ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

এবার সাকিবের প্রোটিয়া চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ২৪ অক্টোবর ২০১৭

এবার সাকিবের প্রোটিয়া চ্যালেঞ্জ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে একেবারে কোণঠাসা হয়ে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এবারই প্রথম কোন একটি সিরিজের তিন ফরমেটেই আলাদা অধিনায়কের অধীনে খেলছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে নেতৃত্ব দিয়েছেন মুশফিকুর রহীম- হেরে গেছেন ২-০ ব্যবধানে। ওয়ানডে সিরিজে মাশরাফি বিন মর্তুজার অধীনে হারতে হয়েছে ৩-০ ব্যবধানে। দীর্ঘ ৭ বছর পর আবার টি২০ নেতৃত্বে ফিরছেন সাকিব আল হাসান দুই ম্যাচের সিরিজে। আগামী বৃহস্পতিবার অধিনায়ক হিসেবে নতুন করে যাত্রা শুরু করবেন তিনি। আর বিভীষিকাময় হয়ে ওঠা এ সিরিজে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভাল কিছু উপহার দেয়ার চ্যালেঞ্জ সাকিবের। ৩০ বছর বয়সী সাকিবের টি২০ অভিষেক হয়েছিল ২০০৬ সালের নবেম্বরে খুলনায়। অভিষেকেই জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে জয় দেখেছিলেন তিনি শাহরিয়ার নাফীসের নেতৃত্বে খেলে। সেই ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন মাশরাফি। সর্বাধিক ২৮ টি২০ ম্যাচে বাংলাদেশের পক্ষে অধিনায়কত্ব করেছেন তিনি। এ বছরেরই এপ্রিলে শ্রীলঙ্কা সফরে ২ ম্যাচের টি২০ সিরিজ শেষে অবসর ঘোষণা করেন এই ক্ষুদ্র ফরমেটের ক্রিকেট থেকে। সেই সিরিজেই সর্বশেষ টি২০ খেলেছে বাংলাদেশ দল। মাশরাফি সরে দাঁড়ানোয় এখন তার সহকারী হিসেবে থাকা সাকিব দলকে নেতৃত্ব দেবেন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের দুই টি২০ ম্যাচের সিরিজে। ২০০৯ সালের আগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে অস্থায়ী অধিনায়ক হিসেবে প্রথমবার দায়িত্ব পালন করেছিলেন সাকিব। সেবার সিরিজের শুরুতেই অধিনায়ক মাশরাফি ইনজুরিতে পড়ার কারণে তার কাঁধে ওই দায়িত্ব চেপেছিল। ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে সেই দু’টি ম্যাচেই হার দেখেন সাকিব। পরের বছর আরও দুটি টি২০ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। সেই দুই ম্যাচেও দলকে জেতাতে পারেননি। ৪ ম্যাচ দলকে নেতৃত্ব দেয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে সেই সাকিব আবারও অধিনায়কত্বের যাত্রা শুরু করবেন আগামী বৃহস্পতিবার। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ দলকে ভাল কিছু উপহার দেয়ার কঠিন অগ্নিপরীক্ষা তার জন্য। সর্বশেষবার দলকে নেতৃত্ব দেয়ার পর ৭ বছর পেরিয়ে গেছে। সবমিলিয়ে ৫৯ টি২০ খেলা সাকিব ২৩.৬৮ গড়ে করেছেন ৬ ফিফটিসহ ১২০৮ রান এবং পাশাপাশি বাঁহাতি স্পিনে দখল করেছেন ২০.৪৮ গড়ে ৭০ উইকেট। ৩ বার নিয়েছেন ৪ উইকেটও। দীর্ঘদিন ধরেই টি২০ ফরমেটেও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। তার ওপর ব্যাটে-বলে এমনিতেই নির্ভরশীল বাংলাদেশ দল। এবার বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে দলকে বাজে অবস্থা থেকে টেনে তোলার চ্যালেঞ্জ সাকিবের জন্য। এখন পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৪ টি২০ খেলে বাংলাদেশ সবগুলোতেই পরাজিত হয়েছে। সব ম্যাচেই দলের হয়ে খেলেছেন সাকিব। সর্বশেষ ২০১৫ সালে দেশের মাটিতে প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর আর দু’দলের সাক্ষাত হয়নি এ ক্ষুদ্রতম ফরমেটে। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে দু’দলের মধ্যে তেমন পার্থক্য নেই। দক্ষিণ আফ্রিকা ৭ নম্বরে আর বাংলাদেশ একেবারে তলানিতে- ১০ নম্বরে। কিন্তু ঘরের মাঠে তো বটেই সার্বিকভাবেই এ ফরমেটে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিধর দক্ষিণ আফ্রিকা। তাছাড়া মাশরাফির ঘাটতি যেমন থাকবে, তেমনি বোলিং বিভাগে আরেকটি বড় অভাব কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমানের অনুপস্থিতি। দুই অপরিহার্য বোলারকে ছাড়াই লড়াইয়ে নামতে হবে সাকিবকে। এছাড়া অন্যতম ওপেনার তামিম ইকবালও নেই। যার কারণে ব্যাটিং বিভাগেও কিছুটা দুর্বল থাকবে সফরকারীরা। চলতি সফরে যে পরিস্থিতির মধ্যে আছে দল, তাতে করে টি২০ ফরমেটে অধিনায়ক হিসেবে সাকিবের ফেরাটা সুখকর হয়ে ওঠা বেশ কঠিন। বাংলাদেশের পক্ষে টি২০ ক্রিকেটে সফলতম অধিনায়ক ছিলেন মাশরাফি। তিনি সর্বাধিক ২৮ ম্যাচ দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ১০ ম্যাচে জয় এবং ১৭ ম্যাচে পরাজয় দেখেছেন। সাফল্যের হার ৩৭.০৩। এরপরই মুশফিক। তিনি দ্বিতীয় সর্বাধিক ২৩ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ৮ ম্যাচে জয় এনে দেয়ার পাশাপাশি ১৪ ম্যাচে হার দেখেছেন। সাফল্য ৩৬.৩৬ ভাগ। মোহাম্মদ আশরাফুল ১১ ম্যাচে ২ জয় ও ৯ পরাজয় দেখেছেন অধিনায়ক হিসেবে। বাংলাদেশের প্রথম টি২০ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে জিতেছেন শাহরিয়ার নাফীস। সেটাই ছিল তার একমাত্র নেতৃত্ব দেয়া ম্যাচ। টি২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের চতুর্থ অধিনায়ক সাকিব এবার দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করবেন তার নেতৃত্বের।
×