ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

১৯ বছরেও চালু হয়নি পিরোজপুরের কলারন-সন্ন্যাসী ফেরি, ভোগান্তি চরমে 

কামরুল আহসান, ইন্দুরকানী, পিরোজপুর

প্রকাশিত: ১৯:০৭, ১৪ জুন ২০২৫

১৯ বছরেও চালু হয়নি পিরোজপুরের কলারন-সন্ন্যাসী ফেরি, ভোগান্তি চরমে 

ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ।

পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে কলারন-সন্ন্যাসী ফেরি চালু হওয়ার পর দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে বন্ধ থাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। ঝুঁকি নিয়েই পার হচ্ছে নারী, শিশু, শিক্ষার্থী ও অসুস্থ রোগীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সুন্দরবনের সঙ্গে। যাত্রীরা প্রায় সময় নদীতে উত্তাল ঢেউ এর মধ্যেই ট্রলারে করে পার হচ্ছে এ নদীটি। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা ও বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলা সীমানায় বলেশ্বর নদীর ওপর কলারন-সন্ন্যাসী ফেরিটি জোট সরকারের আমলে ২০০৬ সালের ০৪ আগস্ট তৎকালীন পিরোজপুর ০১ আসনের জাতীয় সংসদের সদস্য আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর উদ্বোধনের মাধ্যমে চালু হয়। ফেরিটি চালু হওয়ার ১ বছর পর সরকার পরিবর্তন হলে ফেরিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এসব অঞ্চলগুলো। সিডরের সময় কলারন প্রান্তে ফেরিঘাটের পন্টুনটি স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যায় ও চরে আটকে থাকে অনেক দিন। পন্টুনটি আটকে থাকলেও সেটি উদ্ধার করে ওই ঘাটে পুনঃস্থাপন করেনি কর্তৃপক্ষ।  

উপজেলার চন্ডিপুর বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ী মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, “মাঝে মধ্যে এই ঘাট থেকে যাতায়াত করি। সব সময় ট্রলার না থাকার কারণে আমাদের অনেক সময়ই ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এই ঘাটটি আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ফেরি না থাকায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নারী শিশুদের নিয়ে পারাপারে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।” 

স্থানীয় চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মঞ্জু বলেন, “এ ফেরিঘাটটি পুনরায় চালু হলে ইন্দুরকানী উপজেলার সাথে শরনখোলা, সুন্দরবন, মোড়েলগঞ্জ ও মোংলার সাথে সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা সহজ হবে। এর ফলে ব্যবসা বাণিজ্যেরও একটা নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।” 

পিরোজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ বলেন, “কলারন সন্ন্যাসী ফেরিঘাটটি সিডরের সময় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। পুনরায় ফেরিঘাটটি স্থাপনের জন্য আন্ত মন্ত্রণালয়ে একটি মিটিং সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে পিরোজপুরের কলারন প্রান্ত, সেখানে ফেরিঘাট স্থাপনের অল্প কাজ শুরু হয়েছে। মেইন চ্যালেঞ্জটা হচ্ছে বাগেরহাটের সন্ন্যাসী প্রান্তে সেখানে পানি উন্নয়নের বাজেটের ওপরে প্রায় ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়ক নির্মাণ করতে হবে ফেরি পুনরুদ্ধারের জন্য।”

তিনি আরও বলেন, “বাগেরহাট সড়ক বিভাগ ইতিমধ্যে প্লাটফর্ম তৈরি করে প্রাক্কলিত মূল্যের ছাড় এবং প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে অর্থ বরাদ্দ ও কাজটি বাস্তবায়নের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন আসলে বাগেরহাট সড়ক বিভাগ সংশ্লিষ্ট প্রসঙ্গে কাজ করবে। শুধু মাত্র ফেরি ঘাটটিকে পূন: স্থাপনের বিষয় রয়েছে, খুবই অল্প পরিমাণে কাজ। বাগেরহাটের কাজের সময় পিরোজপুর প্রান্তের কাজ সম্পন্ন হলে, ফেরিটি পুনরায় চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।”

মিরাজ খান

×