ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সব ধরনের ফুটবল থেকে অবসরের পর বললেন ইতালির ;###;বিশ্বকাপ জয়ী কিংবদন্তি পিরলো

‘বর্ণময় ক্যারিয়ার নিয়ে আমি গর্বিত’

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ৮ নভেম্বর ২০১৭

‘বর্ণময় ক্যারিয়ার নিয়ে আমি গর্বিত’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অবশেষে সবধরনের ফুটবল থেকে অবসর নিলেন ইতালির কিংবদন্তি ফুটবলার আন্দ্রে পিরলো। সোমবার অবসরের ঘোষণা দেন ২০০৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ী এই মিডফিল্ডার। এর আগে ২০১৫ সালে ইতালি জাতীয় দল থেকে অবসর নেন ৩৮ বছর বয়সী পিরলো। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে পিরলো ইতালির হয়ে ২০০৬ সালের বিশ্বকাপের শিরোপা ছাড়াও দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ও ছয়টি ইতালিয়ান সিরি’এ শিরোপা জয় করেছেন। লম্বা ক্যারিয়ারে জুভেন্টাস, ইন্টার মিলান, এসি মিলানে খেলা সাবেক এই মিডফিল্ডার নতুন ক্লাব নিউইয়র্ক সিটির হয়ে তার ক্যারিয়ার শেষ করলেন। ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে তিনি মাত্র পাঁচ মিনিট মাঠে ছিলেন। বদলি হিসেবে খেলেন কলম্বাস ক্রুর বিরুদ্ধে। এ সময় ভক্ত-সমর্থকরা তাকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানান। অবসর প্রসঙ্গে নিজের টুইটার এ্যাকাউন্টে পিরলো লিখেছেন, শুধু নিউইয়র্কের অভিজ্ঞতাই এখানে শেষ হচ্ছে না, পুরো ফুটবল ক্যারিয়ার থেকেই আমি বিদায় নিচ্ছি। এই সময় আমাকে সমর্থন দেয়ার জন্য পরিবার, সন্তানদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, যারা আমাকে সবসময় ভালবেসেছে। অবশ্যই আমার দল যেখানে খেলতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত। আমার সতীর্থ যাদের সঙ্গে খেলা আমি দারুণ উপভোগ করেছি। সে সমস্ত মানুষ যারা আমার ক্যারিয়ারকে বর্ণাঢ্যময় করে তুলেছে এবং সর্বোপরি আমার ভক্ত-সমর্থক যাদের ছাড়া আমি আজ এখানে আসতে পারতাম না। তোমরা সবসময়ই আমার হৃদয়ে থাকবে। সবমিলিয় আমার ক্যারিয়ার নিয়ে আমি গর্বিত। ২০১৪-১৫ মৌসুম শেষে জুভেন্টাসের হয়ে সিরি’এ শিরোপা জয় করেই যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান পিরলো। জুভেন্টাসের হয়ে চারটি ও এসি মিলানের হয়ে দুটি সিরি’এ শিরোপা জিতেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালীন তিনি আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন চলতি মৌসুমই হবে তার ক্যারিয়ারের শেষ মৌসুম। এসি মিলানে যোগ দেয়ার আগে পিরলো ব্রেসকিয়ার হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন। ইন্টার মিলান ও রেগিনাতেও খেলেছেন। এসি মিলানের হয়ে তিনি ২০০৩ ও ২০০৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা জিতেন। ২০১১ সালে জুভেন্টাসে যোগ দেন। ২০১৫ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে পিরলো জুভেন্টাসের হয়ে সর্বশেষ ইউরোপে ম্যাচ খেলেছেন। ইতালির হয়ে দীর্ঘ ১৩ বছরের ক্যারিয়ারে ১১৬টি ম্যাচে করেছেন ১৩ গোল। নিশ্চিত করেই পিরলোর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সুখের মুহূর্ত ২০০৬ বিশ্বকাপ। সেবার ফাইনালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন তুখোড় এই মিডফিল্ডার। পিরলোর অবসরের পর তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সাবেক ও বর্তমান অনেক তারকারা। ইতালি জাতীয় দলের বর্তমান অধিনায়ক ও গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফন বলেন, পিরলো অসাধারণ একজন যোদ্ধা ছিল। তাকে মাঠে পাওয়া মানে দল অনেক নির্ভার থাকে। বিদায়বেলায় তাকে অভিননন্দন। স্পেন জাতীয় দল ও বার্সিলোনা ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকেও শুভকামনা জানিয়েছেন পিরলোকে। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ইতালির দুই ক্লাব এসি মিলান ও জুভেন্টাসেই বেশি সময় খেলেছেন। ২০১১ সালে এসি মিলান ছেড়ে জুভেন্টাসে যোগ দিয়েছিলেন। তারকা এই ফুটবলার রিয়াল মাদ্রিদ, চেলসি অথবা বার্সিলোনায় খেলতে পারতেন বলেও খবর ছিল। পিরলো নিজেই এমন দাবি করেন। দশ বছরের মায়াজাল ত্যাগ করে মিলান ছেড়েছিলেন পিরলো। গুঞ্জন ছিল ক্লাব প্রেসিডেন্ট সিলভিও বার্লুসকোনির কারণেই সানসিরো ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। মিলান প্রেসিডেন্ট কিছুতেই চাননি পিরলো সেখানে থাক। এ প্রসঙ্গে সাবেক ইন্টার মিলান তারকা আপসোসের সুরে বলেছিলেন, আমি একবার চেলসির সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলাম। সে সময় বার্লুসকোনি আমাকে মিলানে থেকে যেতে বলেন। আমি ফ্যাবিও কাপেলোর রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেয়ার কাছাকাছি পৌঁছেছিলাম ২০০৬ সালে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। ২০১১ সালে বার্সিলোনার তৎকালীন কোচ পেপ গার্ডিওলা পিরলোকে ন্যুক্যাম্পে নিতে চেয়েছিলেন। সেবারও মিলান প্রেসিডেন্ট বার্লুসকোনি থামিয়ে দেন বলে জানান পিরলো। কিন্তু মিলান প্রেসিডেন্টই পরবর্তীতে পিরলোর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেন বলে জানা যায়। যে কারণে সানসিরো ছাড়তে হয় তাকে। এ প্রসঙ্গে পিরলো বলেছিলেন, নিশ্চিত করেই বলব, জুভেন্টাসে আসা আমার ক্যারিয়ারের সেরা সিদ্ধান্ত। মিলান ছাড়তে আমি বাধ্য হয়েছি। এই পরিবর্তন প্রয়োজন ছিল।
×