ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

আগে বিশ্বাস ফেরাতে চান স্মিথ

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৫ মে ২০১৮

আগে বিশ্বাস ফেরাতে চান স্মিথ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অস্ট্রেলীয়দের চোখে স্টিভেন স্মিথ ছিলেন ‘এ যুগের ব্র্যাডম্যান’। ব্যাটিংয়ে-নেতৃত্বে কি অসাধারণ পারফর্মেন্স। এক ভুলে সব তছনছ। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে কেপটাউন টেস্টে সতীর্থ ব্যানক্রফটকে দিয়ে বল টেম্পারিং করানোর দায় মাথায় নিয়ে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন অধিনায়ক স্মিথ ও সহ-অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। এ যেন নক্ষত্রের পতন। এত কঠিন শাস্তি নিয়ে অবশ্য পক্ষে-বিপক্ষে মত রয়েছে। দু’দিন আগে খোদ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) প্রধান জেমস সাদারল্যান্ড বলেছেন, ‘ওদের আসলে সুযোগটা প্রাপ্য।’ তবে নিষেধাজ্ঞার এ ক’দিনে পরিবার-ভক্তদের সাড়ায় অভিভূত স্মিথ বলেছেন, যারা তাকে এতটা ভালবাসেন, তাদের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনাটাই এখন তার প্রথম কাজ। ‘অনেকদিন পর অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসাটা চমৎকার। এই দীর্ঘ সময়ে আমি আপনাদের অসংখ্য ই-মেইল আর অবিশ্বাস্য সব চিঠি পেয়েছি। এখন আপনাদের বিশ্বাস ফিরে পাওয়ার জন্য আমাকে অনেক কিছু করতে হবে। মা, বাবা ও ড্যানি (বান্ধবী ড্যানি উইলস), এ সময়টা আমি তোমাদের আঁকড়ে ছিলাম। তোমাদের জন্য ধ্যনবাদ যথেষ্ট নয়। বিশ্বে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পরিবার। তোমাদের ভালবাসা আর সমর্থনের জন্য অনেক ধন্যবাদ।’ ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন স্মিথ। শাস্তি ঘোষণার পর নিজেকে সবকিছু থেকে দূরে রাখতে যুক্তরাষ্ট্রে যান স্মিথ। স্মিথের বাবা ব্রিটিশ এক সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, বান্ধবী উইলসকে নিয়ে বিদেশে গেছে সে। গুঞ্জন আছে, কষ্ট ভুলতে মার্কিন মুলুকে গিয়ে বিয়ের কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন ২৮ বছর বয়সী তারকা। খুব শীঘ্রই গাঁটছড়া বাঁধতে যাচ্ছেন দু’জনে। সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। বিপদের সময় তার পাশে থাকার জন্য পরিবার ও সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই পোস্ট। শুরুতে অপরাধ স্বীকার করার পর স্মিথ-ওয়ার্নারদের নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। অনেকে তাদের আজীবন নিষিদ্ধের দাবি জানান। খোদ অসি প্রধানমন্ত্রীও তাদের কঠোর শাস্তির পক্ষে কথা বলেন। কিন্তু যখনই শাস্তি ঘোষণা হলো অনেকে তখন সহানুভূতি প্রকাশ করতে শুরু করেন। অনেকে শাস্তির মাত্রা নিয়ে অসন্তুষ্টি জানান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই সমর্থকদের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা আর ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্মিথ। ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত পোস্টে তাকে তার বান্ধবী ড্যানি উইলস ও তাদের পোষা কুকুর চার্লির সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল অবস্থায় দেখা গেছে। নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি সিএ জানিয়েছিল ফেরার পর আর কখনই অধিনায়ক হতে পারবেন না স্মিথ ও ওয়ার্নার। তবে শাস্তির বিপক্ষে আপীল করতে পারবেন। যদিও শাস্তি মেনে নিয়ে আপীল করবেন না বলে জানিয়েছেন স্মিথ। আর ওয়ার্নার তো ক্রিকেটে ফেরার আশাই ছেড়ে দিয়েছেন। ভক্তদের আবেগ আর বাস্তবতা দেখে অস্ট্রেলিয়ান কর্তারাও এখন নমনীয়। গত সপ্তাহে বোর্ড প্রধান বলেছেন, ‘আরও একবার সুযোগ পাওয়া উচিত স্মিথ-ওয়ার্নারদের। একই সঙ্গে ক্রিকেটারদের নৈতিকভাবে দৃঢ় করতে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে ব্যবস্থা নিয়েছে সিএ।’ এই দু’জনকে ছাড়া মাঠের ক্রিকেটেও দলটির কঠিন বিপদ। আগামী বছর বিশ্বকাপ পর্যন্ত যদি তারা মাঠের বাইরে থাকেন তবে রেকর্ড চ্যাম্পিয়নদের কপালে আরও দুর্ভোগ নেমে আসবে। তার ওপর স্পন্সর, দর্শক ডিমান্ড এসব বিবেচনা করেই সিএ’র মনোভাবের এই পরিবর্তন।
×