
ছবি: জনকন্ঠ
পত্রিকার পাতায় প্রায়ই দেখা যায় বৌ-শাশুড়ির দ্বন্দ্ব-কলহের গল্প। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার ইমামপাড়ায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ উল্টো এক চিত্র। গৃহিণী নাসিমা বেগম ও তাঁর পুত্রবধূ শান্তা আক্তার মিলেই গড়ে তুলেছেন সফল উদ্যোক্তার গল্প। হোমমেড কেক ও নানা ধরনের আচার তৈরি করে তারা এখন মাসে আয় করছেন প্রায় এক লাখ টাকা।
চার বছর আগে নাসিমা বেগমের শখ থেকেই শুরু হয় এই যাত্রা। আমের আচার বানিয়ে ফেসবুকে পাকের ঘর ডট কম নামক একটি পেজের মাধ্যমে বিক্রি শুরু করেন তিনি। মানুষের ভালোবাসা ও চাহিদা দেখে স্বপ্ন বুনে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার। পাশে পান তাঁর পুত্রবধূ শান্তা আক্তারকে। ধীরে ধীরে দু’জন মিলে বাড়িতেই তৈরি করতে থাকেন বিভিন্ন প্রকার আচার।
শান্তা আক্তারও ছিলেন উদ্যোমী। শাশুড়ির কাছ থেকে আচার ও পিঠা বানানো শিখে নিজের আগ্রহে এক আত্মীয়ার কাছ থেকে হোমমেড কেক তৈরির প্রশিক্ষণ নেন। এরপর থেকে কেক, পিঠা ও আচার সবকিছু নিয়েই শুরু হয় তাদের ক্ষুদ্র ব্যবসা। ফেসবুক পেজ পাকের ঘর ডট কম ও স্থানীয় বাজারে তাদের পণ্যের ব্যাপক সাড়া পড়ে।
বর্তমানে তারা তৈরি করছেন আম, চালতা, তেঁতুল, বড়ই, মরিচ, রসুন, গরুর মাংসের আচার, নারিকেলের নাড়ু, নানা প্রকার পিঠা ও হোমমেড কেক। মাসে গড়ে ৬০-৭০ হাজার টাকা আয় হলেও কোনো কোনো মাসে তা লাখ টাকায় পৌঁছায়।
নাসিমা বেগম বলেন, "বৌমাকে মেয়ে ভাবি বলেই হয়তো এতদূর এগিয়ে যেতে পেরেছি। আমাদের বন্ধুত্বই আমাদের শক্তি।"
পুত্রবধূ শান্তা বলেন, "শাশুড়ির অনুপ্রেরণা না পেলে এতদূর আসতে পারতাম না। তিনি আমার মা–এর মতো। এই ভালো সম্পর্কই আমাদের সফলতার মূল চাবিকাঠি।"
প্রতিবেশীরাও তাদের এই উদ্যোগে মুগ্ধ। পাড়াপড়শিরা জানান, তাদের পণ্যের স্বাদ যেমন ভালো, তেমনি এই বৌ-শাশুড়ির সম্পর্ক দেখলে সত্যিই ভালো লাগে। এমন সম্পর্ক সমাজে উদাহরণ হয়ে থাকবে।
নাসিমা বেগম ও শান্তা আক্তারের এই গল্প সমাজে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। প্রমাণ করেছে, পারস্পরিক সম্মান, ভালোবাসা ও সহযোগিতায় যে কোনো সম্পর্কেই সফলতা সম্ভব।
Mily