ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৩১ বছরেও বিচার না হওয়ায় হতাশা

চট্টগ্রাম গণহত্যা দিবসে ২৪ শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ২৫ জানুয়ারি ২০১৯

চট্টগ্রাম গণহত্যা দিবসে ২৪ শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম গণহত্যা দিবসের ৩১ বছর পূর্ণ হলো বৃহস্পতিবার। ১৯৮৮ সালের এ দিনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন আটদলীয় জোটনেত্রী শেখ হাসিনার লালদীঘি মাঠের জনসভায় নির্বিচারে চালান গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৪ জন। এখনও পর্যন্ত আলোচিত এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বরাবরের মতো এবারও দিনটি পালন করেছে শহীদদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধায়। তবে বিচার শেষ না হওয়ায় ক্ষোভও রয়েছে নেতাকর্মী এবং নিহতদের স্বজনদের মাঝে। বৃহস্পতিবার সকালে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে আদালত ভবন এলাকায় শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সফর আলী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুল, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, চসিক প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীর নেতৃত্বে আইনজীবীরাও শ্রদ্ধার সঙ্গে শহীদদের স্মরণ করেন। সকলের মুখেই ছিল দীর্ঘ ৩১ বছরেও মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় হতাশার অভিব্যক্তি। স্বৈরাচারী এরশাদের আমলে সে দিন লালদীঘি মাঠে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন লালদীঘি মাঠের জনসভায় যোগ দিতে আসা ২৪ কর্মী সমর্থক। এ ঘটনায় ১৯৯২ সালের ৫ মার্চ চট্টগ্রামের মুখ্যমহানগর হাকিম আদালতে মামলা দায়ের করেন আইনজীবী শহীদুল হুদা। এতে আসামি করা হয় তৎকালীন পুলিশ কমিশনার রকিবুল হুদা ও কোতোয়ালি জোনের পুলিশ পরিদর্শক গোবিন্দ চন্দ্র ম-লসহ ৪৬ জনকে। এর মধ্যে মারা গেছেন মামলার বাদী শহীদুল হুদা, প্রধান আসামি তৎকালীন সিএমপি কমিশনার রকিবুল হুদা, অন্যতম আসামি পুলিশ কনস্টেবল বশির উদ্দিন এবং সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি আবদুল কাদের। বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকায় মামলাটি ধামাচাপা পড়ে থাকে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তা পুনরুজ্জীবিত হলেও দফায় দফায় থমকে যায় বিচার কাজ। আলোচিত এ মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ১৬৮ জনকে। তন্মধ্যে প্রবীণ সাংবাদিক অঞ্জন কুমার সেন, নিহত অজিত সরকারের স্ত্রী শেফালি সরকার, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেনসহ ৪৬ জন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী হিসেবে সাবেক মন্ত্রী আমীর হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও মতিয়া চৌধুরীকে সাক্ষ্য দিতে আসতে আদালত সমন জারি করেছে। মামলাটির অগ্রগতি বলতে এটুকুই। একত্রিশ বছরেও বিচার পায়নি জনসভায় গুলিতে নিহতদের স্বজনরা। এর জন্য তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভ ও চাপাকান্না। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল বলেন, শেখ হাসিনার জনসভায় পুলিশী হামলায় এত বড় হত্যাকা-ের বিচার একত্রিশ বছরেও নিষ্পত্তি না হওয়া খুবই লজ্জার ও দুঃখজনক। দ্রুত মামলাটির বিচার কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এই আইনজীবী নেতা।
×