ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

আরামবাগের হ্যাটট্রিক হার, মুক্তিযোদ্ধা ২-০ আরামবাগ

বিপিএল ফুটবলে মুক্তিযোদ্ধার দ্বিতীয় জয়

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ১০ আগস্ট ২০১৭

বিপিএল ফুটবলে মুক্তিযোদ্ধার দ্বিতীয় জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুঃসময় যেন পিছু ছাড়ছেই না মারুফুল হকের। গত লীগ-মৌসুমে শেখ রাসেলের কোচ হিসেবে প্রথম লেগে দেখেছিলেন নিজ দলের একের পর এক হার। এবারও যেন সেই দুরবস্থায় পড়েছেন তিনি। আরামবাগের কোচ হিসেবে চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলে টানা তৃতীয় হার চাক্ষুষ করলেন ডাগআউটে দাঁড়িয়ে (আসলে এদিন তাকে বেশিরভাগ সময়েই বেঞ্চে বসে থাকতে দেখা গেছে)। বুধবার দিনের প্রথম অনুষ্ঠিত ম্যাচে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রের কাছে ২-০ গোলে হার মানে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। জয়ী দলের আমজাদ আলী ১টি এবং বিজিত দলের আরাফাত হোসেন ১টি আত্মঘাতী গোল করেন। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে এটা মুক্তিযোদ্ধার দ্বিতীয় জয়। পয়েন্ট ৬। অষ্টম থেকে পঞ্চম স্থানে উঠে এলো তারা। পেছনে ফেললো যথাক্রমে ফরাশগঞ্জ, সাইফ এবং শেখ রাসেলকে। ঢাকা আবাহনীরও পয়েন্ট ৬। তবে গোল তফাতে এগিয়ে থাকায় তারা আছে মুক্তিযোদ্ধার একধাপ ওপরে (বুধবার লীগের দ্বিতীয় ম্যাচ সাইফ-ফরাশগঞ্জ মোকাবেলার আগ পর্যন্ত পরিসংখ্যান)। পক্ষান্তরে হ্যাটট্রিক হারে আরামবাগের পয়েন্ট এখনও শূন্য। মোহামেডানকে সরিয়ে তারা পয়েন্ট টেবিলের তলানির স্থানটা দখল করলো (দ্বাদশ)। গত লীগে পয়েন্ট টেবিলে মুক্তিযোদ্ধা-আরামবাগের অবস্থান ছিল পিঠাপিঠি। মুক্তিযোদ্ধা পঞ্চম এবং আরামবাগ ছিল ষষ্ঠ স্থানে। প্রথম পারস্পরিক মোকাবেলায় ৩-০ গোলে জিতেছিল মুক্তিযোদ্ধা। ফিরতি সাক্ষাতে উভয়দলের খেলাটি হয়েছিল গোলশূন্য ড্র। চলতি লীগে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন মুক্তিযোদ্ধা নিজেদের প্রথম খেলায় ০-৩ গোলে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের কাছে হেরে হোঁচট খেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিকে ৩-২ গোলে হারায়। পক্ষান্তরে আরামবাগ তাদের প্রথম ম্যাচে রহমতগঞ্জের কাছে ২-৪ গোলে হেরে হোঁচট খায়। দ্বিতীয় ম্যাচেও হারে সাইফ স্পোর্টিংয়ের কাছে ০-১ গোলে। আরামবাগ ৪-৩-৩ এবং মুক্তিযোদ্ধা ৪-৪-২ ফর্মেশনে খেলা শুরু করে। পুরো ম্যাচে বল পজেশনে এগিয়ে ছিল আরামবাগই (৫৫ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা ৪৫ শতাংশ)। এমনকি বিপজ্জনক আক্রমণেও তাই (৫১-৪০)। তুলনামূলকভাবে বেশি আক্রমণ ও প্রাধান্য বিস্তার করে খেলে আরামবাগই। কিন্তু গোলের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে না পারায় হতাশাই সঙ্গী হয়েছে তাদের। ৩২ মিনিটে ফ্রি কিক পায় আরামবাগ। শট নেন ডিফেন্ডার মোহাম্মদ রকি। বক্সে সেই বল পড়লে তা থেকে ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ জুয়েল যে শটটি নেন তা মুক্তির গোলরক্ষক উত্তম বড়ুয়া ঝাঁপিয়ে কোনমতে হাতে লাগান, বল পোস্ট ছুঁয়ে বাইরে চলে গিয়ে কর্নার হলে বেঁচে যায় মুক্তিযোদ্ধা। ৪০ মিনিটে আরামবাগের নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড বুকোলা ওলালেকার থ্রু পাস ধরে বক্সে ঢুকে মিডফিল্ডার শাহরিয়ার বাপ্পী বাঁ পায়ের গড়ানো শটটি ধরে ফেলেন মুক্তির গোলরক্ষক উত্তম। ৬১ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধা। ডিফেন্ডার তানভীর রানা বাঁপ্রান্ত দিয়ে বল ধরে বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের উড়ন্ত ক্রস ফেলেন পেনাল্টি অঞ্চলে। সেই বল গোলরক্ষক আক্কাস ধরতে যান। কিন্তু তার আগেই বিদ্যুত চমকের মতো দৌড়ে এসে মাথা লাগিয়ে বল জালে পাঠিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন ফরোয়ার্ড আমজাদ আলী (১-০)। ৯০ মিনিট বাঁপ্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন মুক্তিযোদ্ধার বদলি ফরোয়ার্ড মতিউর রহমান। গড়ানো ক্রস করেন সতীর্থ বদলি ফরোয়ার্ড শিহাবের উদ্দেশে। কিন্তু তিনি পায়ে-বলে সংযোগ ঘটানোর আগেই আরামবাগের মিডফিল্ডার আরাফাত হোসেন বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের জালেই বল জড়িয়ে দেন। আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করে মুক্তি (২-০)। এরপরও গোল শোধে মরিয়া আরামবাগ প্রতি আক্রমণ করে খেলে। কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ফিনিশিংয়ের ব্যর্থতায় এবং ভাগ্য সহায় না হওয়াতে আর কোন গোল পায়নি। শেষ পর্যন্ত কষ্টার্জিত জয় কুড়িয়ে ও পূর্ণ তিন পয়েন্ট পাওয়ার চিত্তসুখ নিয়ে মাঠ ছাড়ে মাসুদ পারভেজের শিষ্যরা। আর একরাশ হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে মারুফুল হকের শিষ্যরা।
×