ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সম্ভাব্য ব্যয় সাড়ে নয় শ’ কোটি টাকা

এক হাজার ইউপিতে ব্রডব্যান্ড সুবিধা পৌঁছানোর উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

এক হাজার ইউপিতে ব্রডব্যান্ড সুবিধা পৌঁছানোর উদ্যোগ

ফিরোজ মান্না ॥ দেশের দুর্গম এলাকার এক হাজার দুটি ইউনিয়ন পরিষদে ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছাতে প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৪৪ জেলার ১২৮ উপজেলায় অপটিক্যাল ফাইবার কেবল সংযোগের মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দেয়া হবে। পাঁচ জেলার ১২ উপজেলায় রেডিও লিঙ্ক ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটির সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৯শ’ কোটি টাকা। সরকারী অর্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বিটিসিএল। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ওইসব ইউনিয়ন ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় আসবে। বর্তমানে প্রকল্পটির প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অন্যদিকে, এক হাজার ইউনিয়ন প্রকল্পের কেবল স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। অনেক ইউনিয়নে পরীক্ষামূলকভাবে ইন্টারনেট সেবা দেয়া হচ্ছে। ২০১৬ সালের জুনে বিটিসিএলের এক হাজার ইউনিয়ন প্রকল্প পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে। বিটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, পাঁচ জেলার ১২ উপজেলার সঙ্গে সরাসরি কোন সড়ক যোগাযোগ নেই। এ কারণে এই ১২ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে বিটিসিএল অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করতে পারবে না। সব ক’টি উপজেলা বা ইউনিয়ন নদী বা সাগরের মধ্যে পড়েছে। বিটিসিএল এই ১২ উপজেলার জন্য পরিকল্পনা কমিশনে ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য বিকল্প প্রস্তাব পাঠিয়েছে। প্রস্তাবটি অনুমোদন হলেই কার্যক্রম শুরু করা হবে। দেশে গ্রাম পর্যায়ে নির্ভরযোগ্য ও সহজভাবে তথ্য যোগাযোগের জন্য ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক বেশি সাশ্রয়ী ও দীর্ঘস্থায়ী হবে। এ ছাড়া গ্রাহক এই ইন্টারনেট খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারবে। দুর্গম এলাকায় ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ডের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা বিশ্বজুড়েই গ্রহণযোগ্য। একটি বিটিএস টাওয়ারের (বেইজ স্টেশন) মাধ্যমে ৫ থেকে ৮ কিলোমিটার ব্যাসার্ধে বসবাসরত জনগোষ্ঠী নেটওয়ার্কের আওতায় থাকবে। এক্ষেত্রে বসতি অথবা বিচ্ছিন্ন এলাকায় বসবাসরত মানুষের নেটওয়ার্ক কভারেজের আওতায় আনতে টাওয়ার স্থাপন করতে হবে। ওয়্যারলেস ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ একটি স্থায়ী ট্রান্সমিশন ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে নেটওয়ার্ক সর্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা সহজ। এটি অনেকটা মোবাইল নেটওয়ার্কের মতোই। ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সহজে বিচ্ছিন্ন হয় না। ১২টি উপজেলায় এ মুহূর্তে ভৌগোলিক কারণে অপটিক্যাল ফাইবার কেবল নেটওয়ার্ক সংযোগ দেয়া সম্ভব হবে না। এই উপজেলাগুলো হচ্ছে, ভোলা সদর, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি, লংগদু, জুরাইছড়ি, বিলাইছড়ি, বরকল, বরিশালের মুলাদি, মেহেদীগঞ্জ এবং হিজলা। এ জন্য দুর্গম এলাকায় ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দেয়ার জন্য বিটিসিএল এই প্রকল্প হাতে নিযেছে। এসব এলাকার চারদিক দিয়েই রয়েছে নদী। নদীর নিচ দিয়ে কেবল স্থাপন করা ব্যয়বহুল বলে ওয়্যারলেস ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়। পরে এসব এলাকা সার্ভে করে ওয়্যারলেস ইন্টারনেট স্থাপনের বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনে বিটিসিএল একটি প্রস্তাব পাঠায়। এটি বিটিসিএলের ভবিষ্যত প্রকল্প বাস্তবায়নের একটি অংশ। এদিকে, বিটিসিএল এক হাজার ইউনিয়ন অপটিক্যাল ফাইবার কেবল স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ করেছে। বেশ কিছু ইউনিয়নে ইন্টারনেট সংযোগ চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে ৭০৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
×