
পিরোজপুরের নেছারাবাদে সরকারি রেকর্ডভুক্ত একটি খাল ভরাট করে বাইপাস সড়ক নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এতে করে এলাকায় পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং জলাবদ্ধতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ বিষয়ে একাধিকবার স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত কারণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে ভুক্তভোগীদের।
গত রোববার (২২ জুন) বিকেলে খালটি রক্ষার দাবিতে জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত আবেদন করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে মো. আনিসুল ইসলাম তুহিন। আবেদনপত্রে তিনি জানান, খালটি ভরাট বন্ধ করে বিকল্প হিসেবে কালভার্ট নির্মাণের দাবি জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর দেওয়া এক লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে শর্ত দেওয়া হয়েছিল যে, সেতুর পূর্ব পাশের খালটি ভরাট না করে পানি অপসারণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। কিন্তু সেই শর্ত উপেক্ষা করে একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহল আইন না মেনে খালটির দুই-তৃতীয়াংশ ভরাট করে ফেলেছে। বর্তমানে বাইপাস সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে খালটির বাকি অংশও দখলের মুখে পড়েছে।
এর ফলে এলাকাবাসীর নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহৃত পানির সংকটের পাশাপাশি বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি ও বন্যার পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, সড়ক যেমন জরুরি, তেমনি পরিবেশ ও জনগণের স্বার্থে খালটি সংরক্ষণ করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য তারা খাল না ভরাট করে কালভার্ট নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
স্বরূপকাঠি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রুবেল হোসেন বলেন, “খালটি সরকারি রেকর্ডভুক্ত হওয়ায় আমি জনস্বার্থে ভরাট করতে নিষেধ করেছিলাম। বিকল্প পথ হিসেবে কালভার্ট নির্মাণের প্রস্তাব দিলেও রাজনৈতিক প্রভাবে তা বাস্তবায়ন হয়নি।”
এ বিষয়ে স্বরূপকাঠি সদর ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তা বরুণ কুমার কর বলেন, “সরকারি নথি অনুযায়ী এলাকাটিতে রেকর্ডভুক্ত খাল রয়েছে। পার্শ্ববর্তী সেতু নির্মাণের সময় খালের একটি বড় অংশ ভরাট হয়ে গেছে। যেহেতু এটি রেকর্ডিং খাল, পরিবেশ ও জনস্বার্থে এটি পুনরুদ্ধার করা অত্যন্ত জরুরি।”
নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “সরকারি খাল ভরাটের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে।”
পিরোজপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান বলেন, “বিষয়টি নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
সানজানা