয় দেশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়া তালিকায় রয়েছে। বর্তমানে দেশটিতে বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ ন্যূনতম মজুরি কার্যকর রয়েছে—যার পরিমাণ ১৮.১২ মার্কিন ডলার।
৯. স্পেন (স্কোর: ৭১.৯৪)
স্পেন চলতি বছর কর্মঘণ্টা ৪০ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৩৭.৫ ঘণ্টা করেছে। মাতৃত্ব ও পিতৃত্ব উভয় ছুটি ১৬ সপ্তাহ করে দেওয়া হয়েছে, যা লিঙ্গ সমতা বজায় রাখতে সহায়ক।
১০. ফিনল্যান্ড (স্কোর: ৭০.৮৬)
তালিকার শেষ স্থানটি দখল করেছে ফিনল্যান্ড। দেশটি সুলভ ও সহজলভ্য চাইল্ড কেয়ারের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে, যা ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালান্সে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এই র্যাংকিং তৈরি করতে রিমোট সংস্থা গড় কর্মঘণ্টা, ন্যূনতম মজুরি, মাতৃত্বকালীন ছুটি, নিরাপত্তা, জনগণের সুখানুভূতি ইত্যাদি বিবেচনায় একটি সমন্বিত স্কোর নির্ধারণ করেছে, যার সর্বোচ্চ মান ধরা হয়েছে ১০০।
শিহাব