ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি- এখনও আলোচনায় সাকিব

প্রকাশিত: ০৭:১২, ২২ জুন ২০১৭

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি- এখনও আলোচনায় সাকিব

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টানা অনেকগুলা ম্যাচ ফর্মহীনতায় ভুগেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তবে নিজেকে ফিরে পেয়েছেন বড় পর্যায়ের বড় ম্যাচে। এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের বাঁচা-মরার ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে শতরানের একটি ইনিংস উপহার দিয়ে দলকে জিতিয়েছেন। এমন সামর্থ্য আগেও অনেকবার দেখিয়েছেন তিনি। আর সে কারণে ক্রিকেটের তিন ফরমেটেই তিনি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। এবার আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা ব্যক্তিগত ইনিংসগুলোর একটি খেলেছেন সাকিব। রবিবার কেনিংটন ওভালে ফাইনাল শুরুর আগেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা একাদশ দিয়েছেন জনপ্রিয় ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে। সেই একাদশে ঠাঁই করে নিয়েছেন সাকিব। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ গ্রুপ ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের। সেমিফাইনালে উঠতে হলে জয় ছাড়া অন্য কোন উপায় ছিল না। কারণ হারলেই গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে পড়তে হবে। অপরদিকে নিউজিল্যান্ডেরও ছিল একই সমীকরণ। সেই ম্যাচে কিউইদের বিরুদ্ধে রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ৩৩ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে বাংলাদেশ। ওই পরিস্থিতিতে সাকিব ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ পঞ্চম উইকেটে এক অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়েন। ২২৪ রানের জুটি গড়েন তারা। পঞ্চম উইকেট নিজেদের রেকর্ডই ভেঙ্গেছেন এই দুই ব্যাটসম্যান। এর আগে ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৪৮ রানের জুটি গড়েছিলেন দু’জন। সাকিব ১১৫ বলে ১১৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন আর মাহমুদুল্লাহ ১০৭ বলে অপরাজিত ১০২ রান করেন। শুধু পঞ্চম উইকেটের সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েননি সাকিব-মাহমুদুল্লাহ। ২২৪ রানের জুটি যে কোন উইকেটেই বাংলাদেশের সেরা জুটি। যে কোন উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের আগের সর্বোচ্চ ছিল ১৭৮ রান। ২০১৫ সালে ঢাকায় পাকিস্তানের বিপক্ষে তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহীম ১৭৮ রানের জুটি গড়েছিলেন তৃতীয় উইকেটে জুটি বেঁধে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে পঞ্চম উইকেটে এটিই প্রথম দুই শতাধিক রানের পার্টনারশিপ। অর্থাৎ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে পঞ্চম উইকেটে সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড এখন বাংলাদেশের। পঞ্চম উইকেটে এর আগের সেরা ১৩৭ রানের জুটি গড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্রায়ান লারা ও রুনাকো মর্টন। তারা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের ১৮ অক্টোবর মুম্বাইয়ে এ জুটি গড়েছিলেন। সেবার ৬৩ রানে ৪ উইকেট চলে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা জুটি অবিচ্ছিন্ন ২৫২ রানের। ২০০৯ সালের আসরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এটি দ্বিতীয় উইকেটে করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়াটসন ও রিকি পন্টিং। সাকিব-মাহমুদুল্লাহর ২২৪ দুই নম্বরে। কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে পঞ্চম উইকেট তো বটেই, আজ পর্যন্ত কোন দলই কোন উইকেটে ২০০ রানের পার্টনারশিপ গড়তে পারেনি। বাংলাদেশই প্রথম দল যারা কার্ডিফের এ মাঠে কোন দুই শতাধিক রানের জুটি গড়ল। সবমিলিয়ে ৪৩ ওয়ানডে হয়েছে এখানে। আরেকটি বড় ব্যাপার হচ্ছে পঞ্চম উইকেটে ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি তৃতীয় সেরা জুটির রেকর্ড। অবিচ্ছিন্ন ২৫৬ আছে জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। অবিচ্ছিন্ন ২২৬ রানের জুটি আছে ইংল্যান্ডের, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩ আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে। এরপরই সাকিব-মাহমুদুল্লাহ। আর এমন ইনিংস খেলে অবিস্মরণীয় জয় এনে দিয়ে দলকে ঐতিহাসিক সেমিফাইনালে তুলে দেয়ার অবদানের জন্য সাকিবকে নিজের বিবেচনায় করা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা একাদশে সাকিবকে রেখেছেন সেরা পারফর্মেন্সের ভিত্তিতে। তবে বাংলাদেশ ওপেনার তামিম ইকবাল দুর্দান্ত ফর্মে থেকে আসরের দ্বিতীয় সর্বাধিক রান সংগ্রাহক হলেও তাকে একাদশে রাখেননি ভোগলে। তার একাদশের অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ব্যাটিংয়ে মুশফিকুর রহীমের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও উইকেট কিপিংয়ে এগিয়ে থাকায় মহেন্দ্র সিং ধোনিই একাদশে আছেন। ভোগলের সেরা একাদশ ॥ শিখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), জো রুট, বেন স্টোকস, মহেন্দ্র সিং ধোনি (উইকেটরক্ষক), সাকিব আল হাসান, আদিল রশিদ, মরনে মরকেল, হাসান আলী, জুনাইদ খান।
×