ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

এ্যাথলেট সামিউলের পাশে তামিম

প্রকাশিত: ১২:৩২, ১৭ এপ্রিল ২০২০

এ্যাথলেট সামিউলের পাশে তামিম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাসের প্রভাবে দুস্থ, অসহায়, গরিবরা পড়েছেন মহাবিপাকে। বিপদে পড়েছেন এ্যাথলেটরাও। বিজেএমসির চুক্তিবদ্ধ এ্যাথলেট সামিউল ইসলামই এমন একজন। তার পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক ও ওপেনার তামিম ইকবাল। তিন মাস সামিউলের পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছেন তামিম। তিন মাসের জন্য সংসার খরচ পাঠিয়েও দিয়েছেন। হঠাৎ করে চাকরি চলে যায় সামিউলের। এ্যাথলেটিকসের পাশাপাশি ফুটবলেও খেপ খেলে সংসার চালাতেন তিনি। কিন্তু করোনার প্রকোপে সেটাও এখন বন্ধ হয়ে যায়। এক কথায় অনেক কষ্টে চলছিল সামিউলের পরিবার। সেই খবর শুনে বাংলাদেশ ওপেনার সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। খুলনাতে বাবা-মাসহ ছয় সদস্য পরিবারে সামিউলের। সামিউল বলেন, ‘আমি আসলে ভাবতেই পারিনি তামিম ভাই আমাকে ফোন দেবেন। শুরুতে তাকে আমি চিনতে পারিনি। পরে চিনেছি। আমি তখন অবাক। তামিম ভাই আমাকে ফোন দিয়েছে!’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘ফোন দিয়ে পরিবার কিভাবে চলে, তা জানতে চাইলেন তামিম ভাই। তারপর সহায়তার কথা বললেন। মনে করেছিলাম, এক-দুই মাসের জন্য আর্থিক সহায়তা পাব। কিন্তু তামিম ভাই তিন মাসের জন্য সংসার খরচ পাঠিয়ে দিয়েছেন।’ গত বছর জাতীয় জুনিয়র এ্যাথলেটিকসে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে দ্রুততম মানব হয়েছিলেন সামিউর। ‘এমবাপে’ নামে খ্যাত অসহায় এ এ্যাথলেট। ফুটবল মৌসুমে খুলনায় খ্যাপ খেলেন। তার এমন ক্ষিপ্রতা যে নাম হয়ে যায় ‘এমবাপে।’ এই নামেই তাকে সবাই ডাকে। গত অক্টোবরে এ্যাথলেটিকস ট্র্যাকে জাতীয় জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে নেমে দ্রুততম মানব হয়ে চমকে দিয়েছিলেন সামিউল। কিন্তু করোনার প্রভাব তার সংসারে হানা দেয়। সামিউলই তাই পরিবারের আসল ভরসা। খ্যাপ খেলে বেড়ান। ম্যাচ প্রতি ২০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত নেন। তাতেই সংসার চলে। মাসে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা পান। তাতেই সংসার চালান। কিন্তু ফুটবল মৌসুম না থাকলে বেকার হয়ে বসে থাকতে হয় তাকে। সামিউল খ্যাপ খেলে যে টাকা পেয়েছেন, তা থেকে জমিয়ে বাবাকে ছোট্ট একটা তেলের দোকান করে দেন। কিন্তু তাও এখন বন্ধ! বিজেএমসির চাকরি একটা মহাভরসা ছিল। কিন্তু জুনিয়র এ্যাথলেটিকসে ১০০ মিটারে ১১.৪১ সেকেন্ড সময় নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া এ এ্যাথলেট বেকার হয়ে যান। বিজেএমসি যে আর দল রাখতে আগ্রহী ছিল না। তাই সামিউলও বেকার হয়ে যান। সপ্তাহে এক হাজার ৮৫০ টাকা পেতেন। তাও আর পাচ্ছেন না। মাঝপথে জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে দ্রুততম মানব হওয়ার পর সেনাবাহিনীর হয়ে খেলার প্রস্তাব পেয়েছিলেন। কিন্তু তখন বিজেএমসির চাকরি ছিল বলে প্রস্তাবে সাড়া দেননি। এখন অনাহারে চলছে যখন সংসার, তখনই তামিম পাশে দাঁড়ালেন সামিউলের।
×