
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ।
“দেশি ফল বেশি খাই, আসুন ফলের গাছ লাগাই”—এই স্লোগানকে সামনে রেখে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে জাতীয় ফল দিবস উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী ফল মেলার আয়োজন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন ২০২৫) বিকেল ৩টায় উপজেলা কৃষি অফিস প্রাঙ্গণে মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ রনী খাতুন।
উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ মেলায় বিভিন্ন জাতের দেশি ফলের প্রদর্শনীর পাশাপাশি নারিকেল চারা বিতরণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। ব্যক্তি পর্যায়ে ১,০০০টি এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ৪০০টি নারিকেলের চারা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। এ উদ্যোগের মাধ্যমে জনগণকে ফল চাষে উৎসাহিত করতেই এ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়।
মেলায় বিলুপ্তপ্রায় এবং কম পরিচিত দেশি ফলের পাশাপাশি জনপ্রিয় ফলেরও প্রদর্শনী স্থান পায়। প্রদর্শনীতে আম, কাঁঠাল, কামরাঙা, তাল, তরমুজ, কেওড়া, গোলফল, লটকন, আশফল, লেবু, জামরুলসহ নানা ধরনের দেশি ও মৌসুমি ফল প্রদর্শিত হয়, যা দর্শনার্থীদের দারুণভাবে আকৃষ্ট করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ নাজমুল হুদা বলেন, “বর্তমানে বাজারে বিদেশি ফলের প্রভাব অনেক বেশি হলেও দেশি ফল অনেক বেশি পুষ্টিকর, নিরাপদ ও সহজলভ্য। এই মেলার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে দেশি ফলের প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রত্যেককে অন্তত একটি করে দেশি ফলের গাছ লাগাতে অনুরোধ জানাচ্ছি, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পুষ্টিকর ফলের চাষ ও ভোগের সুযোগ পায়।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও মোছাঃ রনী খাতুন বলেন, “দেশি ফল ফরমালিনমুক্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত। পুষ্টি ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে আমাদের প্রত্যেকের উচিত বেশি করে দেশি ফলের গাছ লাগানো।” তিনি ফল গাছ রোপণকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এস.এম দেলোয়ার হোসেন, ‘আমার দেশ’ পত্রিকার শ্যামনগর প্রতিনিধি জি এম মনিরুজ্জামান, উপজেলা কৃষি অফিসের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
মেলায় আগত দর্শনার্থীদের মধ্যে নানা বয়সী মানুষ, কৃষক, শিক্ষার্থী ও নারীরাও উপস্থিত ছিলেন। মেলা প্রাঙ্গণে স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত ফল প্রদর্শন ও বিক্রয়ের সুযোগও রাখা হয়েছে, যা কৃষি উৎপাদনের সঙ্গে সম্পৃক্তদের জন্য একটি বড় প্রাপ্তি।
এই আয়োজনের মাধ্যমে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, ফল চাষে আগ্রহ সৃষ্টি এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তোলার প্রয়াস লক্ষ্য করা গেছে। ফল মেলা চলবে আগামী শনিবার (২১ জুন) পর্যন্ত।
মিরাজ খান