ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

রোমের রানী পিসকোভা

প্রকাশিত: ১৩:০৯, ২২ মে ২০১৯

রোমের রানী পিসকোভা

এবার ক্লে কোর্টেও বাজিমাত করলেন ক্যারোলিনা পিসকোভা। ক্লে কোর্টে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় শিরোপাটাই যে নিজের শোকেসে তুললেন চেক প্রজাতন্ত্রের এই তারকা খেলোয়াড়। রবিবার জোহানা কন্টাকে হারিয়ে রোম ওপেনের শিরোপা জিতলেন ক্যারোলিনা পিসকোভা। চেক প্রজাতন্ত্রের এই তারকা খেলোয়াড় এদিন ৬-৩ এবং ৬-৪ গেমে পরাজিত করেন জোহানা কন্টাকে। সেই সঙ্গে ইতিহাসেও জায়গা করে নেন তিনি। ১৯৭৮ সালের পর চেক প্রজাতন্ত্রের প্রথম প্রমীলা খেলোয়াড় হিসেবে রোমের এই শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়লেন পিসকোভা। তার আগে চেক প্রজাতন্ত্রের সর্বশেষ কোন প্রমীলা খেলোয়াড় হিসেবে রোম ওপেনের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন রেগিনা মার্সিকোভা। রোম ওপেনের শিরোপা জিতে দারুণ রোমাঞ্চিত পিসকোভা। এ প্রসঙ্গে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান তারকা বলেন, ‘আমার এবং টিমের জন্য এটা দারুণ এক সপ্তাহ। এই টুর্নামেন্টে আমার বেশ কিছু কঠিন ম্যাচও ছিল। ফাইনাল ম্যাচে কিছুটা নার্ভাস ছিলাম। কিন্তু সেগুলো পারফর্মেন্সে তেমন বাধার সৃষ্টি করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হতে পেরে আমি সত্যিই খুব খুশি। এই অনুভূতিটা অসাধারণ। এই টুর্নামেন্টের আগে আমি এতটা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম না। এমনকি ফাইনালে ওঠার কথাও কখনও ভাবিনি। প্রতিটি ম্যাচ জিতেছি তাতেই খুশি হয়েছি। যে কারণেই এই শিরোপা জেতাটা আমার কাছে অলৌকিক কিছুর মতোই।’ কন্টার বিপক্ষে ছয়বারের মুখোমুখি লড়াইয়ে পাঁচবারই জয় পেয়েছেন পিসকোভা। কিন্তু ২০১৬ সালের পর আর কখনই একে অপরের মুখোমুখি হননি তারা। দীর্ঘদিন পর এবার রোম ওপেনের ফাইনালেই কোর্টে নামেন। সেন্ট্রাল কোর্টে জোহানা কন্টাকে হারাতে এদিন পিসকোভার সময় লাগে ১ ঘণ্টা ২৫ মিনিট। সাম্প্রতিক সময়ে ক্লে কোর্টে পিসকোভার পারফর্মেন্স বেশ প্রশংসনীয়। তারপরও নামের পাশে নেই কোন শিরোপা। বিশেষ করে ক্লে-কোর্টে তার সাফল্য খুবই কম। ২০১৭ সালে রোঁলা গ্যারোঁর সেমিফাইনালের টিকেট কেটেছিলেন তিনি। পরের বছর স্টুটগার্টে অবশ্য বাজিমাত করেছিলেন এই চেক তারকা। দুর্দান্ত খেলেই সেবার এই টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে মাদ্রিদ ওপেনের সেমিফাইনালের টিকেট কেটেছিলেন বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক এই নাম্বার ওয়ান। এবার রোম ওপেনের শিরোপা উঁচিয়ে ধরলেন তিনি। এই পথে টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে বেলারুশ সুন্দরী ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কাকেও হারান পিসকোভা। সেমিফাইনালে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মারিয়া সাক্কারিকে বিদায় করেন। ফাইনালে সরাসরি সেটে জোহানা কন্টাকে হতাশ করে ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ক্লে-কোর্টের শিরোপা হাতে তুললেন পিসকোভা। সেইসঙ্গে র‌্যাঙ্কিংয়েও অগ্রগতি হয়েছে তার। দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন তিনি। শীর্ষে যথারীতি জাপানের নাওমি ওসাকা। তবে পিসকোভার