ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া পাকিস্তান

সাউদাম্পটনে সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় ইংল্যান্ড

প্রকাশিত: ২৩:৪৯, ১৩ আগস্ট ২০২০

সাউদাম্পটনে সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় ইংল্যান্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সিরিজ শুরুর আগে মিসবাহ উল হক বলেছিলেন, ইংল্যান্ডকে নাড়িয়ে দিতে চায় পাকিস্তান। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে অনেকটা জিততে জিততে ৩ উইকেটে হেরে গেছে সফরকারীরা। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতা, টার্নিং টাইমে মিস ফিল্ডিংয়ের মতো বিষয়গুলো এখনও পোড়াচ্ছে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিদের। সাউদাম্পটনে আজ থেকে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় টেস্ট। হারলেই সিরিজ শেষ। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার মরণ কামড় দিতে চায় আজহার আলীর দল। প্রধান কোচ এবং প্রধান নির্বাচক মিসবাহ জানিয়েছেন, সিরিজে সমতায় ফেরার সামর্থ্য তাদের ভালমতোই রয়েছে। অন্যদিকে প্রথম টেস্টের সুখস্মৃতি সঙ্গী করে পাকিস্তানের বিপক্ষে টানা দুই জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় জো রুট বাহিনী। এই সিরিজের আগে যারা পিছিয়ে পড়েও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে ২-১ এ ব্যবধানে। স্বাগতিকদের জন্য দুঃসংবাদ অসুস্থ বাবাকে দেখতে নিউজিল্যান্ডে উড়ে যাওয়া তুখোড় অলরাউন্ডার বেন স্টোকসকে পাচ্ছে না তারা। ‘ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের স্মৃতি খুবই হতাশার। জয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকা ম্যাচ এভাবে হারলে সেটা ভুলে যাওয়া কঠিন। কিন্তু ভুলে যেতে হবে। কারণ ওখানেই সব শেষ নয়, এখনও দুটি টেস্ট আছে। অবশ্যই সিরিজে ফেরার সুযোগ আছে। ছেলেদের বলেছি, ওই হারটা ভুলে যাও কিন্তু ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নাও।’ বলেন মিসবাহ। পাকিস্তান ক্রিকেটের সর্বেসর্বা হয়ে ওঠা সাবেক এই অধিনায়ক আরও যোগ করেন, ‘পেশাদার ক্রিকেটে ভাল করতে হলে সব সময়ই আত্মবিশ্বাসী থাকতে হবে। কারণ এটা ক্রিকেট। প্রথম টেস্টে জয়-পরাজয়ে মাঝে খুব সামান্য ব্যবধান ছিল। অবশ্যই হতাশা আছে, তবে তা মাথায় রাখা যাবে না। অন্যথায় ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাবে। দলের বিশ্বাস আছে, আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব। ইংল্যান্ডকে চ্যালেঞ্জ দিতে আমরা এখনও প্রস্তুত। হাল ছাড়তে রাজি নই। ছেলেরা ভাল করতে ও একটি জয়ের জন্য মুখিয়ে আছে। ওরা সর্বোচ্চটা দিতে মরিয়া।’ উল্লেখ্য, সেই ১৯৯৬ সালের পর ইংল্যান্ডের মাটিতে আর কখনোই সিরিজ জিততে পারেনি পাকিস্তান। এবার আশা টিকিয়ে রাখতে হলে আজহারদের সামনে জয়ের বিকল্প নেই। ওপেনার শান মাসুদের ক্যারিয়ারসেরা ১৫৬ রানের অনবদ্য ইনিংসের ওপর ভর করে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে প্রথম ইনিংসে ৩২৬ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ার পর প্রতিপক্ষকে মাত্র ২১৯ রানে গুটিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ১৬৯ রানে অলআউট হয় সফরকরীরা। জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের সামনে লক্ষ্যমাত্রায় দাঁড়ায় ২৭৭। টেস্ট ক্রিকেটে চতুর্থ দিনে চতুর্থ ইনিংসে যেটি করা মোটেও সহজ নয়। দলীয় ১১৭ রানে ইংল্যান্ডের ৫ উইকেট তুলে নিয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল পাকিস্তান। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে ক্রিস ওকস (৮৪*) ও জস বাটলার (৭৫) তাদের সে স্বপ্ন ধুলোয় মিশিয়ে দেন। প্রতিপক্ষের ওপর চাপ ধরে রাখতে ব্যর্থ হন পাকিস্তানী বোলাররা। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ফিল্ডিং মিসের খেসারত দেয় আজহারের দল। ১৬ ও ২০ রানে আউট হওয়া ওপেনার আবিদ আলির স্থলে ইমাম-উল হককে দেখা যেতে পারে। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে অভিজ্ঞ ইয়াসির শাহর সঙ্গে ছিলেন আরেক লেগস্পিনার শাদাব খান। সাউদাম্পটনে রোজ বোলের উইকেট বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ এই টেস্টে এক স্পিনার কমিয়ে একজন পেসার অথবা পেস বোলিং অলরাউন্ডার ওয়াহাব রিয়াজকে খেলানো হয় কি না, সেটিও দেখার বিষয়। পেস আক্রমণে শাহিন শাহ আফ্রিদি- মোহাম্মদ আব্বাস ভাল করলেও তরুণ নাসিম শাহ একদমই সুবিধা করতে পারেননি। ব্যাটিংয়ে অধিনায়ক আজহারের সঙ্গে মূল দায়িত্বটা নিতে হবে তুখোড় বাবর আজম ও অভিজ্ঞ আসাদ শফিককে। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে প্রথম ইনিংসে ৬৯ রানের চমৎকার ইনিংস খেলা বাবর দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ রান করে আউট হন। অন্যদিকে অসুস্থ বাবার পাশে থাকতে সিরিজের বাকি দুই টেস্ট থেকে ছুটি নিয়েছেন বেন স্টোকস। স্বাগতিকদের জন্য যেটা বাড়তি চাপ তৈরি করতে পারে। তার ওপর অফফর্মের কারণে এই টেস্টে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে অভিজ্ঞ পেসার জেমস এ্যান্ডারসনকে। একদমই ছন্দে নেই জোফরা আর্চার। অবশ্য স্টুয়ার্ট ব্রড আর ক্রিস ওকস বেশ ভাল বল করছেন। তাদের সঙ্গে দ্রুতগতির মার্ক উডকে ফেরানো হবে, নাকি নতুন কারও অভিষেক হবে, সেটি দেখার অপেক্ষা। স্কোয়াডে আছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার স্যাম কুরান আর সিস্পনার ডম বেসও। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ইয়াসিরের লেগস্পিনের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের টপঅর্ডার ভাল করতে পারেননি। স্টোকস না থাকায় অধিনায়ক জো রুটকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। আছেন ররি বার্নস, ওলি পোপ, ডম সিবলি, জ্যাক ক্রাউলির মতো প্রতিভাবান ব্যাটস্যান।
×