ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ইংলিশ-প্রোটিয়া হাইভোল্টেজ দ্বৈরথ

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ৬ জুলাই ২০১৭

ইংলিশ-প্রোটিয়া হাইভোল্টেজ দ্বৈরথ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ লর্ডস দ্বৈরথের মধ্য দিয়ে আজ থেকে শুরু হচ্ছে ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা চার ম্যাচের হাইভোল্টেজ ‘বাসিল ডি অলিভেইরা’ টেস্ট সিরিজ। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে প্রোটিয়ারা, চারে ইংল্যান্ড। দৃশ্যত এক ধাপের ব্যবধান, তবে দু’দলের রেটিংয়ের পাার্থক্য সামান্যই। ঘরের মাটিতে খেলা বলে ইংলিশরাই ফেবারিট। দক্ষিণ আফ্রিকা ইতিহাসের সফলতম টেস্ট অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথ (সাবেক) সেটি মেনে নিয়েছেন। বড় তারকা এবি ডি ভিলিয়ার্স সাময়িকের জন্য সেচ্ছা নির্বাসনে থাকায় দুর্দান্ত নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ফ্যাফ ডুপ্লেসিস, পারিবারিক কারণে সেই তিনিও নেই। অধিনায়ক হিসেবে তাই ডিন এলগারের অভিষেক হচ্ছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ও ভারত সফরের ব্যর্থতা মেনে এ্যালিস্টার কুক দায়িত্ব ছাড়ায় এই ম্যাচ দিয়ে ইংলিশদের দায়িত্বভার উঠতে যাচ্ছে জো রুটের কাঁধে। ঐতিহাসিক লর্ডসের প্রথম ম্যাচটা একই সঙ্গে দুই নতুন অধিনায়কের জন্য যেমন রোমাঞ্চের তেমনি ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্যও বাড়তি আগ্রহের। র‌্যাঙ্কিংয়ে কিছুটা এগিয়ে থাকলেও সিরিজের আগে হঠাৎই ‘অধিনায়ক’ সমস্যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ক্রমাগত ইনজুরির কারণে আপাতত নিজেকে টেস্ট থেকে সরিয়ে রেখেছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। অন্তর্বর্তী থেকে পাওয়া পূর্ণকালীনের দায়িত্বে দারুণ করছিলেন ফ্যাফ ডুপ্লেসিস। নিজের প্রথম সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার প্রাক্কালে স্ত্রীকে সময় দিতে দু’দিন আগে ইংল্যান্ড থেকে স্বদেশে ফিরে যান ফ্যাফ ডু প্লেসিস। আর প্রসবকালীন জটিলতার কারণে দলে ফিরতে দেরি হচ্ছে তার। তবে ট্রেন্ট ব্রিজে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ফিরতে পারেন। আগামী ১৪ জুলাই মাঠে গড়াবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। দীর্ঘদিন টেস্ট ক্রিকেটের বাইরে রয়েছেন শীর্ষ ব্যাটসম্যান ডি ভিলিয়ার্স। আর লর্ডসে ডু প্লেসিসের জায়গায় দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশে সুযোগ পেতে পারেন প্রোটিয়া নবীন দুই ব্যাটসম্যান থিউনিস ডি ব্রইন বা আইডেন মার্করামের একজন। এতে লর্ডস টেস্টে হাশিম আমলা ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংক্রমের শীর্ষ চার-এ খেলতে দেখা যেতে পারে তিনজন তরুণ খেলোয়াড়কে। বাভুমা ও জেপি ডুমিনি যথাক্রমে পাঁচ ও ছয় নম্বরে ব্যাট করবেন। তবে বোলিংয়ে অভিজ্ঞ দক্ষিণ আফ্রিকানরা। ভারনন ফিল্যান্ডারের সঙ্গে আছেন কাগিসো রাবাদা ও মরনে মরকেলের মতো পেসাররা। ইনজুরি কাটিয়ে নামছেন পেসার ভারনন ফিল্যান্ডারও। পাঁচ বছর আগে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয় এলগারের। এখন দক্ষিণ আফ্রিকান ওপেনার হিসেবে দলে থিতু হন। চতুর্থ দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে ২০১২ সালে অভিষেক টেস্টেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন ডু প্লেসিস। ৩৫ টেস্টে দুই হাজারের বেশি রানও করে ফেলেছেন। বর্ণবাদ থেকে ফেরার পর দক্ষিণ আফ্রিকার ১২তম টেস্ট অধিনায়ক হতে যাচ্ছেন এলগার। আর ডু প্লেসিসের জায়গায় দলে অভিষেক হতে পারে ৩৩ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান হেইনো কুনের। অন্যদিকে বাংলাদেশ সফরে ঢাকা টেস্টে ভরাডুবির পর ভারতে গিয়ে সিরিজ হারের দায় মাথায় নিয়ে টেস্ট অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান এ্যালিস্টার কুক। গত ফেব্রুয়ারিতেই জো রুটকে নতুন অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত করে ইংল্যান্ড এ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড। ঐতিহাসিক লর্ডসে ২৬ বছর বয়সী তুখোড় উইলোবাজ রুটের টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হচ্ছে। তবে ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে দেখা যাবে দেশটির ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের মালিক কুককে। জনি বেয়ারস্টো, গ্যারি ব্যালান্স, বেন স্টোকস, মঈন আলিদের নিয়ে স্বাগতিক ব্যাটিং বেশ শক্তিশালী। কন্ডিশনের বিবেচনায় স্পিনে মঈনের সঙ্গে বাঁহাতি অর্থোডক্স লিয়াম ডসনকে দেখা যেতে পারে। ইসিবির নির্বাচকদের পক্ষ থেকে এমন ইঙ্গিতই দেয়া হয়েছে। পেস আক্রমণে মার্ক উডের সঙ্গী হতে পারেন ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা তারকা পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড। ‘আমি কোন সমস্যা ছাড়াই লর্ডসে খেলতে পারব। বুধবার ও শুক্রবার কোন ব্যথা ছাড়াই বোলিং করতে পেরেছি। ইনজুরি থেকে আমার সেরে ওঠার প্রক্রিয়াটা বেশ দ্রুত ছিল। আমি এই মঙ্গলবারও অনুশীলন করেছি। ফিটনেস নিয়ে আমি বেশ আত্মবিশ্বাসী।’ বলেন গত মাসে কাউন্টি ম্যাচে ফের ইনজুরিতে পড়া ব্রড। ১৮৮৯ থেকে এ পর্যন্ত মুখোমুখি ১৪৫ টেস্টের ৫৮টিতে জয় ইংল্যান্ডের। দক্ষিণ আফ্রিকা ৩২। ড্র ৫৫। গত বছরের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে চার টেস্টের ‘বাসিল ডি অলিভেইরা’ সিরিজ ২-১এ জিতে নিয়েছিল ইংলিশরা। তার আগে ২০১২ সালে নিজেদের সর্বশেষ ইংল্যান্ড সফরে আবার ৩ টেস্টের সিরিজ ২-০তে জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। আর সেঞ্চুরিয়নে গত বছর মুখোমুখি সর্বশেষ ম্যাচটিতে প্রোটিয়াদের জয় ২৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে।
×