ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

কলেজ শেষে অবসর সময়ে দোকান দিলেন কলেজ শিক্ষার্থীরা

রিয়াজুল ইসলাম সেতু, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, কুষ্টিয়া

প্রকাশিত: ১৬:২৩, ২৭ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৬:২৪, ২৭ জুন ২০২৫

কলেজ শেষে অবসর সময়ে দোকান দিলেন কলেজ শিক্ষার্থীরা

ছবি: জনকন্ঠ

বাড়ির রান্না করা স্বাদ ধরে রাখা এবং ভেজালমুক্ত পরিবেশে এবার কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে দিয়েছে খাদ্যের স্টল। তাদের সাহসিকতায় এগিয়ে আসছেন কলেজের সহপাঠীরা। তবে এ ধরনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়সহ অভিভাবকরা। 

সরেজমিনে জানা যায়, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা এবার ভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন। এতে অবসর সময় নষ্ট না করে অল্প অল্প করে টাকা জমিয়ে লোকলজ্জার ভয়কে পদদলিত করে পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের ক্যাম্পাসের সামনে ফাস্টফুডের স্টল দিয়েছেন কয়েকজন কলেজ শিক্ষার্থীরা। নিজেদেরকে বেকারত্ব দূর করার লক্ষ্যে এবং পড়াশোনার খরচ মেটাতে এবার কুষ্টিয়ার সরকারি কলেজের মাঠ প্রাঙ্গণে দিয়েছেন এ স্টল।

খোলা আকাশের নিচে এ কলেজের শিক্ষার্থীরাই উদ্যোক্তা হয়ে ফাস্টফুড, চা-কপিসহ বিভিন্ন ধরনের তাদের পছন্দমতো ভেজালমুক্ত খাবার তৈরি করে স্বল্প মূল্যে বিক্রি করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের এই উদ্যোগে সাহস জুগিয়ে পাশে থাকছেন নিজ কলেজ ক্যাম্পাসের সহপাঠী সহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সবসময় ভিড় লেগেই থাকে এ স্টলগুলোতে। মজার বিষয় হচ্ছে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিটি আইটেমে কম রাখেন তারা। তাদের তৈরি করার খাবার খেতে আসেন অনেকেই, এমনকি তাদের দেখাদেখি অনেকেই স্টল দিয়েছেন। তাই বিকাল থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চালু থাকে স্টলগুলো।  

কলেজ শিক্ষার্থী তাসকিয়া বলেন প্রথম ঢাকাতে পড়াশোনা করার সময়ে মহামারি করোনার পর কুষ্টিয়া তে চলে আসেন। এরপর পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য একসময় অনেক প্রাইভেট পড়াতে হত। কিন্তু এতে তার পড়াশোনার অনেক সমস্যা সৃষ্টি হলে বন্ধুত্বের সহযোগিতায় খাবারের দোকান দেওয়ার চিন্তা করেন সে। বর্তমানে তার দেখাদেখি সাহস করে এগিয়ে বিভিন্ন স্টল দিয়েছে। এতে প্রতিদিন যে আয় হচ্ছে সেটা দিয়ে তার পড়াশোনার খরচসহ বিভিন্ন কাজে ব্যয় করতে পারছেন। 

কলেজ শিক্ষার্থী ফাহিম বলেন পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি একটি চায়ের স্টল দিয়েছে। বাংলাদেশের বেকারত্ব দিন দিন বাড়ছে। সে কারণে অবসর সময়ে তিনি চাকুরির পিছনে না ছুটে চায়ের স্টল দিয়েছেন এতে করে তিনি অনেক সাড়া পেয়েছেন। শিক্ষার্থী আরও বলেন কোন কর্ম ছোট না । চাকুরির জন্য নয় অন্যকে চাকুরি দেওয়ার জন্য সে বড় হওয়ার অনেক স্বপ্ন দেখছেন। এখানে থাকবে নিজের স্বাধীনতা। 

প্রতিদিন খেতে আসা ক্রেতারা বলছেন যুবসমাজ আজ ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। বন্ধুত্বের সাথে অবসর সময় নষ্ট করে মাদক সেবন ও মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়েছে। ফলে যুবসমাজের আগামী ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত থাকতে হবে। তবে শিক্ষার্থীদের এ ধরনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। এতে করে তারা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে এক সময় অনেক স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। ছেলে অথবা মেয়েরা যদি সবসময় ব্যস্ত সময় পার করে তাহলে কোন খারাপ পথে পা দিতে পারবে না বলে জানান খেতে আসা ক্রেতারা। 

Mily

×