ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বেগুন চাষে বদলে গেছে ১৫ গ্রামের ৩শ’ কৃষকের ভাগ্য

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ১৪ জানুয়ারি ২০১৫

বেগুন চাষে বদলে গেছে ১৫ গ্রামের ৩শ’ কৃষকের ভাগ্য

শেখ আব্দুল আওয়াল বেগুন চাষে বদলে গেছে ১৫ গ্রামের তিন শতাধিক কৃষকের ভাগ্য। আজ তাঁরা স্বাবলম্বী। চলতি মৌসুমে বেগুন বেচে অনেক কৃষক লাখপতি হয়েছেন। আর তাঁদের এ সফলতার পেছনে কাজ করেছে সরকারের নানামুখী উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ। ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের চর আলগী, দত্তেরবাজার, টাঙ্গাব ও পাঁচবাগ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গোল ও লম্বা বেগুন চাষ করে বদলে গেছে কৃষকের ভাগ্যের চাকা। অনুকূল আবহাওয়ায় এবার ফলনও হয়েছে বাম্পার। এই চার ইউনিয়নে উৎপাদিত বেগুন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে। সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছে এ এলাকার বেগুনের সুনাম, বাড়ছে চাহিদা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার ২৪০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। উর্বর দো-আঁশ মাটির প্রাচুর্যের কারণে চর আলগী, দত্তেরবাজার, টাঙ্গাব ও পাঁচবাগ ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে ধানের চেয়ে রবিশস্য ও সবজি আবাদ বেশি হয়। চরআলগী ইউনিয়নের নয়াপাড়া, চরমছলন্দ জিরাতিপাড়া, কাচারীপাড়া, নিধিয়ারচর ভাটিপাড়া, চরকামারিয়া, চরমছলন্দ উত্তর নয়াপাড়া ও চরআলগী গ্রামে, টাঙ্গাব ইউনিয়নের ব্রাহ্মণখালী, বাশিয়া ও টাঙ্গাব গ্রামে, পাঁচবাগ ইউনিয়নের চরশাঁখচূড়া, খুরশিদ মহল, গাভীশিমুল গ্রামে এবং দত্তেরবাজার ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাপকভাবে বেগুন উৎপন্ন হচ্ছে। রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের উপজেলার বেগুন ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে এ অঞ্চলের রবিশস্যের অন্যতম গোল ও লম্বা বেগুন। কৃষক বশির উদ্দিন বলেন, চর আলগী এ এলাকার ‘সবজিভা-ার’। কিন্তু কোন হিমাগার নেই। তিনি বলেন, গফরগাঁওয়ে একটি হিমাগার নির্মিত হলে এলাকার কৃষক সবজি সংরক্ষণ করে আরও লাভবান হতো। প্রতিএকর জমিতে বেগুন চাষ করতে খরচ পড়ে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। প্রতি একর জমির বেগুন সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারেন কৃষক। চর আলগী ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের বেগুন চাষী হাফিজ উদ্দিন এবার দেড় একর জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। এতে তাঁর খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। আর এ পর্যন্ত তিনি ক্ষেত থেকেই প্রায় ৪ লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করেছেন। একই গ্রামের বছির আহমেদ এবার দুই একর জমিতে বেগুন চাষ করেন। এ পর্যন্ত তিনি খুচরা ও পাইকারি প্রায় দুই লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করেছেন। আরও অন্তত এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি জানান। এ গ্রামেরই সিরাজ মিয়া ছয় একর, তছলিম উদ্দিন সাড়ে তিন একর, আব্দুল কুদ্দুছ সাড়ে চার একর জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। এছাড়া চর আলগী ইউনিয়নে বেগুন চাষ করে আব্দুস সাত্তার, আতিকুল ইসলাম, সিরাজ উদ্দিন, সাইফুল, সাদেক, জিয়ানত, ফারুক মিয়া, আলী মুন্সীর ভাগ্য বদলে গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, চর আলগী, টাঙ্গাব, দত্তেরবাজারসহ কয়েকটি ইউনিয়নে এবার বেগুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। দুই শতাধিক একর জমিতে বেগুন আবাদ করে লাভবান হয়েছেন অসংখ্য কৃষক।
×