ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

রিট খারিজ ॥ রবিবার থেকেই যোগদান করবেন ১৬৫০ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা

প্রকাশিত: ১৮:২৪, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

রিট খারিজ ॥ রবিবার থেকেই যোগদান করবেন ১৬৫০ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর ॥ আইনি জটিলতায় দীর্ঘ ১৯ মাস স্থগিত থাকার পর ১৬৫০ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আগামী রবিবার থেকেই চাকরিতে যোগদান করবেন বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. আসাদুল্লাহ। তিনি শুক্রবার বিকেলে শেরপুরের কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভা শেষে এক প্রশ্নের জবাবে দৈনিক জনকণ্ঠকে ওই কথা জানান। তিনি বলেন, ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়ে দায়ের করা রিট আবেদন নিয়ে জারি করা রুল গত বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালত খারিজ করে দেওয়ায় তাদের যোগদানে আর কোন বাধা নেই। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইনি লড়াইয়েই প্রমাণিত হয়েছে নিয়োগ প্রক্রিয়া বৈধ ছিল। তার মতে, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক এখন ওই কর্মকর্তারা যোগদান করলে ‘এক ইঞ্চি জায়গাও পতিত রাখা যাবে না’- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে আরও এগিয়ে যাবে কৃষি বিভাগ। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের কৃষিবান্ধন নীতির কারণে দেশের কৃষি দিনদিন আধুনিক ও অগ্রগতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। শেরপুরও এর বাইরে নয়। বরং এ জেলার কৃষি দিনদিন আরও গতিশীলতা পাচ্ছে। কৃষিপ্রধান এ জেলার মাটির বৈচিত্র্যতা (পাহাড়ি, চরাঞ্চল ও সমতল) থাকায় ফসল উৎপাদনেও বেশ ভিন্নতা রয়েছে। এখানে দানাদার, তেলজাতীয়সহ সবজি চাষাবাদ হয়। এসব চাষাবাদে আমাদের জেলা ও উপজেলার কর্মকর্তারা কৃষকদের প্রশিক্ষণ, মাঠ প্রদর্শনীসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছেন। এ ধরনের কর্মকা-ের সুবাদে আমাদের কৃষি এখন বাণিজ্যিকরণের দিকে যাচ্ছে। আমাদের সক্ষমতা আরও বাড়ানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে মতবিনিময় সভার পাশাপাশি মাঠ প্রদর্শনী পরিদর্শনের উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি ব্যবহার করায় জেলায় চরাঞ্চলে সবজি চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন ফলজ বাগান গড়ে উঠছে। সদরের রৌহা এলাকায় হযরত আলী নামে এক কৃষকের গড়ে তোলা মাল্টার বাগান ও নার্সারির সফলতায় অনেকেই এখন আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তিনি আরও বলেন, দেশের ১৪টি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মধ্যে শেরপুরেরটি অন্যতম। এ ইনস্টিটিউটের সক্ষমতা বাড়াতে ডিপ্লোমা কোর্সের পাশাপাশি মানসম্মত জনবল তৈরি করতে এখানে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করা হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ময়মনসিংহে দেশের সেরা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থাকায় আপাতত এ ইনস্টিটিউটকে বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে রূপান্তরের সম্ভাবনা দেখছি না। মতবিনিময় সভা ও পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আব্দুল মাজেদ, উপপরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন, ট্রেনিং কো- অর্ডিনেটর মো. শাহজাহান সিরাজ, শেরপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ কাজী আমজাদ হোসেন, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মোহিত কুমার দেসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ১৬৫০ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার নিয়োগের জন্য ২০১৮ সালের ২৩ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষাসহ সকল প্রক্রিয়া শেষে ২০২০ সালের ১৭ জানুয়ারি ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এরপর এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোটা পদ্ধতি সঠিকভাবে অনুসরণ না করার অভিযোগ তুলে মো. রাশেদুল ইসলামসহ ৩৪ চাকরিপ্রার্থী হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে একই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ স্থগিত করে হাইকোর্ট একটি রুল জারি করেন। এই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার তা খারিজ করে দেন হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের দ্বৈত বেঞ্চ। ফলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেওয়া নিয়োগ প্রক্রিয়া বৈধ হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পাশাপাশি যোগদানে আইনি বাধা দূর হয় নিয়োগ পাওয়া ১৬৫০ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের। সেইসাথে অবসান ঘটে তাদের দীর্ঘ ১৯ মাসের প্রতীক্ষার।
×