
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট বাজারে জারিরদোনা খালের ওপর স্থাপিত দোকানঘরসহ ৭৫টি স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করেছে প্রশাসন। স্থানীয় ঘর মালিকরা জারিরদোনা খালের বহুতল ভবন ও দোকানঘর নির্মাণ করে খালটিকে মেরে ফেলছিলো।
এদিকে খালের ওপর তিনটি অবৈধ বহুতল ভবননের মালিকরা উচ্চ আদালত থেকে সাময়িক স্থগিতাদেশ নিয়ে এসেছে। এজন্য বুধবার অভিযানের সময় ভবনগুলো ভাঙা হয়নি।
বুধবার (২৫ জুন) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় দেয়াল ধসে তিনজন শ্রমিক আহত হন। তাদেরকে স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা প্রশাসন যৌথ বাহিনীর সহায়তায় অভিযানটি পরিচালনা করেন। ঈদের আগে অবৈধ স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নোটিশ প্রদান ও মাইকিং করা হয়। ২২ জুন দ্বিতীয় বারের মতো মাইকিং করে স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কয়েকজন দোকানের মালামাল সরিয়ে নিলোও বাকিরা নেয়নি। এছাড়াও ৮০ অবৈধ দখলের মধ্যে প্রায় ২৫ দোকানঘর আংশিক অংশ নিজ উদ্যোগে ভাঙলে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মজিবুর রহমান বলেন, খালের ওপর থেকে স্থাপনা সরিয়ে নিতে নোটিশ করা হয়েছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্থাপনাগুলো সরানো হয়নি। এতে অভিযান চালিয়ে দোকানঘরসহ ৭৫টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৩টি বহুতল ভবন কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নেওয়ায় সেগুলো উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। জলাবদ্ধতা নিরসন ও খালের প্রবাহ পুনরুদ্ধারে জেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে এখন পর্যন্ত জামাল হোসেন, শাহাব উদ্দিন রনি, মোস্তফা মেস্তুরী, ছায়েদুল হক, কবির হোসেন,নুর হোসেন ব্যাপারীর দখলকৃত ৬টি ঘর সম্পূর্ণ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মহিউদ্দিন ভবন থেকে বাজারের দক্ষিণের বিসমিল্লাহ হোটেল পর্যন্ত ঘর গুলো নিজ উদ্যেগে আংশিক ভাঙা হয়েছে। বিসমিল্লাহ হোটেলের দক্ষিণ থেকে হাদি মাষ্টার বাড়ির দরজা পর্যন্ত ঘর গুলো এখনও ভাঙা হয়নি। আজকের অভিযানে এখন পর্যন্ত ৫ টি কালভার্ট সম্পূর্ণ ও ৪ টির ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া কয়েকটি কালর্ভাট ভাঙতে প্রশাসনের লোকজন গড়িমসি করেছেন বলে জানা যায়।
উচ্ছেদকৃত দোকান মালিক মোঃ জামাল হোসেন বলেন, উত্তরাধিকার সূত্রে আমি একটি দোকানের মালিক ছিলাম। এখন মানুষের প্রয়োজনে খালটি সচল রাখতে ঘর গুলো উচ্ছেদ করেন। তাই প্রশাসন আমার দোকানটি ভেঙ্গে দিয়েছে এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে প্রশাসনের এই উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। কিন্তু এখন শুনতেছি কিছু কিছু ভবন ও স্থাপনা ভাঙ্গা হবে না। যদি এমনটা হয় তাহলে আমাদের সাথে জুলুম আর বৈষম্য হবে। আশা করি এমনটা না হয়ে খালের উপর থাকা সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শেষে খননের মাধ্যমে সচল রাখা হয়।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহাত উজ জামান বলেন, খালের উপর অবৈধভাবে দখল হওয়া দোকানঘর উচ্ছেদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অভিযান চলাকালে একটি ঝুঁকিপূর্ণ দেয়াল ধসে তিনজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুইজন প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় । একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রাজু