ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা

খেলা হলে সেরাটাই দিতে হবে

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৩ মার্চ ২০১৬

খেলা হলে সেরাটাই দিতে হবে

স্পোর্টস রিপোর্টার, ধর্মশালা থেকে ॥ বৃষ্টিতে আজকের ওমানের বিপক্ষে ম্যাচ ভেসে গেলে সেটা ভিন্ন কথা। রানরেটে বাংলাদেশই চলে যাবে ‘সুপার টেনে’। কিন্তু যদি ম্যাচটি হয়, তাহলে ওমানকে হারাতেই হবে। এর বিকল্প কোন পথ নেই যে বাংলাদেশ ‘সুপার টেনে’ খেলবে। ওমানকে হারানোর জন্য কি করতে হবে? বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলে দিয়েছেন, ‘সেরা খেলাটাই খেলতে হবে।’ এমন এক পরিস্থিতি দাঁড়িয়ে গেছে, ম্যাচ হলেই যে দল জিতবে তারাই ‘সুপার টেনে’ খেলবে। ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুই দলেরই যে সমান ৩ পয়েন্ট করে আছে। ওমানও একটি ম্যাচ জিতেছে, আরেকটি ম্যাচ টাই হওয়ায় ১ পয়েন্ট পেয়েছে। বাংলাদেশের বেলাতেও তাই ঘটেছে। তাতে বোঝা যাচ্ছে, যতই টি২০ বদলে যাওয়া দল হোক বাংলাদেশ, ওমানের বিপক্ষে চাপ আছে। মাশরাফি তা স্বীকারও করলেন, ‘দুই দলের জন্যে চাপ তৈরি হয়ে গেছে। দুই দলেরই তিন পয়েন্ট। তবে রানরেটে আমরা এগিয়ে আছি। কিন্তু আমরা যেভাবে খেলে আসছি সেভাবে খেলতে পারলে আমরা ভাল করব। আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে পারব।’ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত শুরু করেছিল বাংলাদেশ। তামিম ইকবালতো ব্যাটিং ঝড়ই তুলল। বৃষ্টি বিঘিœত ১২ ওভারের ম্যাচে ৮ ওভার খেলা হতে পেরেছে। তাতেই ২৬ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৭ রান করে ফেলেন তামিম। এমন ব্যাটিং তকমাই দেখান যে আইরিশ বোলাররা এলোমেলো বোলিং করতে থাকেন। ৮ ওভারেই ৯৪ রান করে ফেলে বাংলাদেশ। এরমধ্যে পাওয়ার প্লেতে ৪ ওভারে ৫২ রান তুলে ফেলে। কি ব্যাটিং ঝড়েরই দেখা মিলেছে। কিন্তু ম্যাচটি পুরো হয়নি। হলে হয়তো আয়ারল্যান্ড উড়েই যেত। তাতেও অবশ্য লাভ হত না। বাংলাদেশের ‘সুপার টেনে’ খেলা নিশ্চিত হয়ে যেত না। ওমানের থেকে ১ পয়েন্ট বেশি থাকত। একই অবস্থা তখনও দাঁড়াত, ওমানের বিপক্ষে বাংলাদেশকে জিততেই হত। বৃষ্টিতে টাই করলেও হত। ১ পয়েন্ট বেশি নিয়েই ‘সুপার টেনে’ খেলত বাংলাদেশ। কিন্তু এখন বৃষ্টিতে খেলা না হলে রানরেটে এগিয়ে থেকে বাংলাদেশকে সেরা ১০ দলের একটি হতে হবে। তবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে যেটি সবচেয়ে ভালর দিক, সেটি হচ্ছে; ব্যাটিংটা দুর্দান্ত হয়েছে। যা সামনে পুরোদমে কাজে লাগবে। মাশরাফি তাই বোঝালেন, ‘আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আমরা জিতলেও সামনের ম্যাচে জিততে হত। যেটা ভাল হয়েছে, একটু খেলা হয়েছে; ব্যাটসম্যানরা আত্মবিশ্বাস পেয়েছে। একেবারে না খেলার থেকে একটু খেলা আমাদের জন্যে ভাল হয়েছে। ব্যাটসম্যানরা ব্যাটিং করতে পেরেছি। আমি মনে করি এটা সামনের ম্যাচে কাজে লাগবে।’ কিন্তু যিনি হল্যান্ডের বিপক্ষে ভাল ব্যাটিং করেছেন, সেই তামিমই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ভাল খেলেছেন। এতে লাভটা আসলে কি হল? সেই প্রশ্নও মাশরাফির সামনে ছুটে গেছে। মাশরাফি বোঝাতে চেয়েছেন, ব্যাটিংয়ের যে রিদম সেটি মিলেছে, ‘ওভার অল তামিম টি২০তে ফর্মে ছিল। একদম ফিয়ারলেস ব্যাটিং করেছে। দেখে মনে হয়েছে যে কোন পজিশনে, যে কোন সিচুয়েশনে ও ব্যাটিং করতে পারবে। এরকম ব্যাটিং অন্যদের বুস্টআপ করে। ওভার অল বলছি আমাদের ব্যাটিং ভাল হয়েছে। কিছুটা খেলাতে ভাল হয়েছে। কারণ তামিমকে সামনের ম্যাচে ব্যাটিং করতে হবে। ওর জন্যে ভাল হয়েছে। আত্মবিশ্বাসী থাকবে।’ হল্যান্ডের বিপক্ষে যে অবস্থা দেখা গেছে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তা দূর হয়ে যেতে দেখা গেছে। যতদূর খেলা হয়েছে, মনে হয়েছে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা। ধীরে ধীরে সবাই ছন্দে ফিরছে। সাকিবের ইনজুরি ছিল। মুস্তাফিজের ইনজুরি এখনও সারেনি। আবার মাশরাফিরও সামান্য হাতে ব্যথা আছে। সবকিছুই ঠিক হয়ে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন মাশরাফি, ‘আস্তে আস্তে সবাই ভাল সেপে যাচ্ছে। এশিয়া কাপে যারা ইনজুরিতে পড়েছিল তারা রিকোভারের সময় পেয়েছে। যে দুজন ছিল মুস্তাফিজ-সাকিব। সাকিব এখন অনেক ভাল। মুস্তাফিজ ভালর পথেই আছে। ইনশাআল্লাহ মুস্তাফিজ দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।’ যেভাবেই হোক, মাশরাফি চান ২০ ওভার খেলতে। যেটির সম্ভাবনা কোনভাবেই দেখা যাচ্ছে না। মাশরাফি তাও আশাবাদী। বলেছেন, ‘আমরা বৃষ্টি আসলে চাইনি। এটা এশিয়া কাপের ফাইনালে আমাদের বিরক্ত করেছে। এই ধরনের ম্যাচে বৃষ্টি হলে সব সময় কঠিন হয়ে যায় মাইন্ড সেটআপ করা। আমরা এতো ম্যাচ খেলি না যে, খুব তাড়াতাড়ি এগুলো মানিয়ে নিতে পারবো। আমরা সবসময় চাই ২০ ওভারের ম্যাচটি খেলতে এসেছি, ওটাই যেন খেলতে পারি। আমি এই মুহূর্তে আশা করছি ওমানের বিপক্ষে ম্যাচটি যেন ২০ ওভারে হয়। আমরা যেন ভাল একটি ম্যাচ খেলতে পারি।’ ম্যাচ খেলা হলেই জয়ও আদায় করে নিতে হবে। মাশরাফি সেটিতেই নজর দিচ্ছেন, ‘প্রথমতো আমরা হল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেছি। কিন্তু ওমানের সঙ্গে কোন খেলা হয়নি। আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ওমানের পুরো ম্যাচটাই আমরা দেখেছি। ওরা দল হিসেবে অনেক ভাল। অবশ্যই টি২০তে। ২-১ ভাল ওভার অবশ্যই সবকিছু পরিবর্তন করে দেয়। আমরা যদি পেশাদার হয়ে খেলতে পারি, সমস্যা নাও হতে পারে। অবশ্যই আমাদের সেরা খেলাটাই খেলতে হবে। অন্য বড় দলগুলোর সঙ্গে আমরা যেভাবে খেলি, সেভাবেই ওদের বিপক্ষে পরিকল্পনা করছি।’ সেই পরিকল্পনায় এখন সাফল্য মিলে গেলেই হয়। এ জন্য সেরাটাই খেলতে হবে বলেই মনে করছেন মাশরাফি।
×