ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

রাজধানীমুখী মানুষের ঢল, ফের ব্যস্ত হয়ে উঠছে ঢাকা

আল জুবায়ের, ঢাকা

প্রকাশিত: ২০:০৭, ১৪ জুন ২০২৫

রাজধানীমুখী মানুষের ঢল, ফের ব্যস্ত হয়ে উঠছে ঢাকা

ছবিঃ সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল আজহার টানা ১০ দিনের ছুটি শেষ হচ্ছে আজ।

আগামীকাল রবিবার (১৫ জুন) থেকে অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি দপ্তরগুলো চলবে পুরোদমে। এবারের ঈদে টানা ছুটিতে ঢাকা শহর প্রায়ই ছিল ফাঁকা। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উপভোগ করতে ঢাকা ছেড়েছিলেন রাজধানীবাসী। ঈদ শেষে কর্মস্থলে যোগ দিতে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন নগরবাসী। রাজধানীমুখী মানুষের ঢলে ফের ব্যস্ত হয়ে উঠেছে ঢাকা।

তবে, ফিরতে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন যাত্রীরা। তারা বলছেন, এবার লম্বা ছুটি থাকার কারণে বাড়িতে যাওয়ার সময়ও ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে আবার এখন ফিরতেও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

শনিবার (১৪ জুন) গাবতলী বাস টার্মিনাল, মাজাররোড, শ্যামলীসহ আশপাশের এলাকায় ঘুরে মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। যাত্রীরা টিকিট না পেলেও অনেকেই দাঁড়িয়ে বা টুলে বসেই চলে এসেছেন নিজ গন্তব্যে। কয়েকদিন আগেও নগরে মানুষের উপস্থিতি কম দেখা গেলেও আজ সকাল থেকে ভিড় বাড়তে শুরু করে।

ঝিনাইদহ থেকে বাসে সকাল আটটায় রওনা দিয়েছিলেন রানা হামিদ ও তার দুই সন্তানসহ স্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা চার জন পরিবারের সদস্য, টিকিট পেয়েছি তিনটা। সবাইকে বসতে দিয়ে আমি টুলে বসেছিলাম। অনেক চেষ্টা করে তিনটা টিকেট পেয়েছি, কাল থেকে অফিস এজন্য কষ্ট হলেও আজকেই ফিরতে হয়েছে।

গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে ছেড়ে বাস যাত্রীরা অনেকটা তড়িঘড়ি করে নেমে লোকাল বাস, সিএনজি বা রিক্সা চেপে ফিরছেন গন্তব্যে।

অধিকাংশ যাত্রীর চোখ-মুখেই বিরক্তির ছাপ। ভোগান্তি পোহানো যাত্রীরা বলছেন, ফিরতি যাত্রায় সড়কে অতিরিক্ত ৩-৪ ঘণ্টা ভুগতে হয়েছে তাদের।

জয়পুরহাট থেকে আসা ফরহাদ হোসেন বলেন, অনেক ভোরে রওনা দিয়েছি সকাল সকাল চলে আসবো বলে কিন্তু সিরাজগঞ্জ যমুনা সেতুর কাছাকাছি লম্বা লাইন দুই-তিন ঘন্টা ওখানেই বসে ছিলাম। প্রতিবার ঈদে এখানে ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যামে পড়তে হয়। এটা নিয়ে সরকারকে ভাবা উচিত।

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সুবিধার্থে পদ্মা সেতু হয়ে সহজেই ঢাকায় পৌঁছাতে বেশ সহজেই ফিরতে পেরেছেন বলে স্বস্তি প্রকাশ করে রবিন মির্জা বলেন, আমাদের আগে আরিচা-দৌলতদিয়া ঘাট হয়ে যেতে হতো। ঘন্টার পর ঘন্টা ঘাটে বসে থাকতে হতো। বর্তমানে ঈদ হোক বা যেকোনো কাজেই দ্রুতই ফিরতে পারি। কিন্তু টিকিটের জন্য অনেক লড়াই করতে হয়।

উত্তরবঙ্গের হানিফ পরিবহনের বাসচালক রতন মিয়া বলেন, ছুটি শেষ চাপ অনেক বেশি। সিট ছাড়াও অনেকে বাসের ইঞ্জিন কভারে বসে আসছে। অতিরিক্ত যাত্রী না নিতে চাইলেও তারা কাউন্টারগুলো থেকে জোর করে উঠে পড়ছে। আবার যমুনা সেতুতে জ্যাম লাগে, এগুলো সবার কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

তবে, এসব ভোগান্তির মাঝেও তাদের চোখ-মুখে ফুটে উঠছিল আনন্দের রেখা কারণ লম্বা ছুটি আবারও প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ ভাগাভাগি করার সুযোগ দিয়েছে। ছুটি শেষে যাত্রীর চাপ আগামীকাল পর্যন্ত থাকবে যদিও ভোগান্তি পোহাতে অনেকেই দুই-একদিন আগেই ফিরেছেন রাজধানীতে।

ইমরান

×