ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্রাম না নেয়াতেই তামিমের ভোগান্তি

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১ এপ্রিল ২০১৮

 বিশ্রাম না নেয়াতেই তামিমের ভোগান্তি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের পর সেখানে ব্যথা অনুভূত হচ্ছিল অনেকদিন ধরেই। তবে সেই ব্যথা নিয়েও খেলা চালিয়ে গেছেন বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল। এবার শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় টি২০ আসর নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে সে কারণে ফিল্ডিং করতে পারেননি। পরে পাকিস্তান সুপার লীগ (পিএসএল) টি২০ আসরে একটি ম্যাচ খেলেছেন, সেখানেও ফিল্ডিং করেননি তিনি। ইনজুরি সমস্যা বেড়ে যাওয়াতে ব্যাংককে গিয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে দেখিয়ে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশের এ অপরিহার্য ওপেনার। দীর্ঘ সময় ধরে তাকে বেশ সতর্ক থেকেই পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। এমনকি অনুশীলনও করতে পারবেন না। সবমিলিয়ে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ এভাবেই বাঁ হাঁটুর পরিচর্যা করতে হবে। দীর্ঘ এই ভোগান্তির মধ্যে পড়ে গেলেও ভাল খবর হচ্ছে নতুন করে আর অস্ত্রোপচার করানোর প্রয়োজন নেই তামিমের হাঁটুতে। শনিবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী এসব কথা জানিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত শল্যবিদ ডেভিড ইয়াং তামিমের হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করেছিলেন ২০১৪ সালে। সে বছর ডিসেম্বরে মেলবোর্নে গিয়ে অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন তামিম। তবে ওই অস্ত্রোপচারের জায়গায় বেশ কিছুদিন থেকেই ব্যথা অনুভব করছিলেন তিনি। ব্যথার কারণেই পিএসএলের শেষ দুই ম্যাচ খেলেননি এবং ফাইনালেও থাকতে পারেননি। ব্যথা নিয়ে পাকিস্তান থেকে পরিবারসহ ব্যাংককে চলে যান তামিম। ডাক্তারদের সঙ্গে পরামর্শ ও এমআরআই স্ক্যান করানোর পর জানা যায় তামিমের বাম হাঁটুর এমআরআই রিপোর্ট খুব একটা ভাল আসেনি। এ কারণেই চিকিৎসকরা তাকে বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন। এই বিশ্রামটা ৫/৬ সপ্তাহ পর্যন্ত দীর্ঘ। হাঁটুর পরিচর্যা চালাতে হবে এ সময়টাতে। এমনকি ব্যাট-বলের অনুশীলনও না করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ প্রায় দেড় মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে তামিমকে। এর পরের দিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে সাক্ষাত করে তাদের প্রেসক্রিপশন এবং এমআরআই স্ক্যানের রিপোর্ট পাঠিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়ায় শল্যবিদ ডাক্তার ডেভিড ইয়াংয়ের কাছে। তিনি তামিমের হাঁটুর এমআরআই স্ক্যান এবং বাকি পরীক্ষার রিপোর্টগুলো ভালভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিজের মতামত পাঠিয়ে দিয়েছেন বিসিবিতে। এ বিষয়ে দেবাশীষ বলেন, ‘প্রথমে হচ্ছে ওকে বিশ্রাম দিয়ে দেব। যেন ক্ষতটার পরিচর্যা হয়। শরীর নিজে থেকেই যেন নিজেকে উপশম করে। আমাদের কাজ হচ্ছে শরীরটাকে সাহায্য করা। আমরা কোন ইনটারভেনশনে যাচ্ছি না। কোন ইনজেকশন বা কোন ওষুধ দিচ্ছি না। শুধু প্রাকৃতিকভাবে শরীরটাকে নিরাময় করবে। আমরা ব্যথা কমানোর জন্য শুধু ফিজিওথেরাপি দেব। শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে এই প্রক্রিয়া। ৪ সপ্তাহ লাগবে। এই ধরনের ব্যথা নিরাময় করতে ন্যূনতম ৩ সপ্তাহ লাগে।’ দেবাশীষের এই বক্তব্যে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়েছে যে তামিমের হাঁটুতে অন্তত আরেকবার অস্ত্রোপচার করাতে হবে না। কিন্তু পরিস্থিতি হুট করে এত জটিল হওয়ার কারণ কী? ব্যথা অনুভূত হওয়ার পরও তামিম খেলেছেন বলেই কী ইনজুরিটা বড় পর্যায়ে চলে যাচ্ছিল না? এ বিষয়ে দেবাশীষ বলেন, ‘সমস্যা হয়েছে আঘাত পাওয়ার পর বিশ্রাম পায়নি। ওকে খেলতে হয়েছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। পরিচর্যাটা সেভাবে হয়নি। তখন যদি আমরা ওকে বিশ্রাম দিতে পারতাম আরও আগে সুস্থ হতে পারতো।’ অর্থাৎ জেনে শুনেই তামিমকে খেলতে পাঠানো হয়েছিল? সে কারণেই হয়তো এত দীর্ঘ সময় ভোগান্তির মুখে পড়তে হবে এ নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটারকে। এ বিষয়ে দেবাশীষ বলেন, ‘সেটা সম্ভব ছিল না। ওর ফিজিওর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি বলেছেন কি করব খেলাতে হবে। ব্যথার ওষুধ দিলে খেলতে পারবে না। সবমিলিয়ে খেলেছে কিন্তু সেই পরিচর্যযটা হয়নি ফলে আস্তে আস্তে ব্যথাটা বেড়েছে।’ এখন তামিমের হাঁটুর সমস্যাটা যে পর্যায়ের তাতে করে বিশ্রামই একমাত্র নিরাময়ক। এ বিষয়ে দেবাশীষ বলেন, ‘ছোট ছোট কয়েকটা আঘাত আছে। কোনটাই তেমন বড় আঘাত নয় যে এই মুহূর্তে আমাদের বড় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেহেতু আঘাতের মাত্রাটা কম সেহেতু আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে রক্ষণশীল পদ্ধতিতে এগোনো। আমরা যদি এ রকম ৪-৬ সপ্তাহ করতে পারি ও ব্যথামুক্ত হয়ে যাবে।’
×