
ছবি: সংগৃহীত
ইসরাইল শুক্রবার ইরানে বিমান হামলা চালালে পাল্টা জবাবে তেহরান শত শত ড্রোন ও প্রায় ৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। ইরানের হামলায় ইসরাইলের কেন্দ্রীয় অঞ্চলের বসতবাড়িতে আঘাত হানে কিছু ক্ষেপণাস্ত্র, এমনকি তেল আবিবের কিরিয়া মিলিটারি হেডকোয়ার্টারেও হামলা হয়। যদিও সেখানে ক্ষয়ক্ষতি সীমিত।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, বিশ্বের অন্যতম উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলোর একটি — ইসরাইলের আয়রন ডোম এবং অ্যারো সিস্টেম — এর অনেক ক্ষেপণাস্ত্র থামাতে ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে প্রশ্ন উঠছে: ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র কীভাবে এই প্রতিরক্ষা ভেদ করছে?
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কীভাবে কাজ করে?
ইসরাইলের বহুতল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় রয়েছে:
- Iron Dome – স্বল্প দূরত্বের রকেট মোকাবেলায়
- Barak-8, David’s Sling – মাঝারি ও দীর্ঘ দূরত্বের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে
- Arrow-2 ও Arrow-3 – দীর্ঘপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র থামাতে
তাহলে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র কিভাবে ভেদ করল?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরান কয়েকটি কৌশল গ্রহণ করেছে:
ইন্টারসেপ্টর মিসাইল নিঃশেষ করে ফেলা: একসঙ্গে অনেক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে আয়রন ডোমকে ‘অভিভূত’ করে তোলা।
হাইপারসনিক মিসাইল: ইরানের Fattah-2 টাইপের মিসাইল দ্রুতগতিসম্পন্ন ও চলাচলের পথ পাল্টাতে পারে, যা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করে।
ক্রুজ মিসাইল: Hoveyzeh টাইপের মিসাইলগুলো নিচু দিয়ে ধীরগতিতে উড়ে প্রতিরক্ষা এড়িয়ে চলে।
ডিকয় ও রাডার ব্লকার: রাডারে ভুয়া লক্ষ্য দেখিয়ে সত্যিকারের ক্ষেপণাস্ত্রকে পার করে দেওয়া।
ইরান ও ইসরাইল, কে কতদিন লড়তে পারবে?
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই যুদ্ধ এখন "ধীরে ধীরে দুর্বল করে দেওয়ার" (attritional war) রূপ নিচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, কতদিন ইরান ক্ষেপণাস্ত্র চালিয়ে যেতে পারবে এবং ইসরাইলের হাতে কতটা ইন্টারসেপ্টর মজুত আছে।
ইসরাইলের আয়রন ডোম ও অ্যারো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে। প্রতিপক্ষ যদি কৌশলী হয়, তাহলে প্রযুক্তির সব উন্নয়নও ব্যর্থ হতে পারে — ইরানের পাল্টা হামলা সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি এখন উত্তপ্ত, যেকোনো সময় তা আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
সূত্র: আল-জাজিরা
আঁখি