ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আবারও কারাগারে নওয়াজ

প্রকাশিত: ০৯:৫৭, ৯ মে ২০১৯

 আবারও  কারাগারে  নওয়াজ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আবারও কারাবরণ করতে হলো পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত এক মামলায় জামিনের সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার লাহোরে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে তার মেয়ে মরিয়ম ও দলের বহু নেতাকর্মী ছিলেন। খবর ডন ও ইয়াহু নিউজের। লন্ডনে কেনা বিলাসবহুল চারটি ফ্ল্যাটের মূল্য পরিশোধে দেয়া অর্থের উৎস দেখাতে ব্যর্থ হওয়ার দায়ে ৬ জুলাই নওয়াজ শরিফকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয় পাকিস্তানের আদালত। গত সেপ্টেম্বরে নিম্ন আদালতের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের দুই সদস্যের বেঞ্চ। মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত ৫ লাখ রুপীতে নওয়াজ ও তার পরিবারের সংশ্লিষ্ট সদস্যদের জামিন মঞ্জুর করে আদালত। দুর্নীতির মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত শরিফ চিকিৎসার প্রয়োজনে আট সপ্তাহের জন্য জামিন চেয়ে পাক সুপ্রীমকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। গত ২৬ মার্চ শুনানির পরে প্রধান বিচারপতি আসিফ সঈদ খোসার নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ ৫০ হাজার পাকিস্তানি রুপীর বন্ডের বিনিময়ে ছয় সপ্তাহের জামিন দেয়। গত ২৭ এপ্রিল ‘গুরুতর শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা’র কারণ দেখিয়ে শরিফ স্থায়ী জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। এর পরে ৩০ এপ্রিল তিনি পাক সুপ্রীমকোর্টের কাছে বর্তমান জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আর্জি জানান। কিন্তু ৩ মে শরিফের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। আত্মসমর্পণের সময় তার সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন তার দল পাকিস্তান মুসলিম লীগের বহু নেতাকর্মী। তাদের হাতে ছিল ব্যানার, পোস্ট ও দলের পতাকা। তাদের উদ্দেশ করে নওয়াজ শরিফ বলেন, ‘এই ভালবাসার জন্য আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। নিশ্চয়ই অন্ধাকার কেটে যাবে।’ মিছিলের নেতৃত্ব দেন তার মেয়ে মরিয়ম। সরকারের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে তার বাড়ি থেকে কোট লাখপাত কারাগার পর্যন্ত পুরো পথেই ছিলেন তার সমর্থকরা। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৩ এপ্রিল দুনিয়ার প্রভাবশালী রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং রাঘববোয়ালদের আর্থিক কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস করে সাড়া ফেলে দেয় আলোচিত ‘পানামা পেপারস’। ফাঁস হওয়া ওই গোপন নথিতে অর্থ পাচারে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছেলের নাম উঠে আসায় নিজ দেশে চাপের মুখে পড়েন তিনি। বিরোধী দলগুলো থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হয়। নওয়াজ শরিফ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশে অবৈধ বিনিয়োগের অভিযোগ তদন্তে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে দেশটির সুপ্রীমকোর্ট। পানামা পেপারস প্রকাশের পর বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই), জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত দেয় আদালত। ২০১৭ সালের ২৮ জুলাই পানামা পেপারস কেলেঙ্কারি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে সুপ্রীমকোর্টের রায়ে প্রধানমন্ত্রী পদে অযোগ্য ঘোষিত হওয়ার পর পদত্যাগ করেন নওয়াজ শরিফ। আর ওই বছরের সেপ্টেম্বরে নওয়াজ শরিফ ও তার পরিবারের সদস্যদের সমস্ত সম্পত্তি ও ব্যাংক এ্যাকাউন্ট জব্দ করার সুপারিশ করা হয়। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে নওয়াজ শরিফের পরিবারের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করে ন্যাশনাল এ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো। এর মধ্যে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে এ্যাভেনফিল্ড দুর্নীতি মামলায় রায় প্রদান করলেও অন্য দুই মামলার শুনানি থেকে নিজেকে বিরত রাখেন বিচারপতি মোহাম্মদ বশির। পরে এ দুই মামলা বিচারপতি আরশাদ মালিকের আদালতে পাঠানো হয়।
×