ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

এশিয়া কাপ

এশিয়া কাপে নিজেদের এগিয়ে রাখছেন সৌম্য

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ৩০ আগস্ট ২০১৮

এশিয়া কাপে নিজেদের এগিয়ে রাখছেন সৌম্য

মিথুন আশরাফ ॥ এশিয়া কাপে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল গ্রুপপর্বে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলবে। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী দিন ১৫ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ২০ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে লড়াই করবে। এ দুই দলের চেয়ে নিজেদেরই এগিয়ে রাখছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটার সৌম্য সরকার। এ ওপেনার বুধবার জানিয়েছেন, ‘আমি অবশ্যই আমাদের সবার ওপরে রাখব। সম্প্রতি আমরা যেভাবে ওয়ানডে খেলেছি, তাতে আমাদের ব্যাটিং অন্য দুই দল (শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান) থেকে অনেক বেশি ভাল। আমরা যদি সেখানে গিয়ে ভাল ক্রিকেট খেলি। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং সবকিছুই ভালভাবে করি, তাহলে আমার মনে হয় ফলাফল আমাদের পক্ষেই আসবে।’ কিভাবে ব্যাটিংয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ? সৌম্য জানান, ‘ওয়ানডে কিভাবে খেলতে হয়, এখন আমরা সেটা জানি। সিনিয়ররা তো পারফর্ম করছেই। জুনিয়ররাও করছে। কিন্তু সেভাবে হাইলাইট হচ্ছে না। আমার কাছে মনে হয় ওদের যে স্ট্রং জোন বা আমাদের যে খেলার ধরন, এই মুহূর্তে আমরা টপে।’ আফগানদের বিপক্ষে ভারতে তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজে হেরেছে বাংলাদেশ। আফগানরা বাংলাদেশকে বরাবরই হুঙ্কার দিয়ে আসছে। বিশেষ করে এখন আফগান স্পিনারদের সামনেই বধ হচ্ছে বাংলাদেশ। ব্যাটিংটা যে ঠিকমতো হচ্ছে না। সৌম্য এবার আফগান বধের আশায় ফরমেটকে সামনে তুলে ধরলেন, ‘ওটা টি২০ ফরমেট ছিল। আর এটা ওয়ানডে ফরমেট। টি২০তে পেস বা স্পিন যাই থাকুক, রানের জন্য খেলতে হবে। আর রানের জন্য খেলতে গেলে উইকেট যাবেই। কোনদিন সফল হবেন আবার কোনদিন হবেন না। এটা লম্বা খেলা, ৫০ ওভারের খেলা। একটা বোলারকে আপনি দেখার সময় পাবেন। টি২০তে সেটা পাবেন না। অবশ্যই এটা নিয়ে আমরা চিন্তা করেছি যে কি ঘাটতিগুলো ছিল, কোচের সঙ্গেও কথা বলেছি। সবকিছু মিলিয়ে আমরা আশাবাদী যে ওদের স্পিনাররা সফল হবে না আমাদের বিপক্ষে।’ সিনিয়ররা যেভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারছেন, জুনিয়ররা, তরুণরা সেভাবে পারছেন না। এশিয়া কাপেও তরুণদের চ্যালেঞ্জ দেখছেন সৌম্য, ‘তরুণদের তো সবসময়ই চ্যালেঞ্জ থাকে। কেননা সিনিয়ররা সবসময় পারফর্ম করে। আমরাও যদি করি তাহলে ফলাফল আনতে সুবিধা হবে। ওদের পাঁচজনের সঙ্গে আমরা যদি দিনকে দিন একটু একটু করেও পারফর্ম করি তাহলেও ফলাফল ভাল হবে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘অবশ্য একেবারেই যে করে না তা না। আমাদের (জুনিয়রদের) পারফর্মেন্স ১৯-২০ থাকলে হয়তো কথাটা আসতো না যে জুনিয়ররা খারাপ করছে। আমরা হয়তো এই মুহূর্তে ১৮-২০-এ আছি। তাই আমরা যদি ভাল পারফর্মেন্স করি তাহলে তাদেরও (সিনিয়রদের) ভাল হবে, আমাদেরও।’ বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা অনুশীলন করছেন। সৌম্য ব্যক্তিগতভাবে স্কিল অনুশীলন করছেন। নিজেই জানালেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে তো অবশ্যই কাজ করেছি। কোচের সঙ্গে তো অনুশীলন হচ্ছেই। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে স্কিলের অনুশীলন করছি। আমার যেখানে ঘাটতি আছে মনে হয়, যেখানে আমি আউট হচ্ছি; সেটা নিয়ে যতটুকু সময় পাচ্ছি অনুশীলন করে যাচ্ছি।’ প্রধান কোচ স্টিভ রোডসের তত্ত্বাবধানে চলছে অনুশীলন। রোডসে আলাদাভাবেই উপস্থাপন করতে চাইলেন সৌম্য। জানান, ‘এক এক মানুষের বলার ধরন এক এক রকম থাকে। আমার মনে হয়, এক একজনের বলার ধরন বা এক একজনের নেয়ার ধরন এক একরকম থাকে। রোডস অবশ্যই আলাদা, আমরা যেভাবে করতাম তা থেকে। একটা সেকেন্ডও যদি কমানো যায়, মানে আমরা যদি ওইভাবে দৌড়াতে পারি, তাহলে কিন্তু রানআউট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তো এসব নিয়েই আমরা অনুশীলন করছি।’ সৌম্য অবশ্য বেশিদিন রোডসের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাননি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টি২০’র সময় গিয়েছিলেন সৌম্য। এখন রোডসের সঙ্গে কাজ করছেন। দেখা যায়, একজন একটা শট খেলে আউট হলো। পরেরদিন আবার একই বলে একই শট খেলে আউট হলো। এসব ক্ষেত্রে ব্যাটিং কোচের ভূমিকা কি। কোচ কিভাবে চায় বা আপনারা কী চান? সৌম্যকে প্রশ্ন করা হলেই তিনি বলেন, ‘আমি ওর (কোচ) সঙ্গে বেশিদিন কাজ করিনি। টি২০’র (ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে) সময় গিয়েছিলাম। অল্প কাজ করার সুযোগ হয়েছে। অবশ্যই স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে হবে। কেননা স্বাভাবিক খেলা থেকে কেউ বের হলে আপনি বুঝতে পারবেন যে ও স্বাভাবিক খেলার মধ্যে নেই। ও খেলার বলটা খেলছে না। বা একটু শেকি নেস (হাত কাঁপা বা অনভ্যস্ত অর্থে) আছে। সে যদি দলের জন্য খেলে বা সঠিক উপায়ে খেলে তাহলে সে মারার বলটা মারবেই।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আসলে এক একজনের নেয়ার ধরন এক একরকম। দেখা যাচ্ছে কেউ আজকে মারার বলটা মারতে গিয়ে আউট হয়ে গেল, সে আর পরেরদিন ওই বলে মারবে না। আবার দেখা গেল কেউ একটা মারার বল ছেড়ে দিল, পরে আবার ওই বলেই মারতে গেল, এটা আসলে এক একজনের ক্ষেত্রে এক একরকম। আমি আসলে মারার বলটা মারি সবসময়। কোচের কথা জানি না, কিন্তু আমি পাওয়ার ক্রিকেট খেলি। মারার বলটা সবসময় মারার চেষ্টা করি।’ সৌম্য ব্যাটিং পজিশন নিয়ে ভাবতে নারাজ। ওপেনিং নিয়ে যে সমস্যা আছে সৌম্যকে আবার সেখানে দেখা যেতেও পারে। আবার সৌম্যকে সাত নম্বরেও দেখা যেতে পার। কিন্তু সৌম্য যে পজিশনেই খেলেন না কেন, দলকে জেতানোতেই বিশ্বাসী, ‘সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমি যেখানে খেলে দলকে জেতাতে পারি বা দলকে সাহায্য করতে পারি তাহলেই হলো। তাই আমি ওপেন করি বা সাতে খেলি আমার কাজ হবে পারফর্ম করা। আর আমি পারফর্ম করলে দলেরও সাহায্য হবে। এই ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। তো যদি ওখানে আমাকে খেলতে হয়, তাহলে আমি চেষ্টা করব পরিস্থিতি বুঝে খেলার।’ মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত যৌতুক মামলায় পড়েছেন। এ বিষয় নিয়ে বিসিবির কর্মকর্তারা দ্রুতই আলোচনায় বসবেন। ক্রিকেটারদের মধ্যে অনুশীলনেও নিশ্চয়ই এ নিয়ে আলোচনা হয়? সৌম্য বললেন এশিয়া কাপ নিয়েই শুধু ভাবছেন তারা, ‘এটা যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। এখন যেহেতু ক্যাম্প শুরু হয়ে গেছে, আমরা চেষ্টা করি যার যার নেতিবাচক বিষয় সামনে না এনে ইতিবাচক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে। যেহেতু এশিয়া কাপ সামনেই, ১৫-১৬ দিন পরে। তো সবার চোখ সেখানেই, বড় আসরে কিভাবে ভাল করতে হবে। সেভাবেই অনুশীলন করছে সবাই।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘সবার চিন্তা এশিয়া কাপ নিয়েই। কিভাবে ভাল খেলা যায় সেটা নিয়ে। এসব নিয়ে চিন্তা করার তো কোন সময় নাই কারও।’
×