ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

সবাই চায় বারবার জিততে, আমি চাই রেকর্ড গড়তে- বললেন, বিশ্বসেরা জ্যামাইকান স্প্রিন্টার

বোল্টের দৃষ্টি ‘ট্রিপল-ট্রিপল’

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ৩১ জুলাই ২০১৬

বোল্টের দৃষ্টি ‘ট্রিপল-ট্রিপল’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আশঙ্কা ছিল হয়তো শেষ পর্যন্ত রিও ডি জেনিরো অলিম্পিকে অংশই নিতে পারবেন না। কারণ জ্যামাইকার অলিম্পিক ট্রায়ালের সেমিফাইনালে বেশ বড় ধরনের ইনজুরিতেই আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন উসাইন বোল্ট। তবে জ্যামাইকার প্রাথমিক অলিম্পিক দলে তাকে রাখা হয়েছিল। বিশ্বের সবচেয়ে গতিধর এ মানবের জন্য শেষ সুযোগ ছিল ২২ জুলাই লন্ডন ডায়মন্ড লীগে ভাল কিছু করে সামর্থ্য প্রমাণ করার। সেখানে ২০০ মিটারে ১৯.৮৯ টাইমিংয়ে জিতে নিজের সুস্থতা, সামর্থ্য সবই প্রমাণ করেছেন। ফলে রিও ডি জেনিরো অলিম্পিকের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ বোল্ট ঠিকই থাকছেন। বেজিংয়ে ২০০৮ এবং লন্ডনে ২০১২ অলিম্পিকে ১০০, ২০০ ও ৪ী১০০ মিটার রিলেতে স্বর্ণ জিতে অভূতপূর্ব ‘ডাবল-ট্রিপলের’ রেকর্ড গড়েছিলেন। তবে সেখানেই থামতে চাননা সর্বকালের সবচেয়ে গতিধর এ মানব। প্রত্যয় জানিয়েছেন রিও অলিম্পিকেও ট্রিপল জয়ের। কারণ বোল্টের দৃষ্টি ঐতিহাসিক এবং বিস্ময়কর ঘটনার জন্ম দেয়ার দিকে। সেটা ‘ট্রিপল-ট্রিপল’ ম্যাজিক ফিগার সম্পন্ন করেই দেখাতে চান। তবে সবাই বারবার জিততে চাইলেও জীবন্ত এ কিংবদন্তি স্প্রিন্টার ঘোষণা করেছেন তিনি রেকর্ড গড়তে চান। ড্রাগ পাপের ছোবলে বিশ্ব এ্যাথলেটিক্স টালমাটাল ছিল গত বছরের পুরো সময়টা। এখনও সেই রেশটা কাটেনি, ধাক্কা লেগেছে রিও অলিম্পিকেও। অলিম্পিকের অন্যতম সেরা দল রাশিয়ার ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ড এ্যাথলেটরা পুরোপুরি নিষিদ্ধ হয়েছেন আর বাকি ক্রীড়াবিদরাও সবাই অংশ নিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে আছে সংশয়। এমন পরিস্থিতির পর দারুণ মর্মাহত বোল্ট আশঙ্কা জানিয়েছিলেন ডোপপাপীদের কারণে পুরো এ্যাথলেটিক্সকেই এখন সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখবে মানুষ। আর সে কারণেই তিনি এমন কিছু করতে চান যেন বিশ্ববাসী উপলব্ধি করেন ড্রাগের কালো ছায়ার নিচে না থাকলেও যে কোন এ্যাথলেট কিংবদন্তি হওয়ার মতো নৈপুণ্য দেখাতে সক্ষম। এ বিষয়ে বোল্ট বলেন, ‘এ বিষয়টা মানুষকে ভীত করবে। অথবা জোরালো বার্তা দেবে যে বিশ্ব ক্রীড়ায় পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাতে হবে। এটা খুবই দুঃখজনক। কিন্তু নিয়ম সবসময়ই নিয়ম। আমি নিজে থেকে কোন নিয়ম তৈরি করতে পারি না কিংবা সিদ্ধান্তও নিতে পারি না। আমাকে এর সঙ্গে মানিয়ে চলতে হবে। যদি নীতি নির্ধারকরা মনে করেন যে পুরো একটি দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে তাহলে আমি সার্বিকভাবেই সেটার পক্ষে আছি। বোল্টের ইনজুরি পরিস্থিতি দেখে তখন থেকেই শঙ্কা শুরু হয়েছিল হয়তো বোল্ট রিও অলিম্পকে আর অংশ নিতে পারবেন না। কারণ মাসখানেকের সামান্য বেশি বাকি ছিল তখন অলিম্পিক শুরুর। এরপর জ্যামাইকার ট্র্যাক এ্যান্ড এ্যাথলেটিক্সের জন্য ৫৯ জনের প্রাথমিক অলিম্পিক দলে রাখা হয় ‘বিদ্যুত’ বোল্টকে। ওই সময় বোল্টকে নিয়ে শঙ্কা আর আলোচনা চলছিল বিশ্বজুড়েই। সবাইকে অবাক করে মাত্র ৩ সপ্তাহের মধ্যেই ইনজুরি থেকে ফিরে লন্ডন ডায়মন্ড লীগ মিটে বোল্ট ২০০ মিটার জিতলেন দুর্দান্ত টাইমিং নিয়ে। এরপর নিশ্চিত হলো তিনি রিও অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছেন। শুধু অলিম্পিকে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাটাই নয়, ২৯ বছর বয়সী বোল্ট জেতার পর ঘোষণা দিলেন ট্রিপল-ট্রিপল জয়ের। তিনি বলেন, ‘আমি যদিও এখন পর্যন্ত পুরোপুরি ভাল অবস্থায় ফিরিনি কিন্তু দ্রুতই সেটা কাটিয়ে উঠতে আত্মবিশ্বাসী। আমার আরও কিছু কাজ করতে হবে। কিন্তু এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি অলিম্পিকে আমার খেতাব ধরে রাখার জন্য আমি প্রস্তুত। আমি ইতোমধ্যেই একজন জীবন্ত কিংবদন্তি। গৌরবে জ্বলজ্বল করছি। আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন আবার অলিম্পিকে তিনটি স্বর্ণ জেতার। সেদিকেই আমার দৃষ্টি এবং সেটাই আমি করতে চাই। সবাই বারবার জিততে চায়। কিন্তু আমি চাই রেকর্ড গড়তে। আর সেটা আমার মূলত ২০০ মিটারেই গড়ার লক্ষ্য।’
×