ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

মোহামেডানের বিদায়, শেষ আটে রহমতগঞ্জ

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ১০ ডিসেম্বর ২০১৮

 মোহামেডানের বিদায়, শেষ আটে রহমতগঞ্জ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ব্যর্থতার বেড়াজাল থেকে কিছুতেই বের হতে পারছে না দর্শকনন্দিত ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ফেডারেশন কাপ ফুটবলের মতো স্বাধীনতা কাপ ফুটবলেরও গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে সাদা-কালো জার্সিধারীরা। রবিবার রাতে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা কাপের ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীর সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে মোহামেডান। ফলে তিন ম্যাচের প্রতিটিতেই জয়হীন অবস্থায় গ্রুপের তলানিতে থেকে বিদায় নিতে হয়েছে সাদা-কালোদের। মোহামেডাদের ব্যর্থতার কারণে আসরের শেষ দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। কেননা এই ম্যাচটির আগে বিকেলে নবাগত নোফেল স্পোর্টিং ক্লাবকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেয় রহমতগঞ্জ। যে কারণে নোফেলের শেষ আটে খেলার স্বপ্নভঙ্গ হয়। চট্টগ্রাম আবাহনীর সঙ্গে মোহামেডান ড্র করায় আর কোন সমীকরণে যেতে হয়নি। এর ফলে ‘বি’ গ্রুপে দুই জয় ও এক ড্রয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপসেরা হয়েছে বন্দর নগরীর চট্টগ্রাম। একটি করে জয়, ড্র ও হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় হয়েছে রহমতগঞ্জ। মোহামেডানকে হারানো নোফেল তৃতীয় ও মোহামেডান হয়েছে সবার শেষ অর্থাৎ চার নম্বর। প্রথম ম্যাচে রহমতগঞ্জ তিন গোলে জেতায় নকআউটে যেতে মোহামেডানের সামনে কঠিন সমীকরণ দাঁড়ায়। কোয়ার্টারে যেতে চট্টগ্রাম আবাহনীর বিরুদ্ধে কমপক্ষে ৪-০ গোলে জয় পেতে হতো এবং আরও হিসেব মিলতে হতো। কিন্তু চার গোল দূরে থাক, জয়ের মতো খেলতেই পারেনি মোহামেডান। বরং বন্দরনগরীর দলটি গোল মিসের মহড়া না করলে আরও একটি হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হতো ঐতিহ্যবাহী দলটিকে। মোহামেডান-চট্টগ্রাম আবাহনীর ম্যাচের মধ্য দিয়ে গ্রুপপর্বের খেলা শেষ হয়েছে। চূড়ান্ত হয়ে গেছে কোয়ার্টার ফাইনালের লাইনআপও। আজ টুর্নামেন্টে একদিনের বিরতি। এরপর মঙ্গলবার থেকে মাঠে গড়াবে শেষ আটের লড়াই। সেমিফাইনালের টিকেট পাওয়ার মিশনে এই স্টেজে মুখোমুখি হবে আরামবাগ-ব্রাদার্স ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম আবাহনী-শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র, ঢাকা আবাহনী-সাইফ স্পোর্টিং ও বসুন্ধরা কিংস-রহমতগঞ্জ। আগামীকাল আরামবাগ ও ব্রাদার্স শেষ আটের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে। ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর হবে আসরের দুই সেমিফাইনাল। ২৪ ডিসেম্বর হবে শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল মহারণ। নকআউটে যেতে জয়ের বিকল্প ছিল না রহমতগঞ্জের। যে কারণে নোফেলের বিরুদ্ধে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে তারা। ফলে প্রত্যাশিত জয়ও পেয়েছে দলটি। প্রথমার্ধে রাকিবুল ইসলামের গোলে রহমতগঞ্জ এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে জোড়া গোলে ব্যবধান বাড়ান কঙ্গোর ফরোয়ার্ড সিও জুনাপিও। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সঙ্গে গোলশূন্য ড্রয়ে আসর শুরু করা দলটি নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে ১-০ গোলে হেরে যায়। যে কারণে নোফেলের বিরুদ্ধে জয়ের বিকল্প ছিল না। তাতে দলটি শতভাগ সফল। শুরু থেকে নোফেলকে চাপে রাখা রহমতগঞ্জ ৩৬ মিনিটে রাকিবুলের বাঁ পায়ের দারুণ ভলিতে এগিয়ে যায়। এই গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় তারা। বিরতির পর ৬৩ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে রহমতগঞ্জ। ফয়সাল আহমেদের কর্নার হেড করে জাল খুঁজে নেন সিও জুনাপিও। ৮০ মিনিটে ডি বক্স থেকে লক্ষ্যভেদ করে রহমতগঞ্জের জয় নিশ্চিত করে দেন কঙ্গোর এই ফরোয়ার্ড। ম্যাচে নোফেলও বেশ কয়েকটি ভাল সুযোগ সৃষ্টি করে। কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় জাল খুঁজে পায়নি। এ কারণে কোয়ার্টারে খেলার স্বপ্ন পূরণ হলো না নবাগত এই দলটির। রহমতগঞ্জ বড় ব্যবধানে জেতায় মোহামেডানের সামনে কঠিন সমীকরণ সৃষ্টি হয়। কিন্তু শক্তিশালী চট্টগ্রাম আবাহনীর বিরুদ্ধে তেমন কিছুই করতে পারেনি দলটি। স্টেডিয়ামে জড়ো হওয়া কিছু মোহামেডান সমর্থক ঘরে ফিরেছেন একরাশ হতাশা নিয়ে। আগেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হওয়ায় বন্দরনগরীর দলটি নির্ভার হয়ে মাঠে নেমেছিল। কিন্তু এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি মোহামেডান। ফলে আবারও ব্যর্থতার বলয় মাথায় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বিখ্যাত সাদা-কালো জার্সিধারীদের।
×