ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

রিয়ালেই থাকছেন রোনাল্ডো, প্রশংসায় ভাসছেন জিদান

ভক্তদের ভালবাসায় সিক্ত রামোস-বেলরা

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ২৯ মে ২০১৮

ভক্তদের ভালবাসায় সিক্ত রামোস-বেলরা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অবিস্মরণীয় কীর্তিগাথা রচনা করার পর রিয়াল মাদ্রিদ তারকাদের বরণ করে নিতে স্পেনের রাজধানীতে জনতার ঢল নেমেছিল। শনিবার রাতে বিশ্বরেকর্ড গড়ার পরের দিনই দেশে ফিরেছেন রিয়ালের বীরেরা। সার্জিও রামোস, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, গ্যারেথ বেলদের বরণ করে নিতে সারা রাত রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকরা ঘুমাতে পারেননি। গর্ব আর উচ্ছ্বাস নিয়ে জেগে বসেছিল ফুটবল-বীরদের বরণ করে নিতে। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা জিতে কিয়েভ থেকে মাদ্রিদে ফেরার পর রিয়ালের খেলোয়াড়দের নিয়ে আনন্দে মেতে উঠেছে ভক্তরা। রিয়ালের সাফল্যের উৎসব মানেই মাদ্রিদের প্লাজা দ্য সিবেলেস। সেখানেই ফিরেছে ইউরোপের সফলতম দল। আর ফিরেই ছাদখোলা দোতলা বাসে চড়ে জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা সোজা চলে গেছেন সিবেলেসে। স্প্যানিশ ভাষায় ‘কাম্পেওনেস’ বা চ্যাম্পিয়ন লেখা বাসে থাকা বিজয়ীদের কনফেত্তি উড়িয়ে সাদরে বরণ করে নিয়েছে মাদ্রিদের মানুষ। এমন কীর্তির পরও রোনাল্ডোর রিয়াল ছাড়ার গুঞ্জন রটে। বেলও রেগেমেগে জানিয়েছেন চলে যেতে পারেন। তবে দলের সেরা দুই তারকা আভাস দিলেও বিচলিত হচ্ছেন না জিনেদিন জিদান। রিয়াল মাদ্রিদ কোচের বিশ্বাস, সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতেই থাকবেন সি আর সেভেন। এ প্রসঙ্গে রোনাল্ডো বলেন, রিয়াল মাদ্রিদে থাকাটা খুবই দারুণ ছিল। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই আমি কথা বলব। আমি সবসময়ই বলি। জিদান বলেন, আমি রোনাল্ডোকে নিয়ে পরিস্থিতিটা বুঝিয়ে বললাম। তার অবশ্যই আমাদের সঙ্গে থাকতে হবে। সে আমাদের সঙ্গে থাকবেও। তবে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের দেখতে হবে কী ঘটে। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তার অর্জন ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তাই, সে থাকবেই। তবে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে এবং দেখতে হবে। লিভারপুলের বিপক্ষে দলের জয়ে একটি গোল করা করিম বেনজেমারও বিশ্বাস, সি আর সেভেন রিয়ালেই থাকবে। ফরাসী ফরোয়ার্ড বলেন, কোথায় যাবে রোনাল্ডো? সে আমাদের সঙ্গে থাকবে। তাকে আমাদের দরকার আছে। দারুণ কীর্তির পর জিদানকে নিয়ে প্রশংসার ঢেউ বইয়ে চলেছে। খেলোয়াড়ি জীবনে খুব একটা ভাগ্যবান ছিলেন না তিনি। ২০০৬ বিশ্বকাপে একক প্রচেষ্টায় ফ্রান্সকে ফাইনালে তুললেও একটা মুহূর্তের কাছে হেরে গিয়ে সব জলাঞ্জলি দিতে হয়। ওই বিশ্বকাপটা তিনি পেয়ে গেলে হয়তো তাকেই সবাই সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে মেনে নিত। ১৯৯৮ চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালেও জুভেন্টাসের অন্যতম সেরা দল নিয়ে হেরেছিলেন ধুঁকতে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের কাছে। এরপরে রিয়াল মাদ্রিদে আসলেও এত সব তারকা খেলোয়াড় নিয়েও কেবল একটি লা লিগা আর একটি চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জিতেছেন। খেলোয়াড়ি জীবনে ভাগ্যদেবী তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেও কোচিং ক্যারিয়ারে যেন ভাগ্যদেবী দু’হাত ভরে দিচ্ছেন জিদানকে। ২০১৬ সালে মৌসুমের মাঝপথে রিয়ালের দুঃসময়ে দলের দায়িত্ব নেন ফরাসী কিংবদন্তি। তখনই যেন পণ করেছিলেন খেলোয়াড়ি জীবনের সব অপূর্ণতা তিনি ঘুচিয়ে দেবেন কোচিং ক্যারিয়ারে। সেই থেকে তার সাফল্যের জয়যাত্রা চলছেই। কোচিং ক্যারিয়ারে মাত্র আড়াই বছরেই নয় নয়টি শিরোপা উপহার দিয়েছেন তিনি রিয়াল মাদ্রিদকে। যার মাঝে রয়েছে তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লীগ এবং একটি লা লিগা শিরোপা। ইতোমধ্যেই স্যার এ্যালেক্স ফার্গুসন, পেপ গার্ডিওলা ও জোশে মরিনহোর মতো কিংবদন্তি কোচদের পেছনে ফেলেছেন জিদান। তাদের প্রত্যেকেই এত বছর ধরে কোচিং করিয়েও দুইটির বেশি চ্যাম্পিয়ন্স লীগ শিরোপা জিততে পারেননি। এখানেই অনন্য জিদান। নিজের প্রথম তিন সিজনেই জিতে নিয়েছেন তিন চ্যাম্পিয়ন্স লীগ শিরোপা। সেই সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ নামকরণের পর টানা তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জেতা দলের কোচও তিনি। এ কারণে চারদিক থেকে প্রশংসার ¯্রােতে ভেসে চলেছেন জিদান।
×