ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

বৃষ্টি আইনে ৫৪ রানে ওমানকে হারিয়ে সুপার টেনে টাইগাররা, প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে টি২০ ক্রিকেটে সেঞ্চুরি ও এক ;###;হাজার রানের মালিক তামিম, সাকিবের ৪ উইকেট

ধর্মশালায় তামিম ঝড়

প্রকাশিত: ০৮:১৬, ১৪ মার্চ ২০১৬

ধর্মশালায় তামিম ঝড়

মোঃ মামুন রশীদ ॥ শেষ ম্যাচেই ভাগ্য নির্ধারণ। ওমানের বিরুদ্ধে ম্যাচ হলেও দু’দিন আগে থেকেই হিসেব-নিকেশে বসতে হয়েছে ক্রিকেট পরিসংখ্যানবিদ এবং বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্ত-সমর্থকদের। কারণ গত কয়েকদিন ধর্মশালায় ক্রিকেট যতটা খেলা হয়েছে তার চেয়ে বেশি খেলেছে বৃষ্টি। ওমানের বিরুদ্ধে ম্যাচেও বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় নেট রানরেট এবং জয়-পরাজয়ের চিন্তা করতে হয়েছে। রবিবার বাংলাদেশ-ওমান ম্যাচেও বৃষ্টি খেলল। কিন্তু ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ৫৪ রানে ওমানকে হারিয়ে টি২০ বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে টাইগাররা। হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট এ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথম ব্যাট করে ২ উইকেটে ১৮০ রান তোলে বাংলাদেশ। তামিম এ ম্যাচে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে টি২০ ক্রিকেটে এক হাজার রানের মালিক হয়ে যান। বৃষ্টির আগেই তামিম ইকবাল টি২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ১০৩ রানে অপরাজিত থাকেন। জবাবে ৭ ওভারে ২ উইকেটে ৪১ রান তোলার পর বৃষ্টি শুরু হলে ৫০ মিনিট পর খেলা শুরু হয়। ১৬ ওভারে ওমানের টার্গেট স্থির হয় ১৫২ রান। ১.২ ওভার পর আবারও বৃষ্টি। পরবর্তীতে লক্ষ্য দেয়া হয় ১২ ওভারে ১২০। ওমান ৯ উইকেটে ৬৫ রান তুলতে পেরেছে। বৃষ্টি ছিল রবিবারও, হল্যান্ড-আয়ারল্যান্ড ম্যাচটি মাত্র ৬ ওভারের হয়েছে। বৃষ্টির বাগড়া দেয়ার সম্ভাবনা ছিল বাংলাদেশ-ওমান ম্যাচেও। তবে বৃষ্টি হানা দেয়নি। কিন্তু আগের ম্যাচটির সময়সীমা বর্ধিত করায় বাংলাদেশ-ওমান ম্যাচ শুরু হয় নির্দিষ্ট সময়ের ১০ মিনিট পর। এদিনও টস হারেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশকে শুরু থেকেই চাপে রেখেছিলেন ওমানের বোলাররা। তবে সতর্কভাবেই মোকাবেলা করে গেছেন দুই ওপেনার তামিম ও সৌম্য সরকার। পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারে ২৯ রান উঠেছিল। তামিম বুঝেশুনে দুয়েকটি শট খেলতে থাকলেও সৌম্য নিজেকে ফিরে পাননি এদিনও। শেষ পর্যন্ত ২২টি বল খেলে মাত্র ১২ রান করে সরাসরি বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। দলীয় ৪২ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারিয়ে ফেললেও পথ হারায়নি বাংলাদেশ। এরপর গল্পটা শুধু তামিম আর ওমান বোলারদের। দারুণ ফর্মে থাকা সাব্বির রহমানকে নিয়ে দেখেশুনে মাপা শট খেলে বড় জুটি গড়েন তারা। দ্বিতীয় উইকেটে তাদের ৯৭ রানের জুটিই বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেয় বাংলাদেশকে। সাব্বির ২৬ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪৪ রানে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন। বল মিস করার পর তা হালকা আঘাত করে উইকেটে, দীর্ঘক্ষণ পর বেইল পড়লে আউট হন সাব্বির। তামিম ঝড় থামাতে পারেনি ওমান বোলাররা। ৩৫ বলে ফিফটির পর আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন তিনি। এর আগেই প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে তিনি টি২০ ক্রিকেটে এক হাজার রানের মালিক হয়ে যান। এরপর ৬০ বলে সেঞ্চুরিও আদায় করে নেন। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৬৩ বলে ১০ চার ও ৫ ছক্কায় ১০৩ রানে। এর আগে কোন বাংলাদেশী টি২০ ক্রিকেটে সেঞ্চুরি হাঁকাতে পারেননি। বিশ্বকাপে দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৪ রানের ইনিংস ছিল সাকিব আল হাসানের। তিনি ২০১২ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেটি করেছিলেন ২৫ সেপ্টেম্বর পাল্লেকেলেতে। আর দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৮ রানের অপরাজিত ইনিংস এতদিন ছিল তামিমেরই দখলে। তিনি সেটি ২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে মিরপুরে করেছিলেন। সবকিছুই ছাড়িয়ে নতুন উচ্চতায় পৌঁছলেন তামিম। ২ উইকেটে ১৮০ রান তোলে বাংলাদেশ। টি২০ বিশ্বকাপে এর আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে ৬ উইকেটে ১৭৫। জবাব দিতে নেমে প্রথম ওভারেই তাসকিন আহমেদের কাছে উইকেট হারায় ওমান। দলীয় ১৪ রানের সময় আরেকটি উইকেট তুলে নেন আলআমিন। এরপরও শুরুটা ইতিবাচক হয়েছে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে বিস্ময় সৃষ্টি করা ওমানের। পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারে ৩৫ রান তোলে তারা দুই উইকেট হারিয়ে। ৭ ওভার শেষে তাদের স্কোরবোর্ডে যখন ৪১ রান সে সময় বৃষ্টি আঘাত হানে। খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ৫০ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। বৃষ্টি আইনে ১৬ ওভারে ১৫২ রানের টার্গেট দেয়া হয় ওমানকে। কিন্তু ১.২ ওভার খেলা হতেই আবার বৃষ্টি। এর মধ্যে আরও দুটি উইকেট খোয়ায় তারা। বৃষ্টি থামার পর নতুন করে ১২ ওভারে ১২০ রানের টার্গেট বেঁধে দেয়া হয় ওমানকে। এরপর সাকিব ঘূর্ণিতেই জর্জরিত হয়ে গেছে ওমান। একের পর এক উইকেট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত ১২ ওভারে ৯ উইকেটে ৬৫ রান তুলতে পারে ওমান। ২০ বলে ৪ চারে যতিন্দর সিং সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন। সাকিব ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করে ৩ ওভারে ১৫ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট।
×