
ছবি: সংগৃহীত
আরামপ্রিয় গৃহপালিত প্রাণী হলো বিড়াল। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে পোষা প্রাণী হিসেবে বিড়ালের কদর সবচেয়ে বেশি।পোষ্য প্রাণিগুলোর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় হচ্ছে বিড়াল। শুধু বাঙালি নয়, বিশ্বের সব দেশেই এই শান্ত এবং আদুরে প্রাণিটির জনপ্রিয়তা রয়েছে। স্তন্যপায়ী ও বন্ধুসুলভ প্রাণি বিড়াল রুপে-গুণে অন্যসব পোষা প্রাণী থেকেও আলাদা। আর পৃথিবীর সুন্দর স্বরের একটি বিড়ালের মিউ মিউ ডাক।
প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ শখের বশে বিড়াল পালন করে আসছেন। অনেকে বিড়াল পালন করেন ইঁদুর দমন করার জন্য। বিড়াল সহজেই পোষ মেনে যায় যে কারো কাছে। বর্তমান সময়ে এসে বিড়ালের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে অনেক।
বিড়াল ২০-১৪০ হার্জ শব্দ উৎপাদন করে যা শরীরের পেশি ও অস্থিসন্ধি প্রদাহ নিরাময়ে থেরাপির মতো কাজ করে। যারা ঘরে বিড়াল পোষেন তারা শারীরিকভাবে অন্যদের তুলনায় বেশ সুস্থ থাকেন। বিড়াল পুষলে মানসিকচাপ কম থাকে ফলে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে যায়।
ইঁদুরের উৎপাত থেকে রক্ষার পাশাপাশি মাছের কাঁটা, ঝুটা খাবার খেয়ে পরিবেশকেও রাখে সুন্দর। এছাড়া বিড়াল প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন-ভূমিকম্পের আভাস পায়।
খাদিজা আলম উত্তরার হাই স্কুল এর হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী।তিনি বলেন, অনেক আগে থেকেই পশুপাখি পালন করি। আমার খরগোশ, পাখি ও দেশি বিড়াল ছিল। তারপর ভাবলাম নতুন কিছু করবো। ২০২১ সালে শখের বশে বিদেশি বিড়াল পালন শুরু করি। প্রথমে আমি সাদা রঙের দুটি বিড়াল দিয়ে শুরু করি। বছরের মাঝামাঝি ভিন্ন রঙের আরেকটি বিড়াল কিনে পালন করি। তিনটি বিড়ালই ঢাকা থেকে কিনে আনি।
শখের বশে বিড়াল পালন করলেও বর্তমানে বিড়ালের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে বিড়ালের খামার গড়তে চান তিনি।
খাদিজা আলম বলেন, শুরুতে শখ থাকলেও দিন দিন বিড়ালের সংখ্যা বেড়েছে। শুরুতে তিনটি বিড়াল ছিল, এখন আমার ১৪টি বিড়াল রয়েছে। আর তিনটি বিক্রি করেছি।
তিনি আরও বলেন, বিড়াল পুষতে খুব ভালো লাগে। আমি যখন বাইরে থেকে আসি তখন দেখি বিড়ালগুলো অপেক্ষা করছে। আমাকে সম্বোধন জানাচ্ছে। দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকছে। আমার পাশে এসে বসে। আমি যখন পড়াশোনা করি আমার কলম, ব্যাগ, খাতা নিয়ে খেলবে। আমি কোথাও গেলে পিছু পিছু আসে। যা খাচ্ছি তা দেখতে আগ্রহ নিয়ে আসে। যদি ভালো লাগে খাবে। পাশে এসে ঘুমায়, আমার ডাকে সাড়া দেয়। ডাকলে দৌড় দিয়ে চলে আসে। আমি খাবার বানিয়ে নিয়ে গেলে ওরা বুঝে এখন খাবারের সময় রুমে যেতে হবে। লাইট জ্বললে তারা ঘুমায় না। লাইট বন্ধ করলে বোঝে এখন ঘুমানোর সময় ঘুমাতে হবে। এরা খুব পোষ্য, বেশ বোঝে। এদের প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা নাম রয়েছে। আর প্রত্যেকেই প্রত্যেকের নাম জানে। প্রথম বিড়ালটির নাম লিও। এ ছাড়া আছে লুনা, এলফি, এলসা, ফাইলো, জ্যাবি, ব্রাফি ডুরা, ইউনা, এন্ডডি, বেলা। সবই বিদেশি নাম।
তিনি আরও বলেন, বিড়ালের খামার পর্যায়ে গেলে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব। বিড়াল একসঙ্গে ৪ থেকে ৫টি বাচ্চা দেয়। অনেক সময় ২-৩টিও দেয়। ফলে বিড়ালের পরিমাণ বেশি থাকলে বাচ্চাও বেশি হবে। একবারে ৫ থেকে ৮টি বিড়ালের বাচ্চা বিক্রি করতে পারলে লাভ।
তিনি আরও বলেন, বিড়াল পালন করতে খুবই ভালো লাগে। শখের কারণেই বিড়াল নেওয়া। পার্সিয়ান বিড়াল খুবই আদরের। আর এরা মানুষের সঙ্গে মিশতে পারে। এ জন্যই মূলত বিড়াল আমার নেওয়া।
আলীম