ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীতে আওয়ামী লীগের বিশাল শোডাউন

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮

রাজধানীতে আওয়ামী লীগের বিশাল শোডাউন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিনে রাজধানীর সব এলাকাতে বড় শোডাউন করেছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। এ দিন যথারীতি চোখে পড়েনি বিএনপির কোন ধরনের প্রচার। তবে ভোটাররা বলছেন এ দিনও এসএমএস করে ভোট চেয়েছেন বিএনপি গ্রার্থীরা। বিএনপি রাস্তায় না থাকলেও সব ছোট ছোট দল বৃহস্পতিবার শেষ দিনে ভোটের শেষ মুহূর্তের প্রচার চালিয়েছেন। প্রচারের শেষ দিনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ হাজার হাজার নেতাকর্মীর লাল-সবুজের বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সমাবেশ করেছে। সমাবেশে যুব নেতারা বলছেন, জেগেছে যুব সমাজ, বেঁধেছে, জোট, এবার দেবে নৌকায় ভোট। জয় বাংলা, বাংলার জয়, জিতবেই নৌকা। কালো টাকা ছিটিয়ে লাভ হবে না, দেশের জনগণ উন্নয়নের জন্য নৌকায় ভোট দেবে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় এই র‌্যালিটি শুরু করার কথা ছিল। সকাল ৯টা থেকেই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ৭৫টি ওয়ার্ড ও ২৪টি থানার নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমবেত হন ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। নেতাকর্মীদের হাতে ছিল সংগঠনের পতাকা, গায়ে সবুজ গেঞ্জি এবং মাথায় সবুজ ক্যাপ। বেলার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘নৌকা, নৌকা, শেখ হাসিনা, নৌকা, শেখ হাসিনা’ মিছিলে মিছিলে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। মিছিল শুরুর আগে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। তিনি বলেন, আজকে দেশের যুব সমাজ জেগে উঠেছে। তারা বেঁধেছে জোট, এবার দেবে নৌকায় ভোট। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার কালো টাকা ছিটিয়ে লাভ হবে না, দেশের জনগণ উন্নয়নের জন্য নৌকায় ভোট দেবে। তিনি বলেন, দেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এক হয়ে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে যুব সমাজ এক হয়ে এই প্রতিবাদী ও নৌকার পক্ষে নির্বাচনী প্রচার র‌্যালিতে যুবসমাজের ঢলই প্রমাণ করে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। আর সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রতীক নৌকা। আগামী ৩০ ডিসেম্বর আমরা যুবসমাজ ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আনবে। পরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ থেকে নৌকার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে সুসজ্জিত র‌্যালি ও আনন্দ মিছিলটি শুরু হয়ে পল্টন, প্রেসক্লাব, মৎস্য ভবন এলাকা প্রদক্ষিণ করে শান্তিনগরে এসে শেষ হয়। এর আগে কার্যালয়টির সামনে উপস্থিত ব্যান্ডদলের সদস্যরা দেশাত্ববোধক সঙ্গীত পরিবেশনে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। র‌্যালির পূর্বে সকাল ৯টা থেকে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে থাকা বড় পর্দায় নির্বাচনী প্রচারমূলক ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। যেখানে আওয়ামী লীগের সফলতা, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতার অপব্যবহারসহ ব্যঙ্গাত্মক চিত্র এবং দেশের বরেণ্য তারকা শিল্পীদের নৌকার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারমূলক বাণীর প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। এছাড়া ব্যান্ডদলের বাজানো দেশাত্ববোধক গানের সুরে র‌্যালিটি পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও নেতাকর্মীদের নৌকার পক্ষের জোরালো স্লোগান ও র‌্যালিতে থাকা গাড়িতে সাউন্ডবক্সে বাজানো গানে র‌্যালিটি এগিয়ে চলে। র‌্যালিতে হাঁটা নেতাকর্মী ছাড়াও সুসজ্জিত ট্রাক এবং মোটরসাইকেলের র‌্যালিও লক্ষ্য করা গেছে। ঢাকা-১২ আসনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে বৃস্পতিবার লাখো মানুষের বিশাল এক নির্বাচনী মিছিল হয়েছে। নির্বাচনী মিছিরের দৈর্ঘ্য ছিল কমপক্ষে দুই কিলোমিটার। মিছিলটি জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান ছাড়াও নৌকা, নৌকা, হাসিনা হাসিনা স্লোগানে প্রকম্পিত হয়। অনেকেই বলছেন আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে বৃহস্পতিবার যে মিছিল হয়েছে তার মতো বড় মিছিল এবার খুব একটা দেখা যায়নি। ঢাকার মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সাদেক খানের পক্ষে এলাকায় অন্তত ৫০০ সুসজ্জিত ট্রাক নিয়ে মিছিল করেছে সমর্থকরা। এসব মিলেও যথারিতি নৌকার পক্ষে প্রচার চালিয়েছে। সবগুলো ট্রাকে একই সঙ্গে নির্বাচনী গান বাজছে। সুরের মূর্ছনায় মিছিলটি মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করেছে। নির্বাচনী প্রচারের শেষদিনে বড় ধরনের শোডাউন করেছেন ঢাকা-৪ আসনের মহাজোটের প্রার্থী সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় এবং সাড়ে ৩টার সময় ধোলাইপাড় মোড় থেকে দুটি বিশাল গণমিছিলে নেতৃত্ব দেন সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সানজিদা খানম, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও ড. আওলাদ। সকালের গণমিছিলটি জুরাইন হয়ে পোস্তগোলা গিয়ে শেষ হয়। সেখানে এক সমাবেশে শাহে আলম মুরাদ বলেন, বাবলা সাহেবকে জয়ী করতে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে এ এলাকায় পাঠিয়েছে। বাবলা এমপি হলে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হবেন। সমাবেশ শেষে বাবলা ও মুরাদ এলাকায় গণসংযোগ করেন। বিকেলে ট্রাক, ঘোড়ার গাড়ি ও মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে বাবলার নেতৃত্বে প্রায় ২০ হাজার লোকের গণমিছিলটি জুরাইন, পোস্তগোলা, লালমসজিদ হয়ে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে ঢাকা ম্যাচ এলাকায় গিয়ে এক বিশাল জনসমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। ঢাকা-৬ আসনের মহাজোটের প্রার্থী কাজী ফিরোজ রশিদ নির্বাচনী প্রচারের শেষদিনে তার নির্বাচনী এলাকায় এক বিশাল গণমিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন। গণমিছিলে মেয়র সাঈদ খোকন, কাজী ফিরোজ ও নগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ খোলা ট্রাকে উঠে হাত নেড়ে এলাকাবাসীকে শুভেচ্ছা জানান। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় সূত্রাপুর বানিয়ানগর থেকে শুরু হয়ে গণমিছিলটি ধোলাইখাল, নারিন্দা, দয়াগঞ্জ হয়ে জয়কালী মন্দিরে এসে এক সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। গণমিছিলে প্রায় দুই শতাধিক ট্রাক, পাঁচ শতাধিক মোটরসাইকেলসহ সূত্রাপুর, গে-ারিয়া ও ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলালীগ, জাতীয় পার্টি ও যুবসংতির নেতাকর্মী অংশ নেন। বিশাল এ গণমিছিলে মেয়র খোকন ছাড়াও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা আবু আহমেদ মান্নাফী, হেদায়াতুল ইসলাম স্বপন, হাজী সাহিদ, আশিকুর রহমান লাভলু প্রমুখ অংশ নেন।
×