
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বসতবাড়ির একটি পুকুরে দেখা মিলেছে বিশাল আকৃতির একটি কুমিরের। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চরম আতঙ্ক ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এলাকা জুড়ে শুরু হয় হৈচৈ, কুমিরের ভয়ে রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে স্থানীয়দের। রাত জেগে পাহারা দিয়েছেন এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন, উপকূলীয় বন বিভাগ নোয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু ইউসুফ। এর আগে, বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে হাতিয়া পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের মাসুদ শরীফের বাড়ির পুকুরে থাকা কুমিরটিকে দেখতে এলাকাবাসী ভিড় জমায়। তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিস ও বনবিভাগ ঘটনাস্থল দেখে গেলেও কুমিরটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
পুকুরের মালিক মো. মাসুদুল ইসলাম শরীফ বলেন, গত চার দিন আগে রোববার বিকেলের দিকে আমাদের গ্রামের ফেরি ওয়ালাদের বাড়ির বেলালের লাড়কির ঘরে প্রথমে কুমিরটি দেখতে পায় তাদের পরিবারের সদস্যরা। ওই সময় তারা কুমিরটি হত্যা করতে চেষ্টা করে। সেখান থেকে কুমিরটি তাড়া খেয়ে পালিয়ে যায়। বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আমার স্ত্রী আমাদের ঘরের পেছনের পুকুরে কুমিরটি ভাসতে দেখে। তাৎক্ষণিকভাবে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার মানুষ এখানে ভিড় জমায়।
তিনি আরও বলেন, আমি ফায়ার সার্ভিস ও বনবিভাগকে জানালে তারা এসে দেখে গেলেও উদ্ধার করতে পারেনি। কুমির উদ্ধার করা তাদের কাজ নয় বলে তারা চলে যায়। প্রথমে কেউ বিষয়টি বিশ্বাস না করলেও পরে একাধিক ব্যক্তি কুমিরটি দেখার কথা জানান। পুকুরের পানি থেকে মাথা ও পিঠ তুলে কয়েকবার ভেসে উঠতেও দেখা যায় কুমিরটিকে। রাতভর আমরা আতঙ্কে কাটিয়েছি। বাড়িঘর রাত জেগে পাহারা দিয়েছি।
এলাকাবাসীরা জানান, পুকুরপাড়ে ভিড় করেন হাজার হাজার উৎসুক জনতা। অনেকেই ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। তবে কুমিরটি কোথা থেকে এসেছে বা কীভাবে পুকুরে এলো, সে বিষয়ে কেউ নিশ্চিত নয়। এদিকে কুমির আতঙ্কে রাতভর পাহারা বসিয়েছেন স্থানীয় যুবকরা। শিশু ও বৃদ্ধদের পুকুরের ধারে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা কামাল উদ্দিন বলেন, প্রথমে সবাই গুজব ভেবেছিল। কিন্তু বিকেলের দিকে নিজের চোখে দেখে অবাক হয়ে যাই। ওটা আসলেই একটা বড় কুমির। আমরা এখন আতঙ্কে আছি, বিশেষ করে বাচ্চাদের নিয়ে।
উপকূলীয় বন বিভাগ নোয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু ইউসুফ জনকণ্ঠকে বলেন, ঘটনাস্থলে একটি টিম পাঠানো হয়েছে। যদি কুমির থেকে থাকে তবে তারা পুকুর থেকে কুমিরটি শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। শনাক্ত করা গেলে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হবে। কুমিরটি উদ্ধার হয়ে গেলে আশা করি সবার আতঙ্ক কেটে যাবে।
সজিব