
ছবি: জনকণ্ঠ
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার শালদহ ইকো রিসোর্ট সড়কের ব্রিজের কাজ শেষ করে উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার আগেই ধসে পড়েছে ব্রিজের সংযোগ সড়কের দুই পাশের গাইড ওয়ালসহ নিরাপত্তা পিলার।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শালদহ ইকো রিসোর্ট থেকে দীপালী রিসোর্টের দিকে যাওয়ার জন্য একটি ছোট ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রিজের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে অনেক উঁচু করে মাটি ভরাট করে অ্যাপ্রোচ সড়ক তৈরি করা হয়। সড়কের মাটি যাতে সরে না যায়, সে জন্য দুই পাশেই গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হয় এবং সিমেন্টের স্ল্যাব বসানো হয়। কিন্তু স্ল্যাব বসানোর পর ফাঁকা অংশগুলো সিমেন্ট দিয়ে ভালোভাবে বন্ধ না করেই নিম্নমানের কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিল নিয়ে চলে যায়।
ফলে বৃষ্টির পানি দুই স্ল্যাবের ফাঁক দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে। নিম্নমানের কাজের কারণে কিছু দিনের মধ্যেই সড়কের দুই পাশ ধসে পড়েছে এবং যান ও জনচলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এ অবস্থায় সড়কটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যান ও জনচলাচলের নিরাপত্তার জন্য রাস্তার দুই পাশে নিরাপত্তা খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। সড়ক পাকা করার কয়েক মাস না যেতেই বৃষ্টির পানিতে স্ল্যাবের নিচ দিয়ে পানি প্রবেশ করে, যার ফলে সড়কের নিরাপত্তা পিলারগুলো ভেঙে পড়েছে। যে কোনো মুহূর্তে সেখানে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ওই স্থানে ঘুরতে আসা আপসার উদ্দিনসহ অন্যান্য স্থানীয়রা জানান, মানহীনভাবে কাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সরকারি টাকা তুলে নিয়েছে। মাত্র কিছু দিন আগেই এই রাস্তায় কাজ হয়েছে, কিন্তু কিছু দিন না যেতেই সড়কের বেহাল দশা।
এ বিষয়ে ব্রিজ ও অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোস্তফা কামালের মালিক আব্দুল কাদের জানান, বৃষ্টির পানি স্ল্যাবের নিচ দিয়ে ঢুকে বালি সরে যাওয়ায় মাটি ধসে পড়েছে এবং গাইড ওয়ালসহ সড়কের দুই পাশের নিরাপত্তা পিলার পড়ে গেছে। তিনি জানান, আমরা কিছু দিনের মধ্যেই ধসে যাওয়া অংশ ঠিক করে দেব। সেই সঙ্গে তিনি অনুরোধ করেন, এ বিষয়ে নেতিবাচক কিছু যেন পত্রিকায় প্রকাশ না করা হয়।
এ বিষয়ে কালিয়াকৈর উপজেলা প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রাস্তা পাকা করার কাজ শেষ হলেই ঠিকাদারের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। রাস্তা নির্মাণের এক বছরের মধ্যে যদি কোনো ক্ষতি হয়, তাহলে তা ঠিকাদারকেই ঠিক করে দিতে হবে। যদি ঠিকাদার সেটি না করে, তাহলে তার শেষ বিল উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না।
৫ আগস্টের পরও কীভাবে দুর্নীতিবাজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এভাবে কাজ পাচ্ছে, এবং এই ব্রিজ নির্মাণে উপজেলা প্রকৌশল অফিসের পক্ষ থেকে যিনি তদারকির দায়িত্বে ছিলেন তিনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে নিম্নমানের কাজের সুযোগ করে দিয়েছেন— এমন অভিযোগও করেছে এলাকাবাসী।
এম.কে.