ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২

অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন, সংকটে খোয়াই নদী

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:২৬, ২০ জুন ২০২৫

অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন, সংকটে খোয়াই নদী

ছবিঃ জনকণ্ঠ

অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের মাধ্যমে খোয়াই নদীকে সংকটে ফেলা হয়েছে। নদীর দুই পাশে বন্যা প্রতিরোধ বাঁধ হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। নদীর তীর বিনষ্টের মাধ্যমে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়েছে। তাই সমাধান পেতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।

শুক্রবার (২০ জুন) দুপুরে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর একটি প্রতিনিধি দল খোয়াই নদীর হবিগঞ্জের পূর্ব ভাদৈ এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পরিদর্শনকালে এ মন্তব্য করেন।

ধরার কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব শরীফ জামিলের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক, ধরা হবিগঞ্জের উপদেষ্টা এডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, আহবায়ক কবি তাহমিনা বেগম গিনি, খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল, পরিবেশকর্মী সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। এ সময় প্রতিনিধি দল স্থানীয় জনগণের সঙ্গে কথা বলেন। 

ধরা'র কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন, অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে কিভাবে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে বিভিন্ন জনপদে ভাঙন ও মানবিক বিপর্যয় তৈরি করে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ খোয়াই নদীর এই অংশ। শুধু বাঁধ মেরামত কিংবা বালু উত্তোলন বন্ধ করে নয়, নদীকে তার মূল গতিপথে ফিরিয়ে না দিলে এই ভাঙ্গন স্থায়ীভাবে রোধ করা অসম্ভব। তিনি অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ও ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) সংগঠক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক বলেন, বছরের পর বছর বাঁধ মেরামত করে খোয়াই নদীর বান থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব নয়। অতীতে বাঁধ নির্মাণের জন্য  নদীর তীর থেকে মাটি উত্তোলনের মাধ্যমে সৃষ্ট খাল একটা সময় নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে দেয়। 
ভাদৈ ও তেঘরিয়া এলাকায় সরজমিনে দেখা যায় খোয়াই নদীর মূল গর্ভে বিরাট চর সৃষ্টি হয়েছে, অপরদিকে সৃষ্ট খালে প্রবাহিত হচ্ছে মূল নদীটি। তাই ইকোলজিক্যাল মরফোলজি বিবেচনায় এনে পূর্বতন ভূমি রেকর্ড পর্যালোচনা করে মূল নদীর জায়গায় নদীর পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।

খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল বলেন, খোয়াই নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে যন্ত্র দ্বারা নির্বিচারে বালু-মাটি উত্তোলন করে নদী ও নদীতীর ঝুঁকিপূর্ণ করে রাখা হয়েছে। বর্ষা মৌসুম কিংবা অন্য যেকোনো সময় নদীতে বান দেখা দেয়। অনেক সময় নদী তীর ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে। বন্যায় মানুষের জান মাল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এসময় নদী তীরের বসবাসকারী জনগণকে আতঙ্কে উৎকণ্ঠায় থাকতে হয়। এটা চলছে বছরের পর বছর যুগের পর যুগ ধরে। স্থায়ী কোন সমাধান আসছে না। যত্রতত্র বালু উত্তোলনের মাধ্যমে সংকট আরো ঘনিভূত হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানভিত্তিক স্থায়ী সমাধানের বিকল্প নেই।

আলীম

আরো পড়ুন  

×