ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনের খবর নেই, ভোট বেচাকেনা শুরু

প্রকাশিত: ২৩:৫০, ১১ জুন ২০২০

নির্বাচনের খবর নেই, ভোট বেচাকেনা শুরু

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবন চলেই কর্মচারীদের দিয়ে। সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ হচ্ছে কর্মচারীদের নেতা। শুধু কর্মচারী কেন? শুনেছি কর্মকর্তাদেরও তিনিই পরিচালিত করেন। ডেলিগেট ফরম বিতরণ এবং জমা প্রদান নিয়ে যেসব নাটক করেছে বাফুফে, তার মূল হোতা ওই সোহাগ, সঙ্গে আরও কিছু কর্মচারী। এদের বাফুফে ভবন থেকে বের করে দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন সাবেক তারকা ফুটবলার, জাতীয় দলের সাবেক কোচ গোলাম সারোয়ার টিপু। হাসানুজ্জামান বাবলু, সংগঠক আলীমুজ্জামান আলমসহ আরও যারা সঠিক নিয়ম মেনে, গঠনতন্ত্র মেনে ডেলিগেট ফরম জমা দিয়েছেন। অথচ তাদের বঞ্চিত করে অন্যদের ডেলিগেট ফরম দেয়ার যে অনিয়ম হয়েছে বা হচ্ছে তা অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানিয়েছেন টিপু। অনিয়ম, দুর্নীতি করে কেউ কখনও পার পায়নি। বাফুফের কর্মকর্তারা পাবেন না। বাফুফের চেয়ারে বসে জোর খাটিয়ে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে, নিজেদের খেয়াল-খুশি মতো তারা যা করছেন একদিন এর জবাবদিহি করতে হবে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। নিয়ম মেনেই সবকিছু করা উচিত। প্রত্যেক ফেডারেশন, সংস্থার নিয়ম-নীতি আছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এর বাইরে নয়। ফিফা-এএফসির সমস্ত নিয়ম-কানুন তো তাদের মানতে হয়ই, সেই সঙ্গে বাফুফের নিজস্ব নিয়মনীতি রয়েছে। বাফুফের গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ-৩২-এ স্পষ্ট করে বলা আছে ডেলিগেট ডিসপুট রেজ্যুলেশন বা ডেলিগেট যাচাই-বাছাই কমিটি গঠিত হবে নিরপেক্ষ লোকদের নিয়ে। কিন্তু বাফুফের আসন্ন ২০২০ নির্বাচন সামনে রেখে কি দেখা যাচ্ছে। ডেলিগেট যাচাই-বাছাই কমিটি করা হয়েছে নিজস্ব লোকদের নিয়ে। যারা আবার আগামী নির্বাচনে প্রার্থীও। আর নিজস্ব লোকদের দিয়ে এই কমিটি করায় ডেলিগেট ফরম বিতরণ থেকে জমা প্রদান কার্যক্রমে তৈরি হয়েছে জটিলতা। কমিটি শুধু নিজেদের পছন্দেও লোকদেরই ডেলিগেট ফরম দিচ্ছেন। বৈধ কাগজপত্র, গঠনতন্ত্র, নিয়ম-কানুন মেনে কমিটি গঠনের পরও অনেক ক্লাব-সংস্থাকে বঞ্চিত করে ভুয়া নামধারীদের ডেলিগেট ফরম তুলে দিয়েছে। বাফুফের এ ধরনের কাজ সঠিক নয়। টাকার বিমিনয়েই যদি ভোট কেনা-বেচা হয়, তাহলে নির্বাচনের দরকার কি- প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন এক সময়ের সাড়া জাগানো ফুটবলার ইমতিয়াজ সুলতান জনি। দুই মেয়াদে ঢাকা বিভাগীয় ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন ইতিয়াজ সুলতান জনি। বাফুফের আগে নির্বাচনগুলোতে ভোট প্রদান ছাড়াও নির্বাচনের অনেক খুঁটি-নাটি দিক কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে জনির। এবারের নির্বাচনে বাফুফে কর্তারা যা করছেন তাতে জনির মনে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ। তিনি মনে করেন সবকিছুই নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে করা উচিত। বৈধ থাকার পরও যাদের ডেলিগেট ফরম দেয়া হয়নি তাদের অন্যায় আচরণ করেছে বাফুফে জানান জনি। টাঙ্গাইল ফুটবল একাডেমি থেকে ডেলিগেট নির্বাচিত করা হয় ক্লাবটির স্পোর্টস বিষয়ক সেক্রেটারি সাবেক তারকা ফুটবলার জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত হাসানুজ্জামান খান বাবলুকে। অথচ বাবলুকে বাদ দিয়ে অন্য একজনকে ডেলিগেট করার প্রস্তাব দেয়া হয় টাঙ্গাইল একাডেমির সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান খান জামিলকে। এ ব্যাপারে জনি বলেন, ‘বাবলুকে যেহেতু সব নিয়ম মেনেই টাঙ্গাইল ফুটবল একাডেমি ডেলিগেট নির্বাচিত করেছেন, তাকে ফরম দিতে বাফুফের আপত্তি থাকবে কেন। শুনেছি আরও অনেকের সঙ্গে এ রকম আচরণ করা হয়েছে। কেউ যদি বৈধ থাকে তাকে ফরম না দেয়া অন্যায়। বাফুফের গঠনতন্ত্রে যা আছে সেটা মেনেই কাজ করা উচিত।’ যদিও এ বিষয়ে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ জনকণ্ঠকে জানান, তড়িঘড়ির প্রশ্নই ওঠে না। এখনও তো আমরা ফিফা ও এএফসির নির্দেশনা পাইনি। এই দুই সংস্থার সবুজ সঙ্কেত পেলে বার্ষিক সাধারণ সভা করা হবে। এভাবে ধাপে ধাপে নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হতে হবে নিয়ম অনুযায়ী। নিয়মের বাইরে আমরা কিছুই করছি না, বা করব না।
×