ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২

রাণীশংকৈলে রাস্তার বেহাল দশা, দুর্ভোগে স্থানীয়রা

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাণীশংকৈল, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ২১:৩৪, ২২ জুন ২০২৫

রাণীশংকৈলে রাস্তার বেহাল দশা, দুর্ভোগে স্থানীয়রা

সামান্য বৃষ্টিতেই কিছু কিছু জায়গায় হাঁটুপানি জমে। কাদায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায় রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের চেকপোস্ট সীমান্তের চাকমাপাড়া-সাহনাবাদ যাওয়ার পথে গ্রামের ভিতর কাঁচা মাটির প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তা। এছাড়াও পার্শ¦বর্তী বেতবাড়ী, পামল ও কলনীর মানুষের চলাচলের রাস্তা এটি। সারা দেশে রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হলেও এ গ্রামে এখনো সেই ছোঁয়া লাগেনি। প্রাচীন এই গ্রামে রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এতিমখানা, মাদ্রাসা ও রয়েছে একটি বড় বাজার। রাস্তাটির বেহাল দশার কারণে গ্রামটির সার্বিক উন্নয়ন থমকে আছে। একটুখানি বৃষ্টি বা বর্ষা নামলেই যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়, সেইসঙ্গে রাস্তা চাষাবাদের জমিতে পরিণত হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের চেকপোস্ট চাকমাপাড়া-সাহনাবাদ বড় মসজিদ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার মাটির কাঁচা রাস্তা। ওই রাস্তা দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে কোনোমতে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে রাস্তার খানাখন্দ ও গর্ত ভরে যায় বৃষ্টির পানিতে। তখন দেখে বোঝার উপায় থাকে না যে, এটি রাস্তা, নাকি ফসলের জমি। রাস্তার বেহাল দশার কারণে ভ্যান কিংবা অটোগাড়ি যেতে চায় না। নিরুপায় হয়ে কাদামাটি দিয়ে পায়ে হেঁটে কয়েক হাজার মানুষকে খুব কষ্ট করে চলাচল করতে হয়। বর্তমানে বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি কাদামাটি ও বৃষ্টির পানির সংমিশ্রণে কাদার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। স্বাধীনতার এত বছর পরও পাকা করা হয়নি রাস্তাটি। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শত শত শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ, অসুস্থ রোগী, কৃষক ও সাধারণ মানুষ যাতায়াত করে। কিন্তু এ রাস্তা যেন তাদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনপ্রতিনিধিরা ভোটের সময় প্রতিশ্রুতি দিলেও ভোটের পর আর তাদের দেখা মেলে না। এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। স্থানীয় বাসিন্দা কৃষক মো. কামাল হোসেন বলেন, আমাদের জন্মের আগের এই কাঁচা রাস্তাটি তখন যেমন ছিল এখন আরও বেশি খারাপ হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে কিছু কিছু জায়গায় হাঁটু পর্যন্ত কাদা হয়ে যায়। এছাড়াও পাশের মাঠের সব ফসল এই রাস্তা দিয়েই বাড়ি নিতে হয়। এই রাস্তা দিয়ে আমাদের আশপাশের বিভিন্ন এলাকার কৃষিপণ্য বাজারজাত করা হয়। রাস্তার বেহাল দশার কারণে আমরা কৃষি পণ্যের উপযুক্ত মূল্য পাই না। আমাদের এ কষ্ট কবে দূর হবে তার কোনো ঠিক নেই বলে আক্ষেপ করেন তিনি। আরেক স্থানীয় বাসিন্দা ওহেদুর বলেন, প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। তাদের চলতে খুবই সমস্যা হয়। জরুরি সেবার কোনো যানবাহন বা যে কোনো গাড়ি গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না। কেউ মারা গেলে বর্ষার সময় অনেক কষ্ট করে কবরস্থানে নিতে হয় এই কাদাযুক্ত রাস্তা দিয়ে। পুরানো এই রাস্তাটি পাকা করা এখন সময়ের দাবি। ওই এলাকার বাসিন্দা আকমল হোসেন একই কথা জানান। রাণীশংকৈলের এলজিইডি প্রকৌশলী আনিসুর রহমান দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, ঠাকুরগাঁও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১.৫ কি.মি. রাস্তার কাজের জন্য অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। ডিপিপি অনুমোদন হলে রাস্তাটির কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।

প্যানেল

×