ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

অভিমত তামিম ইকবালের

ইনজুরি আর বাজে শট খেলাই দায়ী

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১৭ জানুয়ারি ২০১৭

ইনজুরি আর বাজে শট খেলাই দায়ী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এমন অবিশ্বাস্য হারটা একেবারেই ভাবা যাচ্ছে না। কারণ ১২২ বছর আগে প্রথম ইনিংসে ৫৮৬ রান করেও হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। ৭ দিনব্যাপী হয়েছিল টেস্টটা। কিন্তু ১৯৭২ সালে পাকিস্তান মেলবোর্ন টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৫৭৪ রান করেও হেরেছিল। কিন্তু এ দুটি লজ্জার রেকর্ডকেই চাপা দিয়ে লজ্জার মালাটা পরেছে বাংলাদেশ দল। ওয়েলিংটন টেস্টের পঞ্চম দিনে এসে বিস্ময়কর জয় তুলে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড ৭ উইকেটে। এ পরাজয়ের পেছনে দলের অনেক ইনজুরি সমস্যা এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের ভুল শট খেলাকে দায়ী করেছেন সহঅধিনায়ক তামিম ইকবাল। তিনি মনে করেন ব্যাটসম্যানদের আরও সতর্ক হয়েই খেলা উচিত ছিল। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তামিম। ৩ উইকেটে ৬৬ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শেষ করার পর থেকেই শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। ম্যাচটিতে হয়ত হেরেই যাবে বাংলাদেশ। দলের ক্রিকেটাররাও বলছিলেন পঞ্চম দিনে কঠিন চাপে থাকবে সফরকারীরাই। সেটাই সত্য হলো। প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেটে ৫৯৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করা দলটি দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৬০ রানেই গুটিয়ে গেছে। ফলে সঙ্গী হয়েছে ৭ উইকেটে হার। এ বিষয়ে বাঁহাতি ওপেনার তামিম বলেন, ‘প্রথম ইনিংসে আমরা চমৎকার খেলেছি। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটাও ভালো ছিল। কিন্তু ইমরুল ইনজুরিতে পড়ার পর আর আমি আউট হওয়ার পর সব গড়বড় হতে শুরু করে।’ নিজের দোষটা স্বীকার করলেও প্রথম ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানো সাকিব আল হাসানের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টাই করেছেন তামিম। ইতিহাসের সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর দ্বিতীয় ইনিংসে শূন্য রান করেছেন সাকিব। এ বিষয়ে তামিম বড় কোন ব্যাখ্যায় জাননি, ‘তার আরেকটু সতর্ক হয়ে খেলা উচিত ছিল।’ হারের পেছনে নিজের আউট এবং ইমরুল ও মুশফিকের ইনজুরিটাকেই বড় করে দেখছেন তামিম। তাছাড়া দ্বিতীয় ইনিংসে অন্য ব্যাটসম্যানরাও বাজে শট খেলে আউট হয়েছেন। তামিম বলেন, ‘টেস্টে সেশন বাই সেশন খেলা হয়। একটা সেশনে উইকেটে জুটি গড়তে পারাটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একটি জুটি ভেঙ্গে গেলে নতুন আরেকজনকে ক্রিজে এসে সেট হতে হলে সবকিছু আবার নতুন করে শুরু করতে হয়। জুটি গড়তে পারায় আমরা প্রথম ইনিংসে রেকর্ড রান করতে পেরেছি। দ্বিতীয় ইনিংসেও আমাদের শুরুটা ভাল ছিল। কিন্তু ইমরুল ইনজুরিতে পড়াতেই সঙ্কটের শুরু। এরপর দুই-তিন বল খেলে আমি আউট হয়ে গেলাম। তখন মাত্র দিনের ৩২ বল বাকি। ওইভাবে তিন উইকেট না হারালে অন্য কিছু হতে পারত।’ পঞ্চম দিনে বাংলাদেশ একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। ইমরুল-মুশফিকের ইনজুরিতে ব্যাটিং নিয়ে ভাল কিছু করার চিন্তাটাও আকাশ-কুসুম হয়ে যায়। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘টেস্টের পঞ্চম দিনে এসে সাকিব আউট হয়ে গেল। মুশফিক চমৎকার শুরু করেছিল। কিন্তু সে ইনজুরিতে পড়ায় আবার জুটি ভাঙল। এরপর সাব্বির ছাড়া আমাদের স্বীকৃত কোন ব্যাটসম্যান ছিল না। সব মিলিয়ে পুরো বিষয়টি হতাশার ছিল। এ অবস্থা থেকে দলকে বের করে আনতে আমাদের কাজ করতে হবে।’ প্রথম ইনিংসে ভাল করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে বাজে করার বিষয়টি এখন টেস্টে চিরাচরিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। সব দলই এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়। এ বিষয়ে তামিমের মতামত হচ্ছে, ‘সাম্প্রতিক সময়ে এটা দেশে না হলেও বিদেশের মাটিতে অভিযোগটি সত্য। এ অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।’
×