ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২

বাবার মোটরসাইকেলে বোরকা পেঁচিয়ে কলেজছাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদদাতা, হাতিয়া

প্রকাশিত: ২০:৫৫, ২২ জুন ২০২৫

বাবার মোটরসাইকেলে বোরকা পেঁচিয়ে কলেজছাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু

নোয়াখালীর হাতিয়ায় বাবার মোটরসাইকেলে কলেজে যাওয়ার পথে বোরকা পেঁচিয়ে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছেন এক কলেজছাত্রী। রোববার (২২ জুন) দুপুরে সোনাদিয়া ইউনিয়নের হিল্টন রোড এলাকায় এ হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহত শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান শান্তা (১৭) হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তিনি জাহাজমারা ইউনিয়নের নতুন সুখচর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক মো. আরিফের মেয়ে।

জানা গেছে, রোববার সকালে বাবা-মেয়ে একসঙ্গে মোটরসাইকেলে করে কলেজের উদ্দেশে রওনা দেন। পথে সোনাদিয়া হিল্টন রোড এলাকায় শান্তার পরিহিত বোরকার একটি অংশ পেছনের চাকায় পেঁচিয়ে যায়। ওই অংশটি গলায় ঝুলানো থাকায় হঠাৎ টান পড়ে এবং শান্তা চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে যান। এরপর বোরকার ফাঁসে গলা আটকে গিয়ে তাকে কিছুদূর পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায় বাইকটি। দুর্ঘটনায় বাবা-মেয়েই গুরুতর আহত হন।

পথচারীরা আহত অবস্থায় দু’জনকেই উদ্ধার করে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইশরাত জাহানের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকায় পাঠানোর নির্দেশ দেন।

উপসহকারী মেডিকেল অফিসার মো. শামীম জানান, “শান্তার মাথায় গুরুতর জখম ছিল। বোরকা পেঁচিয়ে যাওয়ায় গলায় দমবন্ধ হওয়ার মতো চিহ্নও ছিল। আমরা দ্রুত রেফার করেছি।”

শান্তার চাচা মো. আশরাফ জানান, “আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা নেওয়ার পথে নদী পার হওয়ার আগেই শান্তা মারা যায়। পরে তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তার বাবা এখনও স্বাভাবিক আচরণ করতে পারছেন না, বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।”

এদিকে ঘটনাটি এলাকায় চরম শোকের ছায়া ফেলেছে। সহপাঠীরা কান্নায় ভেঙে পড়েছে, কলেজ কর্তৃপক্ষও গভীর শোক প্রকাশ করেছে।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজমল হুদা বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। এখনো পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মিমিয়া

×