ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপের আলোচিত তারকারা

প্রকাশিত: ১০:১৩, ৩০ মে ২০১৯

 বিশ্বকাপের আলোচিত তারকারা

জিএম মোস্তফা ॥ দীর্ঘ চার বছরের অপেক্ষার পালা শেষ। আজ পর্দা উঠছে ২০১৯ বিশ্বকাপের। এবারের বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ ইংল্যান্ড। ১০ দলের এই বিশ্বকাপে আলো ছড়াবেন কে? সেই উত্তর এখন সময়ের হাতে। তবে ইংল্যান্ডে তুরুপের তাস হয়ে যেতে পারেন সম্ভাব্য এমন ১০ ক্রিকেটার নিয়েই এই আয়োজন। সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ) ॥ বলা হয়ে থাকে বাংলাদেশের প্রাণ সাকিব আল হাসান। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ দলের অন্যতম সেরা ভরসার নাম। ব্যাটিং-বোলিং কিংবা ফিল্ডিং যে কোন পজিশনেই সাকিবের জুড়ি নেই। এ মাসেই বাংলাদেশ, আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিয়ে ত্রিদেশীয় এক টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের জয়ের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। ম্যাচ খেলেছেন মাত্র তিনটি। তার দুটোতেই অর্ধশত রান করেছেন। বল হাতেও ঝলক দেখিয়েছেন তিনি। চোটের কারণে ফাইনাল খেলতে না পারলেও টুর্নামেন্টের পারফর্মেন্সের ওপর ভর করে আবারও আইসিসির ওডিআই অলরাউন্ডারের র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠে এসেছেন তিনি। বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে অভিজ্ঞতার গুরুত্ব অপরিসীম। যে কারণেই বাংলাদেশের কোচ স্টিভ রোডসও মনে করেন, এই বিশ্বকাপে সাকিব হবেন তার ট্রাম্প কার্ড। বিরাট কোহলি (ভারত) ॥ বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন বিরাট কোহলি। ব্যাটিংয়ে দৃঢ় প্রত্যয় ও অসম্ভব আত্মবিশ্বাসী। অদম্য স্পৃহা ও সর্বোচ্চ ফিটনেস লেভেলের একজন খেলোয়াড়। তার প্রজন্মের সবচেয়ে কার্যকর অলরাউন্ড ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন কোহলি। তার বিরুদ্ধে বল করা যে কোন বোলারের জন্যই ভীতিকর একটি বিষয়। অসাধারণ ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য এক উচ্চতায়। ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ী টিম ইন্ডিয়ার সদস্য ছিলেন তিনি। খেলেছেন ২০১৫ বিশ্বকাপও। সর্বশেষ বিশ্ব আসরে ছিলেন ভারতের ব্যাটিং দলের মেরুদ-। এবারই প্রথম নেতা হিসেবে বিশ্বমঞ্চে দলকে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন এ ব্যাটিং মায়েস্ত্রো। আজ থেকে শুরু ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে ভারতের তুরুপের তাস হয়ে যেতে পারেন বিরাট কোহলি। তার ছোটবেলার কোচ রাজকুমার শর্মা জানিয়েছেন, গেল দুই বছর ধরে বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন দেখছেন কোহলি! কোহলি কী পারবেন? অপেক্ষা এখন সেটাই দেখার। জস বাটলার (ইংল্যান্ড) ॥ দুর্দান্ত সময় কাটাচ্ছেন জস বাটলার। একদিনের ক্রিকেটে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিহিত করা হয় তাকে। তার সাম্প্রতিক পারফর্মেন্সের রেকর্ড ঘাটলেই তা পরিষ্কার। একদিনের ক্রিকেটে তার স্ট্রাইক রেট ১১৯.৫৭। ইংল্যান্ডের অন্য যে কোন ইংলিশ ক্রিকেটারের চেয়ে বেশি। কেভিন পিটারসনের পর জস বাটলারের গায়েই এখন মারকুটে ব্যাটসম্যানের তকমা। এবার ঘরের মাঠের বিশ্বকাপেও জ্বলে উঠতে পারেন তিনি। স্টিভেন স্মিথ (অস্ট্রেলিয়া) ॥ নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলে ফিরেছেন বিশ্বকাপ দিয়েই। অবশ্য নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে সিরিজও খেলেছেন স্টিভেন স্মিথ। তবে সেটি আনঅফিসিয়াল। তাই বিশ্বকাপ দিয়ে বড় মঞ্চে ফেরা স্মিথের ওপর থাকবে দর্শকদের কড়া নজর। সম্প্রতি আইপিএলে ধারাবাহিক রান পেয়েছেন তিনি। কাগিসো রাবাদা (দক্ষিণ আফ্রিকা) ॥ দেখার মতো বোলিং এ্যাকশন কাগিসো রাবাদার। অনেকটা দৌড়ে এসে যেভাবে দ্রুতগতিতে বলটি ছোড়েন তা অতুলনীয়। ২০১৫ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচেই ঝড় তুলেছিলেন তরুণ এই পেসার। ১৫ রান দিয়ে সেবার একাই ছয় উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ওভারে হ্যাট্রিক পেয়েছিলেন। তারপর থেকে গত ক’বছরে তিনিই হয়ে উঠেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেস বোলিংয়ের স্তম্ভ। আইপিএলে চোট পেয়ে টুর্নামেন্ট শেষের আগেই দেশে ফিরে গিয়েছিলেন। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে জানানো হয়, চোট থেকে সেরে উঠেছেন তিনি। এর ফলে রাবাদার ইয়র্কার টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হয়ে দেখা দিতে পারে। লাসিথ মালিঙ্গা (শ্রীলঙ্কা ) ॥ আগামী আগস্ট মাসেই ছত্রিশে পা রাখবেন লাসিথ মালিঙ্গা। এই বয়সেও বল হাতে দুর্বার। শ্রীলঙ্কার তুরুপের তাস। ২০০৭ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চার বলে চার উইকেট তুলে নিয়ে অনন্য এক রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। এবারের আসরেও হ্যাটট্রিক করার ঘোষণা দেন তিনি। ২১৮ ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত মালিঙ্গা সংগ্রহ করেছেন ৩২২ উইকেট। ইংলিশ কন্ডিশনে সবসময়ই খেলতে পছন্দ করেন তিনি। ইমাম উল হক (পাকিস্তান) ॥ আগামীকাল টেন্ট ব্রিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে নিজেদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে পাকিস্তান। এই দলে এবার অন্যতম সেরা প্রতিভাবান খেলোয়াড় হিসেবে জায়গা পেয়েছেন ইমাম উল হক। দেশটির সাবেক অধিনায়ক ইনজামাম উল হকের ভাইপো এবার জ্বলে উঠতে পারেন ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে। রস টেইলর (নিউজিল্যান্ড) ॥ নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের ব্যাটিং ভরসার অন্যতম নাম রস টেইলর। নিজের চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলার প্রস্তুতি সম্পন্ন ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছেন তিনি। শনিবার নিজেদের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতকে ৬ উইকেটে হারায় নিউজিল্যান্ড। সেই ম্যাচে ৭১ রান করেন টেইলর। বিশ্বকাপের মূলমঞ্চেও নিজেকে মেলে ধরতে চান তিনি। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপ শিরোপা জয় করতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। দলটির সর্বোচ্চ সাফল্য গত আসরের রানার্সআপ হওয়া। এবার কি সেই আক্ষেপ ঘোচাতে পারবেন টেইলর? অপেক্ষা এখন সেটাই দেখার। শাই হোপ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ॥ এই উইন্ডিজ টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। সদ্য সমাপ্ত ত্রিদেশীয় সিরিজের পর প্রস্তুতি ম্যাচেও নিজের দাপট দেখিয়েছেন শাই হোপ। দারুণ ফর্ম নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের দিকেও দারুণ কিছুর প্রত্যাশায় তাকিয়ে থাকবে ক্রিকেট বিশ্ব। রশিদ খান (আফগানিস্তান) ॥ লেগস্পিন বোলিং কতটা বিধ্বংসী হতে পারে রশিদ খান তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাচ্ছেন। বয়স মাত্র ২০। কিন্তু এর মধ্যেই টি-২০ এবং ওডিআই- দুই ফরমেটের ক্রিকেটেই বিশ্ব তারকা হয়ে উঠেছেন তিনি। আইসিসির টি২০ বোলিং র‌্যাঙ্কিংয়ে এখন এক নম্বরে তিনি। ওডিআই বোলিং র‌্যাঙ্কিংয়ের তিন নম্বরে। টি২০ ক্রিকেটে যেখানে ব্যাটসম্যানরা দানব হয়ে ওঠেন, সেখানেও রশিদ খান গড়ে প্রতি ওভারে ৬ রানের বেশি দেন না। শুধু বোলিংই নয়, ব্যাটিংয়ে সাত বা আট নম্বরে নেমে ঝড়ো রান করার অসামান্য ক্ষমতাও রয়েছে এই আফগান তরুণের।
×