
ছবি: জনকণ্ঠ
বাবা-মা উভয়ই সন্তানদের জন্য সৃষ্টিকর্তার দেওয়া শ্রেষ্ঠ সম্পদ। পৃথিবীতে বাবা-মায়ের বিকল্প মেলানো সম্ভব নয়। এই পৃথিবীতে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা একমাত্র বাবা-মায়ের কাছেই পাওয়া যায়। কিন্তু সেই বাবা-মায়ের প্রতি সন্তানদের নিষ্ঠুর আচরণ কাম্য নয়। যে ‘মা’ দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ করে, প্রসব বেদনা সহ্য করে, পৃথিবীর আলো দেখালেন, ছোট থেকে লালনপালন করে বড় করলেন, যে বাবা নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে, লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করলেন, সেই বাবা-মা আজ জীবনের শেষ প্রান্তে এসে বাজারে-বাজারে ভিক্ষা করছেন। পেটের জ্বালা মেটাতে দিনের পর দিন রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করছেন। সত্যিই হৃদয়বিদারক ঘটনা।
এমনই এক ঘটনা ঘটেছে মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার বালিগ্রাম ইউনিয়নের কর্ণপাড়া গ্রামে। ভুক্তভোগীর দেয়া তথ্যমতে নাম আব্দুল মালেক ব্যাপারী। বয়স ৮৫ বছর। তাদের সংসার জীবনে রয়েছেন তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ছয় সন্তানের জনক হয়েও বৃদ্ধ বয়সে কেন ভিক্ষা করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে হাউ-মাউ করে কান্না করে এসব কথা গুলো বললেন বৃদ্ধ আব্দুল মালেক। তবে আজকাল হাটে-বাজারে বেরোলেই দেখা মেলে অসংখ্য অসহায় বাবা-মায়ের। শুধু হাট-বাজারে বললে ভুল হবে, গ্রামগঞ্জেও এদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। যে বয়সে বাবা-মায়ের ছেলে-ছেলে বউয়ের সেবা নাতি-নাতনির ভালোবাসা, নাতি-নাতনিদের নিয়ে আনন্দ-উল্লাসে মেতে থাকার কথা, সেই বয়সে এসব বাবা-মা হাট-বাজারের অলিগলিতে, রাস্তার ফুটপাতে ও দোকানে-দোকানে ভিক্ষা করছে।
এদের কথা ভাবতেই মনে হয়, শেষ বয়সে ভিক্ষা করবে বলেই কি সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে সন্তান চেয়ে এনেছিল? শেষ বয়সে ভিক্ষা করবে বলেই কি এই মায়েরা দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ করে, প্রসব বেদনা সহ্য করে সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখিয়েছিলেন? শেষ বয়সে ভিক্ষা করবে বলেই কি নিজেদের শখ-আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে ছেলেমেয়েদের মানুষ করেছিলেন? এদিকে আব্দুল মালেকের সন্তানদের দাবি বাবা-মায়ের কিছু সমস্যার কারণে তারা তাদের বাবা-মায়ের খোঁজ খবর নিচ্ছেন না। অপরদিকে আব্দুল মালেক বলেন, আমার সন্তানরা আমার ও আমার স্ত্রীর কোন খোঁজখবর নেন না। তাই বাধ্য হয়ে বুড়ো বয়সে ভিক্ষা করে সংসার চালাই। তবে আমি সন্তানদের কিছু বললে আমাদেরকে তারা মারতে আসে। আমি ওদের বিচার চাই।
এ ব্যাপারে ডাসার উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফ-উল আরেফীন বলেন, অসহায় বৃদ্ধ আব্দুল মালেক বেপারীর খোঁজ খবর নিয়ে তাকে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।
সাব্বির