ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

ইমপেরিয়াল হাসপাতালে ভুল অপারেশনে নবজাতকের মৃত্যু, চেয়ারম্যান ও ডাক্তার-নার্সসহ কর্তৃপক্ষ পলাতক

মীর শাহ আলম, কুমিল্লা

প্রকাশিত: ২১:৫৮, ১৪ জুন ২০২৫; আপডেট: ২১:৫৯, ১৪ জুন ২০২৫

ইমপেরিয়াল হাসপাতালে ভুল অপারেশনে নবজাতকের মৃত্যু, চেয়ারম্যান ও ডাক্তার-নার্সসহ কর্তৃপক্ষ পলাতক

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা নগরীর টমছমব্রিজ এলাকায় ইমপেরিয়াল হসপিটালে ভুল অপারেশনে এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, চিকিৎসক ছাড়াই হাসপাতালের নার্সরা অস্ত্রোপচার করলে নবজাতক মারা যায়। ঘটনার পর হাসপাতালের চেয়ারম্যান, চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্ট সবাই হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।

শনিবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। প্রসূতি শারমিন আক্তার নগরীর কালিয়াজুড়ি এলাকার আতিকুর রহমানের মেয়ে। পরিবারের অভিযোগ, সকাল থেকে প্রসব ব্যথা অনুভব করলে শারমিনকে ইমপেরিয়াল হসপিটালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে দায়িত্বরত নার্সরা জানান মা ও শিশু সুস্থ আছেন এবং স্বাভাবিকভাবে প্রসব করানোর চেষ্টা করা হবে।

কিন্তু চিকিৎসক উপস্থিত না থাকা সত্ত্বেও নার্সরা নিজেরাই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। এতে নবজাতকের মৃত্যু হয় এবং প্রসূতির অবস্থাও আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় শারমিনকে। সেখান থেকে তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়।

শারমিনের মা রোজিনা বেগম বলেন, “সে আগের সিজার রোগী ছিল। তা জেনেও ওরা কেন নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করল? আমার নাতিকে ওরা মেরে ফেলেছে। এর বিচার চাই।”

শারমিনের খালা বলেন, “ডাক্তার ছাড়া কিভাবে অপারেশন করল? এখন আমার ভাগ্নির অবস্থাও সংকটাপন্ন।”

স্থানীয় সূত্র জানায়, নয়তলা একটি আবাসিক ভবনের নিচের দুটি ফ্লোর ভাড়া নিয়ে হাসপাতালটি পরিচালনা করা হচ্ছিল। হাসপাতালটির নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, নেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদনও।

ঘটনার পর হাসপাতাল ঘিরে ক্ষুব্ধ জনতা অবস্থান নেয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশির আহমেদ জানান, “নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়টি জেনেছি। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসপাতালটির লাইসেন্স আছে কিনা, সেটাও যাচাই করা হবে।”

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, “সংবাদ পাওয়ার পর আমাদের একটি টিম হাসপাতাল পরিদর্শনে গেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আরো পড়ুন  

×