ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শাপলা চত্বরে ফের জমায়েতের হুমকির পর টনক নড়ল পুলিশের

হেফাজতের বিরুদ্ধে ৬ বছর আগের মামলা নিয়ে নড়াচড়া শুরু

প্রকাশিত: ১১:১৩, ২৫ অক্টোবর ২০১৯

হেফাজতের বিরুদ্ধে ৬ বছর আগের মামলা নিয়ে নড়াচড়া শুরু

শংকর কুমার দে ॥ রাজধানীর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের তা-বের বিরুদ্ধে ছয় বছর আগে দায়ের করা মামলাগুলোর তদন্ত পুনরুজ্জীবনের বিষয়ে নড়াচড়া শুরু করেছে পুলিশ। সারাদেশে হেফাজতের ঘটনায় ৮৩টি মামলায় আসামি করা হয়েছে ৩ হাজার ৪১৬ জনের নামসহ ৮৪ হাজার ৯৭৬ জনকে। বিচার হওয়া তো দূরের কথা, ছয় বছর ধরে হিমাগারে পড়ে আছে ৬২ মামলার তদন্ত। ভোলার বোরহানউদ্দিনে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষের ঘটনায় দোষীদের শাস্তি না হলে দাবি আদায়ে আবারও শাপলা চত্বরে গণজমায়েত করার হুমকি দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আবারও হেফাজতের শাপলা চত্বরে গণজমায়েত করার হুমকি দেয়ার পর ছয় বছর আগের পুরনো মামলাগুলো নিয়ে নড়াচড়া শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এ খবর জানা গেছে। পুলিশ সদর দফতরের একজন কর্মকর্তা বলেন, ২০১৩ সালে রাজধানীর শাপলা চত্বরে তা-ব চালানোর ঘটনা এবং সন্ত্রাস দমনে পুলিশ ও র‌্যাবের অভিযানের পর হতাহতের গুজব ছড়ানোর ঘটনার কথা শুনলে আজও শিউরে উঠতে হয়। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজধানীর শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন চলাকালে কথিত নাস্তিক ব্লগারদের শাস্তিসহ ১৩ দফা দাবিতে হঠাৎ সক্রিয় হয়ে ওঠে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এসব দাবিতে ওই বছরের ৫ মে ঢাকার ছয়টি প্রবেশমুখে অবরোধ কর্মসূচী শেষে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে অবস্থান নেন হেফাজতের বিপুলসংখ্যক কর্মী-সমর্থক। ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরে গণজমায়েত করে হেফাজত রাজধানীজুড়ে ব্যাপক তা-ব চালানোর ছয় বছর পর আবারও শাপলা চত্বরে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা বলছেন, সরকারের সঙ্গে হেফাজতের সমঝোতার কারণে এতদিন হেফাজতের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর তদন্ত নিয়ে কারও গরজ দেখা না যাওয়ায় কার্যত হিমাগারে পড়েছিল। হেফাজতের দাবির মুখে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তরের দাওরায়ে হাদিসকে স্নাতকোত্তরের (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান বলে স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। দাবি অনুযায়ী পাঠ্যবইয়েও পরিবর্তন আনা হয়। হেফাজতের অন্যান্য দাবিও পূরণ করেছে সরকার। হেফাজতের তা-বের ঘটনায় যে মামলাগুলো দায়ের করা হয়, তাতে ৩ হাজার ৪১৬ জনের নামসহ ৮৪ হাজার ৯৭৬ জনকে আসামি করা হয়। তবে হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফীকে কোন মামলাতেই আসামি করা হয়নি। পরে হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতাসহ ৮৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। অবশ্য পরে তারা জামিনে মুক্তি পান।
×