
পটুয়াখালী জেলা সম্মেলনে বুধবার ভার্চুয়ায়ি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান
বিএনপির সব ক্ষমতার উৎস জনগণ। দল হিসেবে আমাদের নীতি ও আদর্শ নিয়ে জনগণের কাছে যেতে হবে। আমাদের নেতা-কর্মীদের বলছি, জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণকেই পাশে রাখুন।
বুধবার পটুয়াখালী জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। বড় হলে সমস্যাও বেশি, দায়িত্ব অনেক, স্যাক্রিফাইসটাও বেশি। গণতন্ত্র যখনই হুমকির মুখে পড়েছে, তখনই বিএনপি রাজপথে নেমেছে- এই ঐতিহ্যকে সামনে রেখেই দলকে আরও সুসংগঠিত করা হচ্ছে। দেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তি যদি শক্ত করতে হয়, তবে বিএনপিকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। ভিন্নমতকে সহনশীলতা ও সম্মান দেখিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানোই হবে দলের পথ।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক সংস্কারের প্রস্তাব বিএনপি আগেই দিয়েছে। তারপরও অন্তর্বর্তী সরকারের ঐকমত্য কমিশনেও অনেক ছাড় দিয়েছে দলটি। অনেক বিষয়ে একমত না হলেও গণতন্ত্রের স্বার্থে ছাড় দিয়েছে বিএনপি। যেন সবাই নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যায়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘গণতন্ত্রের চর্চা আমরা শুধু রাষ্ট্রে নয়, দলের মধ্যেও বজায় রাখতে চাই। গণতন্ত্রে বিশ্বাস বলেই আমরা ভিন্নমতকে গুরুত্ব দেই, শুনি এবং সমাধানের চেষ্টা করি।’
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, একজনের অপকর্মের দায় যেন পুরো দলকে বহন করতে না হয়। দলের সুনাম নষ্ট হয় এমন কাজ থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে। জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা ও তাদের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করাই হবে দলের মূল দায়িত্ব।
তারেক রহমান বলেন, সংস্কার প্রস্তাবনা নিয়ে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করছে সরকার। প্রত্যেকটি দলেরই নিজস্ব আদর্শ ও লক্ষ্য রয়েছে। কিছু মিডিয়া বিএনপি সংস্কার মানছে না, এমনটা বলা হচ্ছে। কিন্তু সত্যটা হলো সংস্কার প্রশ্নে বিএনপি অনেক বিষয়ে ছাড় দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র মানেই মতপার্থক্য থাকবে। বড় দল হিসেবে একমত না হলেও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতামতকে সম্মান দিতে হবে। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করতে হবে। গণতন্ত্রের জন্য সহনশীলতা থাকতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ না করায় ফ্যাসিস্টদের পতন হয়েছে। এ সময় জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ষড়যন্ত্র হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যখনই বাংলাদেশ সংকটে পড়েছে, বিএনপি তখনই সোচ্চার থেকেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সরকারবিহীন সময়টুকু বিএনপিই দেশের শৃঙ্খলা ধরে রেখেছিল।’
বিএনপির গণতান্ত্রিক চর্চার প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, ‘গণতন্ত্রের চর্চা আমরা শুধু রাষ্ট্রে নয়, দলের মধ্যেও বজায় রাখতে চাই। গণতন্ত্রে বিশ্বাস বলেই আমরা ভিন্নমতকে গুরুত্ব দিই, শুনি এবং সমাধানের চেষ্টা করি।’
তিনি বলেন, ‘দলের সুনাম যে কোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে। যদি কেউ দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তাহলে কোনো ধরনের ছাড় বা প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।’
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) আকন কুদ্দুসুর রহমান ও মাহাবুল হক নান্নু, কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক, এবিএম মোশারফ হোসেন, সদস্য মো. হাসান মামুনসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।