কাছে হারলেও কন্টা ক্লে-কোর্টে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স উপহার দিচ্ছেন। ২৮ বছরের এই ব্রিটিশ প্রতিনিধি রোম ওপেনের ফাইনালে ওঠার পথে হারিয়েছেন দু’জন বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দশে থাকা খেলোয়াড়কে। যে কারণে চেক তারকার কাছে হারলেও নিজের অগ্রগতিতে দারুণ সন্তুষ্ট কন্টা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ বছরে টেনিস কোর্টে যেভাবে এগোচ্ছি এবং প্রতি ম্যাচে যেভাবে উন্নতি করছি তাতে আমি খুব খুশি। মিয়ামির পর এটা আমার দ্বিতীয়সেরা ফাইনাল। এটা আমার জন্য অনেক বড় মুহূর্ত। এমন উন্নতিতে আমি সত্যিই বেশ আনন্দিত।’ রোম ওপেনের ফাইনালে ওঠায় ফ্রেঞ্চ ওপেনে বাছাই খেলোয়াড় হিসেবে কোর্টে নামবেন জোহানা কন্টা। ব্রিটিশ তারকার জন্য এটাও অনেক খুশির খবর। এদিকে, পুরুষ এককে রোমে দাপট অব্যাহত রেখেছেন রাফায়েল নাদাল। ক্যারিয়ারের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী নোভাক জোকোভিচকে পরাজিত করে নবমবারের মতো ইতালিয়ান ওপেন শিরোপা জয় করেছেন তিনি। ফাইনালে বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড় জোকোভিচকে অনেকটা সহজেই (৬-০, ৪-৬, ৬-১) পরাজিত করে রেকর্ড ৩৪তম মাস্টার্স শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব দেখালেন রাফা। একই সঙ্গে চলতি মাসের শেষে শুরু হতে যাওয়া বছরের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডস্ল্যাম রোলা গাঁরোতে আরও একবার নিজেকে ফেবারিট হিসেবেই এগিয়ে রাখলেন এই স্প্যানিয়ার্ড। গত সপ্তাহে মাদ্রিদ ওপেনের বিজয়ী জোকোভিচ দ্বিতীয় র‌্যাঙ্কধারী নাদালের সঙ্গে এই নিয়ে ৫৪তম লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছিলেন। সব মিলিয়ে নাদাল ক্যারিয়ারে ৮১তম শিরোপা জয় করলেন। তবে এ বছর এটাই তার প্রথম শিরোপা। যে কারণে ফাইনাল শেষে নাদাল বলেন, ‘অবশেষে একটি শিরোপা ঘরে এলো। গ্র্যান্ডস্লামের আগে শেষ টুর্নামেন্টের শিরোপা জেতাটা অবশ্যই বিশেষ কিছু।’ এ বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালেও একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিলেন জোকোভিচ-নাদাল। কিন্তু শিরোপার লড়াইয়ে নাদালকে পরাজিত করে উইম্বলডন ও ইউএস ওপেনের পর টানা তৃতীয় গ্র্যান্ডস্লামের শিরোপা জিতেছিলেন জোকোভিচ। মাস্টার্স শিরোপা জয়ে অবশ্য জোকোভিচকে পিছনে ফেলেছেন নাদাল। রোমের ফাইনালে আগে উভয়ই ৩৩টি করে শিরোপা জিতেছিলেন। হারের পর জোকোভিচ বলেছেন, ‘প্রথম সেট যেভাবে শুরু হয়েছিল তাতে তৃতীয় সেট পর্যন্ত ম্যাচটি নিয়ে যেতে পেরে আমি সত্যিই আনন্দিত। প্রথম সেটে আমি কিছুই খেলতে পারিনি। তবে দ্বিতীয় সেট অবশ্যই ভাল খেলেছি। শেষ সেটে প্রথম দুই ম্যাচে আমার সুযোগ ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত আর পেরে উঠিনি।’ মন্টে কার্লো, বার্সিলোনা ও মাদ্রিদের সেমিফাইনালে পরাজয়ের পর নাদাল তার সেরাটা দিয়েই রোমে জয়লাভ করলেন। আর তাই ফ্রেঞ্চ ওপেনে জোকোভিচও কোন দ্বিধা না করেই নাদালকেই শিরোপা জয়ে এগিয়ে রাখলেন। চারবারের রোম জয়ী জোকোভিচ বলেন, ‘পুরো সপ্তাহ জুড়েই নাদাল দুর্দান্ত খেলেছে। তবে ফাইনাল ম্যাচে সে একটু বেশিই শক্তিশালী ছিল। ফ্রেঞ্চ ওপেনের আগে সুস্পষ্ট ফেবারিট হিসেবে সে নিজেকে প্রমাণ করেছে।’
×