ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

হেডমাস্টার রামোসে ফের শীর্ষে রিয়াল

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ১৪ মার্চ ২০১৭

হেডমাস্টার রামোসে ফের শীর্ষে রিয়াল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কোন প্রশংসাই যেন যথেষ্ট নয়। সার্জিও রামোস প্রয়োজনীয় মুহূর্তে রিয়াল মাদ্রিদকে যেভাবে টেনে তুলছেন তা অবর্ণনীয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিয়ালকে অনেক ভরাডুবি থেকে একাই টেনে তুলেছেন স্প্যানিশ এই ডিফেন্ডার। অন্যভাবে বললে বলতে হবে, মাথা দিয়েই দলকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন। অর্থাৎ হেড থেকে ধারাবাহিকভাবে গোল করছেন রামোস। সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হয়েও তার গোলের ধারাবাহিকতায় মুগ্ধ সবাই। এখন পর্যন্ত করে ফেলেছেন চলতি মৌসুমে ১০ গোল। বেশিরভাগই হেড থেকে। এ কারণে রামোসকে বলা হচ্ছে ‘হেড মাস্টার’। রবিবার রাতে স্প্যানিশ লা লিগার ম্যাচে আরেকবার এ প্রমাণ রেখেছেন স্প্যানিশ অধিনায়ক। সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল বেটিসকে ২-১ গোলে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচটি ৮০ মিনিট পর্যন্ত ১-১ গোলে সমতায় ছিল। ঠিক যখন পয়েন্ট হারানোর শঙ্কা তখন আরেকবার হেড করে দৃষ্টিনন্দন গোল করেন রামোস। তাতেই জয়ের পাশাপাশি হারানো শীর্ষস্থান ফিরে পেয়েছে রিয়াল। একই রাতে আকাশ থেকে পতন হয়েছে বার্সিলোনার। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে পিএসজির বিরুদ্ধে ইতিহাস গড়ার পরের ম্যাচেই হারের স্বাদ পেয়েছে কাতালানরা। পেটের পীড়ার কারণে ম্যাচটি খেলেননি নেইমার। এর মূল্য হার দিয়ে দিতে হয়েছে লুইস এনরিকের দলকে। করুনার কাছে বার্সাকে হারতে হয়েছে ২-১ গোলে। এই হারে শীর্ষস্থানও হারাতে হয়েছে। বর্তমানে ২৭ ম্যাচে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বার্সিলোনা। এক ম্যাচ কম খেলে ৬২ পয়েন্ট নিয়ে ফের এক নম্বরে উঠে এসেছে রিয়াল। করুনার কাছে বার্সিলোনা হেরে যাওয়ার পর মাঠে নামে রিয়াল। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারের খবরটা পেয়ে বেশ চনমনেই ছিল জিনেদিন জিদানের দল। তবে জিততে বেশ কষ্টই করতে হয়েছে মাদ্রিদকে। ম্যাচের ২৪ মিনিটে গোলরক্ষকের ভুলে পিছিয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। সানাবরিয়ার শট সহজেই ফেরানো উচিত ছিল কেইলর নাভাসের। শুয়ে পড়ে বলের গতি কমিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ধরতে গেলে উল্টো তার আঙ্গুলের টোকায় বল জালে প্রবেশ করে। ৪১ মিনিটে সমতায় ফেরে রিয়াল। মার্সেলোর ক্রসে বল পেয়ে হেড করে লীগে ১৯ নম্বর গোলটি করেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই রিয়ালকে আবার বাঁচিয়ে দেন নাভাস। দারুণ দক্ষতায় বল গ্লাভসবন্দী করেন তিনি। ৭৬ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ নষ্ট করেন রোনাল্ডো। ইস্কোর পাসে ফাঁকা জায়গায় বল পেলেও গোলপোস্টের বাইরে মেরে দেন রিয়াল তারকা। এর আগে অফসাইডের ফাড়ায় পড়ে গোলবঞ্চিত হয় স্বাগতিকরা। ম্যাচ যখন ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছে, ঠিক তখনই গোল করেন সার্জিও রামোস। টনি ক্রুসের কর্নারে হেডে বল জালে জড়ান এই স্প্যানিশ ডিফেন্ডার। এই ম্যাচে ৫২ বছরের পুরনো একটি রেকর্ড ভেঙ্গেছে রিয়াল। এদিন বিশ্বের প্রথম দল হিসেবে টানা ৪৮টি ম্যাচে গোল করার অবিশ্বাস্য নজির স্থাপন করেছে গ্যালাক্টিকোরা। এর আগে ১৯৬৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৬৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত টানা ৪৭টি ম্যাচে গোল করেছিল পর্তুগীজ লীগের দল বেনফিকা। দিন কয়েক আগে মহাকাব্য গড়ে পিএসজিকে হারিয়েছে বার্সিলোনা। অথচ কয়েক ঘণ্টা পেরোতেই মুদ্রার অপর পিঠটাও দেখলো লুইস এনরিকের দল। প্রতিপক্ষের মাঠে গিয়ে হেরে এলেন মেসি-সুয়ারেজরা। উড়তে থাকা কাতালান ক্লাবটিকে মাটিতে নামিয়ে এনেছে লা করুনা। হারলেও ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ে কম ছিল না বার্সা। প্রথমার্ধে ৭০ ভাগের বেশি বল দখল করে রাখেন মেসি-সুয়ারেজরা। তবে প্রথমার্ধে গোল হজম করে বসে বার্সিলোনা। ম্যাচের ৪০ মিনিটে জোসেলুর গোলে এগিয়ে যায় ডিপোর্টিভো। কর্নার থেকে পাওয়া বলটি পায়ের কাছে পেয়েই জালে জড়িয়ে দেন এই মিডফিল্ডার। বিরতির পর প্রথম মিনিটেই গোলটি শোধ করে দেয় বার্সা। দারুণ শটে গোলটি করেন লুইস সুয়ারেজ। এরপর এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও আক্রমণে ধার ছিল না বার্সার। উল্টো ৭৪ মিনিটে গোল খেয়ে বসে বার্সা। এবারও গোলের উৎস সেই কর্নার কিক। কোলাকের শটে হেড করে গোল করেন এ্যালেক্স গার্সিয়া। বাকি সময়ে গোল না পেলে লজ্জার হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় বার্সাকে। এই ম্যাচেও মেসিকে ঠিক স্বরূপে দেখা যায়নি। অনেকেই বলছেন, নেইমারকে ছাড়া এখন মেসি অসহায়।
×