পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় চারদিনের টানা বৃষ্টিতে অন্তত ৪০ গ্রামে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। রবিবার বিকেল থেকে বৃষ্টির ধারা কিছুটা কমেছে। সূর্য ক্ষণিকের জন্য তীর্যক আলো দিয়েছে। কিন্তু জলাবদ্ধতার ভোগান্তি কমছে না। মানুষ কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন। যদিও এই সময়ে মাঠে কোনো ফসল না থাকায় কৃষকের তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। যোগাযোগে সমস্যা বেড়েছে। টানা বর্ষণে বহু পুকুর ডুবে মাছ বেরিয়ে গেছে। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কলাপাড়া পৌরশহরের চিঙ্গুরিয়া মহল্লার অন্তত দুইশ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব এলাকায় পরিকল্পিতভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এমন দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ। এ ছাড়া পানি চলাচলের খাল দখল-ভরাট করে ঘরবাড়ি স্থাপনা গড়ে তোলায় এমন সমস্যা প্রকট হয়ে আছে। নীলগঞ্জ ফতেহপুর, সোনাতলা ও নিজকাটা গ্রামের কৃষকরা জানান, সব ডুবে গেছে। পুকুরের পাড়ে কেউ কেউ মাছ রক্ষার জন্য জালের বেড়া দিয়েছেন। তাতেও শেষ রক্ষা হয় না। ফতেহপুর স্লুইস গেটটি দিনের বেলা আবার বন্ধ করে রাখা হয়। রাতের বেলা জাল পেতে একটি মহল তাদের সুবিধামতো পানি নামায়। তারা মানুষের ভোগান্তির চিন্তা না করে মাছ ধরে। শিক্ষার্থীরা জানায়, পাশের খালগুলো পায়রাবন্দর উন্নয়নের কাজে ভরাট করেছে। তাঁদের জায়গা উঁচু করা পানি নিচের দিকে জমছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এখন চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। একই দশা উত্তর লালুয়ার নৌঘাটির আশপাশের গ্রামের মানুষের। জলাবদ্ধতা এখন এদের স্থায়ী দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ^াস জানান, পানি নিষ্কাশনের পথ না রেখেই খাল-বিল নালা ভরাট করায় এমন জলাবদ্ধতায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
সাধারণ মানুষের দাবি স্লুইস গেটগুলো পানির নিষ্কাশন কাজে ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া হোক। তা নাহলে তাদের দুরবস্থা যাবে না। এ ছাড়া শহর কিংবা গ্রাম সরকারি খাস খালের বাঁধ, ঘের, স্থাপনা অপসারণ করা হোক। খাস হালট নালা জনস্বার্থে দখলমুক্ত করা হোক। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল ইসলাম জানান, সরকারি খাল, নালা দখলদার উচ্ছেদ ও খালের বাঁধ অপসারণের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। খেপুপাড়া আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রবিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে ১৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
প্যানেল
