
ছবি: সংগৃহীত
নীলফামারীর চিলাহাটি রেলস্টেশনের ওয়াশফিট নির্মাণকাজে ঘাস ও আগাছা পরিষ্কার না করেই ঢালাই কাজ চলছে। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা মরিচা পড়া রড এবং জঙ্গলে ঢেকে থাকা স্থানে পুনরায় কাজ শুরু হলেও সঠিক তদারকির অভাবে নিম্নমানের কাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (২৫ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, ঘাস ও পলিথিনের ওপর ঢালাই কাজ চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী জানান, "পলিথিন আনতে বলেছিলাম, না আনায় ঘাসের উপরেই ঢালাই দিচ্ছি।"
জানা গেছে, প্রায় সাত মাস আগে ঢালাইয়ের জন্য রড বিছানো হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ক্যাসেল কোম্পানি তাদের কর্মচারীদের সাত মাস ধরে বেতন না দেওয়ায় কাজ বন্ধ ছিল। ফলে নির্মাণসাইটে জন্মায় ঘাস-জঙ্গল এবং রডে পড়ে মরিচা। সেই অবস্থায় ঈদুল আজহার ছুটির সময় গোপনে কাজ শেষ করতে প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহিম তার ঘনিষ্ঠ সোহেল নামে এক ব্যক্তিকে দিয়ে নির্মাণ কাজ করান।
তবে প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহিম বলেন, “কাজ শেষ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আগাছা পরিষ্কার করেই ঢালাই হচ্ছে এবং তদারকির জন্য লোকও নিয়োজিত রয়েছে।” তবে স্থানীয় সাংবাদিকরা বহুবার অনিয়মের খবর প্রকাশ করলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, ২১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪০০ মিটার দৈর্ঘ্যের ওয়াশফিট নির্মাণে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে কাজ শুরু হয়। প্রথমে এক বছর মেয়াদ থাকলেও পরবর্তীতে সময়সীমা বাড়িয়ে দুই বছর করা হয়। বিল না পাওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা দীর্ঘদিন বেতন বঞ্চিত থাকায় বিক্ষোভও করে।
এর আগে দুই দফা জিআইবিআর পরিদর্শনকালে স্থানীয়রা নবনির্মিত আইকনিক ভবনের ফাটল এবং ওয়াশফিটের পিলারের ত্রুটি তুলে ধরলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। গণমাধ্যমে একাধিকবার নিম্নমানের কাজের সংবাদ প্রকাশ হলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ক্যাসেল কোম্পানির প্রকল্প ব্যবস্থাপক সোলেমান হোসেন বলেন, “সাত মাস ধরে বেতন না পেয়ে আমরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, চিলাহাটি রেলস্টেশনের পুরো প্রকল্পেই চলছে দুর্নীতি, অনিয়ম আর জবাবদিহিহীনতা। তদারকির অভাবে এমন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোও জোড়াতালির মাধ্যমে শেষ করে চলেছে সংশ্লিষ্টরা।
আসিফ