ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন জীবনের শুরু চান হাঞ্চুকোভা

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ১০ জুলাই ২০১৭

নতুন জীবনের শুরু চান হাঞ্চুকোভা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত দুইমাস ধরে একেবারেই বসে বসে কাটিয়েছেন। কোন কাজের মধ্যেই ছিলেন না। মে মাসে সর্বশেষ একটি টুর্নামেন্টে খেলেছেন মরক্কোর রাবাতে। এরপরই পাঁজরের হাড়ে চিড় ধরা পড়ার কারণে কোর্ট থেকে নিজেকে দূরে রাখতে বাধ্য হয়েছেন। আর এই সময়ের মধ্যেই উপলব্ধি করেছেন টেনিসের বাইরের জীবনটাই এখন গোছানো জরুরী। ৩৪ বছর বয়সী ড্যানিয়েলা হাঞ্চুকোভা এ কারণে টেনিসকে বিদায় বলে দিলেন। তবে এখন বেশ শঙ্কায় আছেন ভবিষ্যত জীবনটাকে নিয়ে। কারণ জীবনকে সুখকর করার জন্য অনেক কাজই এখন পর্যন্ত বাকি আছে। সেটাকে অনেক কঠিন এক চ্যালেঞ্জ মনে করছেন তিনি। ১৯৯৯ সালে পেশাদার টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন সেøাভাকিয়ার হাঞ্চুকোভা। তারপর থেকে বেশ দ্রুতগতিতেই ওপরের দিকে উঠতে থাকেন। ২০০৩ সালে ক্যারিয়ারের সেরা র‌্যাঙ্কিং ৫ নম্বরে উঠে আসেন তিনি। এর আগের বছরই সেøাভাকিয়ার হয়ে ফেড কাপ শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন। মহিলাদের এককে তেমন সুবিধা করতে না পারলেও যে কোন শীর্ষ খেলোয়াড়ের জন্যই ছিলেন বড় হুমকি। বড় কোন সাফল্য আসেনি গ্র্যান্ডসøামগুলোর এককে। শুধু অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ২০০৮ সালে সেমিফাইনাল খেলেছিলেন। ৭টি ডব্লিউটিএ শিরোপা জিতেছেন ক্যারিয়ারে। তবে গ্র্যান্ডসøামে সেরা সাফল্য বলতে দ্বৈত আর মিশ্র দ্বৈতে। গ্র্যান্ডসøাম দ্বৈতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ২০০২ ও ২০০৯ সালে এবং ফ্রেঞ্চ ওপেনে ২০০৬ সালে ফাইনাল খেলা। উইম্বলডনের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছিলেন ২০০৫ সালে। কিন্তু মিশ্র দ্বৈতে ছিলেন দারুণ অপ্রতিরোধ্য। বিশ্বের পঞ্চম খেলোয়াড় হিসেবে সবগুলো গ্র্যান্ডসøামের মিশ্র দ্বৈতে শিরোপা জিতেছেন তিনি। চার গ্র্যান্ডসøামই জিতেছেন একবার করে। কিন্তু সেটারও সর্বশেষটি ছিল ২০০৫ সালে ফ্রেঞ্চ ও ইউএস ওপেন। এরপর দীর্ঘ সময় তাকে আর খুঁজেই পাওয়া যায়নি। কারণ দারুণ আকর্ষণীয় দেহসৌষ্ঠব, চেহারায় মাত করেছিলেন মডেল হিসেবে। তার গায়ে তকমা পড়েছিল সুপার মডেলের। টেনিস কোর্টে নিজেকে মেলে ধরার চেয়ে সেদিকেই বেশি ঝুঁকে পড়েছিলেন। তবে ২০১১ সালে একবার ঝলসে উঠেছিলেন, ইউএস ওপেনের দ্বৈতে সেমিফাইনাল খেলেন সেবার। এরপর থেকেই হারিয়ে যান হাঞ্চুকোভা। কালের পরিক্রমায় বয়সটা যেমন বেড়েছে, গ্ল্যামারটাও আগের চেয়ে কমে গেছে। আর মূলত টেনিস তারকা হিসেবেই মডেলিং আর ফ্যাশন জগতে ঝড় তুলেছিলেন। সেই টেনিস কোর্টেই আর তেমন সুবিধা করতে না পারায় পৃথিবীটা ক্রমশই ছোট হয়ে গেছে হাঞ্চুকোভার। তবে খেলা চালিয়ে গেছেন। এ বছর মে মাসেও খেললেন রাবাতে একটি ডব্লিউটিএ আসরে। কিন্তু ইনজুরিটা তাকে ছিটকে দিয়েছে আবার। পাঁজরের হাড়ে চিড় ধরার কারণে অখ- অবসর কাটাচ্ছেন ৩৪ বছর বয়সী এ সেøাভাক তারকা। গত কয়েক সপ্তাহে তিনি উপলব্ধি করেছেন অবসর নেয়া উচিত। এ বিষয়ে হাঞ্চুকোভা বলেন, ‘অনেকগুলো বছর ধরে এটা নিয়ে পড়েছিলাম, অনেক শ্রম দিয়েছি। এখন অনুভব করছি এই অধ্যায়টা বন্ধ করার সময় হয়ে গেছে এবং নতুন করে জীবন শুরু করা উচিত। প্রায় দু’মাস ধরে আমি বলতে গেলে প্রায় কিছুই করিনি। এটা খুবই বিরল ঘটনা যে একটা দিন আমি অনুশীলনে কিংবা জিমে যাইনি। কিন্তু এবারই প্রথম সেটা ঘটেছে বেশ কিছুদিন ধরে। আমি আমার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করেছিলাম ইনজুরিটাকে এড়িয়ে। কিন্তু এটা বারবারই ফিরে আসছিল।’ এখন জীবনের গতি প্রকৃতিই পুরোপুরি পাল্টাতে চান তিনি। এখন বিয়েটা সেরে ফেলবেন, পরিবার গড়বেন। পুরনো আবাসস্থল মোনাকোর মন্টিকার্লোতেই থেকে চেষ্টা করবেন প্রোটিন বারের ব্যবসা। এর পাশাপাশি টেলিভিশনে টেনিস বিশেষজ্ঞ হিসেবে যে প্রোগ্রাম আছে সেটা চালিয়ে যাবেন। তবে টেনিস কোচ হিসেবে ক্যারিয়ার শুরুর সম্ভাবনা একেবারেই শূন্য বলেই জানিয়েছেন তিনি। ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে হাঞ্চুকোভা বলেন, ‘যত ধরনের কাজই সামনে আসবে সবগুলোর জন্যই এখন আমি প্রস্তুত। টেনিস ক্যারিয়ারে একটা ভাল বছর অনেক খানি এগিয়ে দিত সামনের দিকে এবং খুব দ্রুতই বছরগুলো কেটে যেত। আমি বিশেষ করে সেরেনাকে দেখে উদ্বুদ্ধ হতাম কিভাবে উন্নতি করা যায়। এসব আমাকে ব্যক্তি হিসেবে পরিণত করেছে। এখন নিজেকে স্বাধীন মনে হচ্ছে। এখন আমি জানি না আগামী সপ্তাহে কি অপেক্ষা করছে আর এটাই আমার কাছে উত্তেজনা ও আগ্রহের বিষয় মনে হচ্ছে।
×