
ছবিঃ সংগৃহীত
সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে একটি অদ্ভুত প্রাণী—সান্ডা। মরুভূমি অঞ্চলে বসবাসকারী এই প্রাণীটি দেখতে অনেকটা টিকটিকির মতো হলেও এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি প্রজাতি। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করা প্রবাসী বাংলাদেশিদের কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে তারা মরুভূমিতে সান্ডা শিকার করছেন, দাবি করছেন, এটি তাদের কফিলের (মালিকের) পছন্দের খাবার।
মূলত ধনী আরবদের মধ্যে সান্ডা লিজার্ড খাওয়ার প্রতি একধরনের আকর্ষণ রয়েছে। এজন্য মরুভূমিতে কর্মরত অনেক বাংলাদেশি শিবকরা মালিকের চাহিদা পূরণে গিয়ে সান্ডা শিকার করেন।
তবে প্রশ্ন জাগতেই পারে—এই প্রাণীটি আসলে কী? এটি কি সত্যিই টিকটিকি?
উত্তর—হ্যাঁ, তবে এটি সাধারণ টিকটিকির চেয়ে অনেকটাই আলাদা। সান্ডা লিজার্ডের দেহ বেশ মোটা এবং এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হলো এর লেজ। এই লেজ দিয়ে তারা নিজেদের শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো, সান্ডা লিজার্ড মাংসাশী নয়। এটি সম্পূর্ণ নিরামিষভোজী প্রাণী, যার প্রধান খাদ্য তালিকায় থাকে শুকনো পাতা, ঘাস ইত্যাদি। মরুভূমির রুক্ষ পরিবেশেও এটি বেশ সফলভাবে বেঁচে থাকতে সক্ষম।
বাংলাদেশেও স্বল্পসংখ্যক সান্ডা পাওয়া যায়, তবে অনেকেই এদের গুইসাপের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন, যা সম্পূর্ণ ভুল। সান্ডা ও গুইসাপ সম্পূর্ণ আলাদা প্রজাতি।
দুঃখজনক হলেও সত্যি, একটি ব্যাপক কুসংস্কার এই প্রাণীটির জীবন বিপন্ন করে তুলেছে। অনেকের বিশ্বাস, সান্ডা লিজার্ডের তেল বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় কার্যকর—যার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। শুধুমাত্র এই অমূলক ধারণার কারণে বহু সান্ডা লিজার্ডকে হত্যা করা হচ্ছে।
সবশেষে বলা যায়, সান্ডা লিজার্ড প্রকৃতির এক বিস্ময়। এদের জীবনযাপন, পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা এবং স্বাভাবিক গঠন আমাদের অনেক কিছু শেখায়। কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে এই প্রাণীটির উপর নিষ্ঠুরতা না দেখিয়ে বরং এদের সংরক্ষণে সচেতন হওয়া জরুরি।
ইমরান